Skip to main content

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছোট প্রশ্ন ২০২১ সাল চতুর্থ সেমিস্টার।

 ১। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কাকে বলে?


       উত্তর - আন্তর্জাতিক সম্পর্ক হল সমাজবিজ্ঞানের এমন একটি বিষয় যা বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যস্থিত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ,কূটনৈতিক, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ,সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।


২। ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তি অনুসারে সার্বভৌমত্বের ধারণাটি লেখো।


       উত্তর- ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে সম্পাদিত ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় ভূকেন্দ্রিক সার্বভৌম জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণা প্রাধান্য পেয়েছে। সেই সময় জাতি রাষ্ট্রগুলো নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে একে অপরের সাথে রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তা থেকেই আন্ত: রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের প্রথম সূচনা ঘটে।


৩। বাস্তববাদী তত্ত্বের দুটি সমালোচনা লেখো।


উত্তর -      ক) বাস্তববাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক তত্ত্ব হলেও এই দৃষ্টিভঙ্গি কিভাবে নৈরাজ্য পুণ্য সংঘাতময় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা পরিবর্তিত হতে পারে, সে সম্পর্কে কোন হদিস দেয় নি।

       খ) বাস্তববাদী তত্ত্বের এক মৌলিক ধারণা হলো রাষ্ট্রক্ষমতা। কিন্তু কিভাবে এই ক্ষমতার পরিমাপ করা যাবে সেই প্রশ্নের সন্তোষজনক মীমাংসা হয়নি।


৪। নয়া উদারবাদি তত্ত্বের বিরুদ্ধে দুটি সমালোচনা 

লেখ।


উত্তর -      ক) বিদ্যমান রাষ্ট্র ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখাই উদারনীতিবাদের লক্ষ্য ।প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যে যে ক্ষমতার বৈষম্য আছে সে সম্পর্কে এই তত্ত্ব কোন দিশা দেখায় না।

      খ) উদারবাদি দৃষ্টিভঙ্গি যে অবাক বাণিজ্য নীতির কথা বলে তা আসলে পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলোকেই অর্থনৈতিক দিক থেকে ক্ষমতাশালী করে।


৫। বাস্তববাদ ও নয়া বাস্তববাদ এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।


উত্তর -      ক) বাস্তববাদী তত্ত্বে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ক্ষমতা সম্প্রসারনের আকাঙ্ক্ষার মূল কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মানব প্রকৃতির দিকে ।কিন্তু-

      নয়া বাস্তববাদী আলোচনায় মানব প্রকৃতি আলোচিত হয়নি। সেখানে গুরুত্ব পেয়েছে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার কাঠামোর উপর।

               খ) বাস্তববাদী তত্ত্বে ক্ষমতা বলতে বাস্তববাদীরা মূলত সামরিক ক্ষমতাকেই বুঝিয়েছে। কিন্তু-

         নয়া বাস্তববাদীরা ক্ষমতা কে শুধুমাত্র সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ বা বল প্রয়োগের সমর্থক বলে মনে করেনি। বরং সামর্থের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা বৃহৎ ক্ষুদ্র বা মাঝারি শক্তিধর রাষ্ট্রের অবস্থান নির্ধারিত হয়ে থাকে।


৬। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বোঝার জন্য নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।


উত্তর:- ক) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নারীবাদী তত্ত্ব লিঙ্গগত বৈষম্যের অবসান ঘটাতে চায়।

            খ) আন্তর্জাতিক সম্পর্কে নারীবাদীরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিতে চান এবং সংঘাত ও আধিপত্যের পরিবর্তে সহমর্মিতা এবং সহযোগিতা গড়ে তুলতে চান।


৭। বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রান্তর ধারণাটি কি?


উত্তর:- বিশ্ব ব্যবস্থার তত্ত্বা অনুযায়ী বিশ্ব ব্যবস্থার মূল কেন্দ্র থেকে দুর্গতি পরিধিতে অবস্থান করে দরিদ্র দেশগুলি। আর সেই দেশগুলি অনুন্নয়নের শিকার। কি প্রান্তর বা প্রান্তীয় রাষ্ট্র বলা হয়। এই প্রান্তীয় রাষ্ট্রগুলি কেন্দ্রীয় অঞ্চলে শিল্প উন্নয়নের জন্য কাঁচামাল সরবরাহ করে।


৮। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুটি ফলাফল উল্লেখ করো।


উত্তর;- ক) ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে পরাজিত জার্মানিকে জরিমানা করা হয় এবং অস্ত্রহীন করে ফেলা হয়। অস্ট্রিয়া ,চেক, স্লোভানিয়া হাঙ্গেরি , লিথুনিয়া এবং তুরস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে।

         খ) ভবিষ্যৎ যুদ্ধহীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং আনুষ্ঠানিক রাজনীতিতে স্বচ্ছতার নিশ্চিত করার জন্য গড়ে তোলা হলো 'লীগ অফ নেশন' যা পরে আবার ব্যর্থ হয়।


৯। মার্শাল প্লান কি?


উত্তর - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব জর্জ সি মার্শাল ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন সম্পর্কে একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন ।আর সেই পরিকল্পনাটি মার্শাল প্লান নামে পরিচিত। এই পরিকল্পনায় ইউরোপের দেশ গুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে ঢালাও অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়।


১০। ট্রুম্যান নীতির মূল বৈশিষ্ট্য কি?


উত্তর:- ক) পূর্ব ইউরোপের সোভিয়েত ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে প্রতিরোধ করাই ছিল ট্রুম্যান নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

      খ) ট্রুম্যান তত্বই আমেরিকার নিঃসঙ্গবাদ নীতিকে বিলুপ্ত করেছিল । এই নীতির মাধ্যমেই আমেরিকা ঘোষণা করেছিল বিশ্বের যে কোন স্থানে কমিউনিস্ট বিরোধিতার প্রয়োজন দেখা দিলে আমেরিকা তাতে সাহায্য করবে।


১১। দ্যঁতাত কি?


উত্তর;- দ্যঁতাত এর অর্থ উত্তেজনা প্রশমন ও বন্ধুত্বের পুঃনপ্রতিষ্ঠা । ঠান্ডা যুদ্ধের একটি পর্যায়ে দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্র উপলব্ধি করে আসন্ন যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করলে পৃথিবী ভয়ানক আণবিক ধ্বংসের সম্মুখীন হবে। এই উপলব্ধি থেকেই উভয়পক্ষ শান্তি ও সঠিক পথ খোঁজে।এই অবস্থাকেই দ্যঁতাত বলা হয়।

১২। পারমাণবিক এন পি টি কি?


উত্তর;- ১৯৬৮ সালে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের জন্য একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির ফলে পারমাণবিক অস্ত্রের ভীতিজনিত কারণে পারমাণবিক শক্তিময় রাষ্ট্রগুলি বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এরুপ অস্ত্র প্রয়োগ থেকে নিজেদের সংযত করতে বাধ্য হয়েছিল।(Nuclear Non-Proliferation Treaty)


১৩। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কারণ লেখো।


  উত্তর;- গ্লাসনস্ত এবং পেরেস্ত্রৈকার মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের খোলামেলার পরিবেশ ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলো ।এর ফলে বহুজাতির সমন্বয়ে গঠিত সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায় ।এছাড়াও মার্কসবাদের আড়ালে দলীয় আমলাতন্ত্রের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের ফলেও ভেঙে যায় ইউনিয়ন।


১৪। বহু মেরুকেন্দ্রিকতা বলতে কী বোঝো?


     উত্তর:- বহু মেরুকেন্দ্রিকতা বলতে বোঝায়, আন্তর্জাতিক শক্তির সাম্যের এমন একটি অবস্থা যেখানে দুই এর বেশি ক্ষমতা কেন্দ্র করে অর্থাৎ আন্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাযর ক্ষমতার কেন্দ্র বহুমেরুতে পরিণত হয়।

১৫। নির্জোট /জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন কি?


    উত্তর - বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে জোট নিরপেক্ষ নীতিকে ভিত্তি করি তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলি বিশ্বজুড়ে যে সংগটিত আন্দোলন পরিচালনা করে তা নির্জোট বা জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন নামে পরিচিত।





Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...