১) আলোচনা বা চর্চার অভাব:- আমাদের কোন বিষয়কে স্মরণে রাখতে হলে সেই বিষয়কে বারেবারে আলোচনা বা চর্চা করা দরকার। এক্ষেত্রে একবার কোনো রকম পড়ে ছেড়ে দিলে হবে না। বিষয়টিকে মাঝে মাঝে চর্চার সাথে লিখতে হবে। আর এরূপ পদ্ধতি যদি আমরা অবলম্বন না করি তাহলে শেখার আধ ঘন্টার মধ্যেই অর্ধেক ভুলে যাই। সুতরাং শিক্ষণীয় বিষয় আলোচনা বা চর্চার অভাবে বিস্মৃতি ঘটবে।
২) বিষয়বস্তুর প্রকৃতি:- শেখার বিষয়বস্তুর প্রকৃতির ওপর স্মরণ বা বিস্মরণ নির্ভর করে। এক্ষেত্রে আমরা সরল বিষয়গুলিকে মনে রাখতে পারি।আর জটিল বিষয় গুলিভুলে যাই। বাস্তব ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি কবিতা বা অন্তর্দৃষ্টির সাহায্যে শেখা বিষয় অনেকদিন মনে রাখতে পারি। কিন্তু গদ্য বা অর্থহীন শব্দ সমষ্টি খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যাই ।এখানে এখানে বিস্তৃতির পরিমাণ অনেক বেশি।
৩) মানসিক আঘাত:- আমরা জানি কোন বিষয় মনে রাখা আমাদের মস্তিষ্কের ওপর নির্ভর করে। কারণ সংরক্ষণের একমাত্র আধার মস্তিষ্ক। আর সেই মস্তিষ্ক আঘাতপ্রাপ্ত হলে আমাদের শেখা বিষয়গুলি বা পূর্ব স্মৃতি সম্পূর্ণ ভাবে ভুলে যাই। এক্ষেত্রে দেখা গেছে যুদ্ধ বা বোমা বিস্ফোরণের সময় অনেক মানুষ তাদের পূর্ব স্মৃতি বা অতীত ভুলে গেছে। সুতরাং আমাদের মস্তিষ্কের আকস্মিক আঘাত বিস্তৃতির অন্যতম কারণ বলা যেতে পারে।
৪) প্রতিরোধ:- আমরা প্রতিনিয়ত শিখতে চাই। এক্ষেত্রে একটি বিষয় শেখার পর আর একটি বিষয় শেখার জন্য দুটি বিষয়ের মধ্যবর্তীকালে কিছুটা বিরতির প্রয়োজন। দুটি বিষয়ের মধ্যবর্তী কালে বিরতি যদি না দেওয়া হয় তাহলে প্রথম শেখার বিষয়টির কিছুটা ভুলে যাই। সুতরাং আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিরোধের অভাবে বিস্তৃতি ঘটে।
৫)নিদ্রাহীনতা:-মানবজীবনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। যদি কোন কিছু শেখার পর একটু ঘুমানো যায় তাহলে শেখার বিষয়টি আমাদের অনেক দিন মনে থাকবে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে পরীক্ষার আগের রাত্রে সঠিক ঘুমানো না হলে অনেক জানা বিষয় পরীক্ষা হলে মনে করতে পারি না। সুতরাং নিদ্রাহীনতা বিস্মৃতির একটি অন্যতম কারণ।
৬) ক্লান্তি:-অধিক পরিশ্রমে আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। আর এরূপ অবস্থায় আমরা যদি কিছু জানতে বা শিখতে যাই তাহলে সেই জানা বা শেখার বিষয়টি কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৭) অবচেতন মন:- শিক্ষা মনোবিদরা মনে করেন-আমরা ভুলতে চাই তাই আমরা ভুলে যাই। মনোবিদরা মনে আরও করেন আমাদের জীবনে অনেক বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে।সেই সকল বেদনাদায়ক ঘটনা আমরা ভুলতে চাই। তবে এই সকল ঘটনা অবচেতন মনে অবদমিত থাকে। আর ইচ্ছা হলে তা ফিরিয়ে আনা যায়।
৮) আবেগ:-ভয়, রাগ এবং ঘৃণা এই আবেগঘন বিষয় গুলির দ্বারা স্মৃতি প্রক্রিয়া বাধা প্রাপ্ত হয়। তাই কোন কারনে প্রক্ষোপ সক্রিয় হয়ে উঠলে অতীত অভিজ্ঞতার সাময়িক বিস্তৃতি ঘটে।
-------------- শেষের কবিতা..........................................
Comments
Post a Comment