Skip to main content

চতুর্থ সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছোট প্রশ্ন ২০২০

 ১। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি সংজ্ঞা দাও।


উত্তর - আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বলতে এমন এক শাস্ত্র কে বোঝায় যা বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যস্থিত রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক, আইনগত ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রকার সম্পর্ক নিয়েই আলোচনা করে,  তাকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বলে।


২) ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ভূখণ্ড সাপেক্ষ তার ধারণা ব্যাখ্যা কর। 


উত্তর - ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায়  ভূখণ্ডকেন্দ্রিক সার্বভৌম জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণাটি প্রাধান্য পেয়েছে। সে সময় জাতি রাষ্ট্রগুলো নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে একে অপরের সঙ্গে আর্থ রাজনৈতিক বাণিজ্যিক সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে তা থেকেই আন্ত:রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের প্রথম সূচনা ঘটে।


৩) বাস্তববাদী তত্ত্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।


উত্তর -১) বাস্তববাদ রাষ্ট্রকেই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচ্য বিষয়ে একমাত্র একক হিসাবে বিবেচনা করে।

২) বাস্তববাদ মনে করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কেন্দ্রীয় ধারণা হলো ক্ষমতার লড়াই এবং রাজনৈতিক পরিবেশের উপর ক্ষমতার প্রয়োগ নির্ভর করে।


৩) উদারবাদি তত্ত্বের দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।


উত্তর - ১) বিদ্যমান রাষ্ট্র ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখাই উদারনীতিবাদের লক্ষণ প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যে যে ক্ষমতার বৈষম্য রয়েছে সে সম্পর্কে এই তথ্য কোন দিশা দেখায় না।

২) উদারবাদী দৃষ্টিভঙ্গি যে অবাধ বাণিজ্য নীতির কথা বলে তা আসলে পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলোকেই অর্থনৈতিক দিক থেকে ক্ষমতাশালী করে।


৪) কেন্দ্র রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দাও।


উত্তর - বিশ্ব ব্যবস্থায় তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্ব ব্যবস্থার মূল কেন্দ্র অবস্থান করে পশ্চিমে উন্নত গণতান্ত্রিক কয়েকটি দেশ যারা বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রা হিসেবে পরিগণিত হয়, এদেরকেই কেন্দ্র রাষ্ট্র নামে অভিহিত করা হয়।


৫) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দুটি কারণ লেখো।


উত্তর - ১) অতৃপ্ত জাতীয় উদ্দেশ্য এবং আন্যদিকে সামরিক শক্তিতে বিশ্বাসী উগ্র জাতীয়তাবোধ সমগ্র ইউরোপে এক ভয়াবহ আসন্ন ধ্বংসের পরিস্থিতি জন্ম দেয় যা শেষ পর্যন্ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করে।

২) শিল্প বিপ্লবের ফলে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে নব্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জার্মানীর উত্থান ফ্রান্স, ব্রিটেন সাম্রাজ্যের জন্য নিশ্চিত আতঙ্কের ছিল এবং তা প্রতিরোধের জন্যই ফ্রান্স রাশিয়া ব্রিটেন এবং সর্বশেষে যুক্তরাষ্ট্র একজোট হয় যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ বলে পরিগণিত হয়।


৬) নাৎসিবাদের সংজ্ঞা দাও।


উত্তর - জার্মানিতে হিটলার যে জাতি বিদ্বেষী, ইহুদি বিরোধী এবং উচ্চতর আর্যজাতি প্রত্যয় দলের মতাদর্শে অন্তর্ভুক্ত করেন সেটাই নাৎসিবাদ নামে পরিচিত ।এই ধারণা অনুযায়ী রাষ্ট্রের পরিবর্তে ব্যক্তিত্ব চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী এবং বল প্রয়োগের নীতিতে বিশ্বাস।


৭) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুটি কারণ লেখো।


উত্তর - ১) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম প্রত্যক্ষ কারণ ছিল জার্মান কর্তৃক পোল্যান্ড আক্রমণ। এর বিরুদ্ধে ব্রিটেন ও ফ্রান্স যুদ্ধ ঘোষণা করলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।

২) পশ্চিমী গণতান্ত্রিক দেশগুলি ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্যবাদকে বেশি সন্দেহের চোখে দেখেছিল। এর জন্য ফ্যাসিবাদকে প্রতিহত না করে তারা একে সাম্যবাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। তাই বলা হয় পশ্চিমী দেশগুলির ছবির ভীতি ও তোষণ নীতি যুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলেছিল।


৮) ঠান্ডা যুদ্ধ কথাটি কে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন?

উত্তর - মার্কিন কূটনীতিক বার্নার্ড বারুচ ঠান্ডা লড়াই শব্দটি প্রথম প্রয়োগ করেন।


৯) NATO কাকে বলে?(North Atlantic Treaty Organisation)


উত্তর - ১৯৪৯ সালে ৪ঠাএপ্রিল মাসে ওয়াশিংটনে বারোটি দেশের মধ্যে ন্যাটো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই সেই চুক্তি স্বাক্ষরের ছিল একটি প্রস্তাবনা সহ ১৪ টি শর্ত। সেখানে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল সাক্ষরকারী দেশগুলি জাতিপুঞ্জের সনদের আদর্শ ও নীতি মেনে চলবে ।তারা শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য যৌথভাবে কাজ করবে ।আরো স্থির হয়েছিল দেশগুলি পারস্পরিক আর্থিক সাহায্য ও সাহায্যের মাধ্যমে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সচেষ্ট হবে।


১০) CTBT এর অর্থ কী?


উত্তর - CTBT র পুরো কথাটি হলো-Comprehensive Nuclear-Test-Ban Treaty. এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত রকম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার নিষিদ্ধকরণ সামরিক বেসামরিক এবং সমস্ত পরিবেশের ক্ষেত্রে।


১১) সোভিয়ে রাশিয়ার পতনের কারণ লেখো।


উত্তর -গ্লাসনস্ত এবং পেরেস্ত্রৈকার মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের খোলামেলার পরিবেশ ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলো। এর ফলে বহুজাতির সমন্বয়ে গঠিত সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায় ।

       এছাড়াও মার্কসবাদ এর আড়ালে দলীয় আমলাতন্ত্রের সৌরতান্ত্রিক মনোভাবের ফলেও ভেঙে যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন।


১২) এক মেরুকেন্দ্রিকতার অর্থ কি?


উত্তর - ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আন্তর্জাতিক শক্তির সাম্যে বিশ্বব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিপত্য তৈরি হয়। একেই এক মেরুকরণ বলা হয়। অথবা সমগ্র আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা একটি ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে একমেরুতে আবর্তিত হয়।


১৩) পঞ্চশীলীর নীতিগুলি উল্লেখ কর


উত্তর -১) ভূমধ্যগত অখন্ডতা এবং সার্বভৌমকতা সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন ।২) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। ৩)  অনাক্রমণ ।৪) অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা। ৫)  সাম্য এবং পারস্পরিক সাহায্য করা হলো পঞ্চশীল নীতি।


১৪) মোদী মতবাদ বা মোদি ডক্ট্রিন কি?


উত্তর - মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতিকেই মোদি মতবাদ বা ডক্ট্রিন বলা হয় ।মোদির বিদেশনীতি দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সম্পর্ক উন্নত করার দিকে মনোনিবেশ করেছে। পূর্বসুরীদের মতো এই সরকারও বৃহত্তর সাফল্যের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ ব্যবহার করেছে। মোদীর অধীনে ভারত বিদেশী শক্তির সাথে তার আচরণের জন্য সমস্ত দরজা উন্মুক্ত রেখেছে।


Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প