Skip to main content

তৃতীয় সেমিস্টারের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টারের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ কতগুলি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (২১/২০২৩-২৪)

১) সরকারের সংজ্ঞা দাও।

            উত্তর - সরকার হলো কোনো দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ, যার মাধ্যমে দেশটির শাসন কার্য পরিচালিত হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি যেমন সংসদ সদস্যদের দ্বারা গঠিত হয়। অর্থাৎ জনগনের দ্বারা জনগনের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে যারা দেশ পরিচালনা করে তাদেরকেই সরকার বলে।

২) তুলনামূলক রাজনীতির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

           উত্তর -তুলনামূলক রাজনীতি হল বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পদ্ধতিগত অধ্যয়ন এবং তুলনা। কেননা এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থার মিল বা পার্থক্য রয়েছে এবং কীভাবে তাদের মধ্যে উন্নয়নমূলক পরিবর্তন এসেছে তা ব্যাখ্যা করার জন্য এটি তুলনামূলক।

৩) পুঁজিবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর - ১) কেন্দ্রীভূত ব্যক্তিগত মালিকানা: 

        পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় উৎপাদনের উপাদানসমূহের মালিকানা কেন্দ্রীভূত থাকে পুঁজিপতিদের হাতে। শ্রমিক-শ্রেণী উৎপাদনের সকল প্রকার উপাদানের মালিকানা থেকে বঞ্চিত থাকে। 

২) (৫) মুনাফার জন্য উৎপাদন: 

        পুঁজিবাদী সমাজে মুনাফার জন্য পণ্য উৎপাদন করা হয়। মুনাফা অর্জনই হল পুঁজিবাদী উৎপাদনের মূল প্রেরণা। পুঁজিবাদী উৎপাদন বলতে মুনাফার জন্য পণ্য উৎপাদনকে বোঝায়। উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে পুঁজিপতিরা অধিক মুনাফা অর্জনের দিকে অগ্ৰসর হয়।


৪) উপনিবেশের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর -১) উপনিবেশ (ইংরেজি: Colony) একটি স্থান বা এলাকা যা অন্য কোন দেশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রধান নগর হিসেবে দেশটি উপনিবেশের বৈধ দখলদার। 

২)একটি দেশের যখন অনেকগুলো উপনিবেশ থাকে তখন মূল দেশটি সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত হয়। 


৫) সাম্রাজ্যবাদী পুঁজি কি?

         উত্তর - সাম্রাজ্যবাদী পুঁজি হলো পররাজ্যের উপর অধিকার বিস্তারের নীতি। এটিকে প্রায় নঞর্থকভাবে বিবেচনা করা হয়।যেহেতু এতে স্থানীয় জনগণকে শোষণের মাধ্যমে অল্প আয়াসে ধনী বা পুঁজিপতি হবার উদ্দেশ্য থাকে।

৬) উপনিবেশিকতা বিরোধিতা কাকে বলে?

             উত্তর -উপনিবেশিক শাসনের অধীনে উপনিবেশুলিতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে। তার ফলে এখানকার মানুষ ইউরোপের নবজাগরণ থেকে মানবতাবাদী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের স্পর্শ পায়। তবে তারা উপলব্ধি করেছি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষা অর্থ সাংস্কৃতিক প্রভৃতি আন্দোলন গড়ে তোলার দরকার। আর এই আন্দোলনকে বলা হয় উপনিবেশিকতা বিরোধী আন্দোলন।

৭) গ্লোবাল ভিলেজ বলতে কি বোঝো?

              উত্তর -গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর এমন একটি সামাজিক মাধ্যম যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই তাদের চিন্তা-ভাবনা,সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি একে অপরকে জানিয়ে থাকে।

৮) রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বলতে কি বোঝায়?

         উত্তর -রাজনৈতিক অর্থনীতি হলো ভিন্ন কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্কিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আচরণের অধ্যয়নের আঙ্গিকসমূহ।যার সীমা হলো অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে সমন্বিত অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রথাগত অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করা।আর সেখানে বিভিন্ন মৌলিক স্বতঃসিদ্ধ চিন্তার ব্যবহার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে।

৯) বাণিজ্য পুঁজিবাদ বলতে কি বুঝায়?

            উত্তর - ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের আগে পুঁজিপতিরা বাণিজ্যে মূলধন বিনিয়োগ করতেন। আর বাণিজ্যে নিয়োজিত এই মূলধন বাণিজ্য মূলধন নামে পরিচিত।

১০) চীন সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

১) লিখিত সংবিধান - গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ১৯৮২ সনের সংবিধানটি ছিল লিখিত সংবিধান। এ সংবিধানে একটি প্রস্তাবনা ও ১৩৮টি ধারা ছিল। এগুলাে স্পষ্টভাবে লিখিত ছিল। রাষ্ট্র পরিচালনার অধিকাংশ বিধি-বিধান লিখিত। 

          ২)সাংবিধানিক প্রধান্যঃ ১৯৮২ সালের চীনের সংবিধানে সাংবিধানিক প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। এ সংবিধানটিকে রাষ্ট্রের মৌলিক আইন হিসেবে ঘােষণা করা হয়েছে।

১১) সাংবিধানিক উন্নয়ন বলতে কী বোঝায়?

         সাংবিধানিক উন্নয়ন হল-সংবিধান অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত কীভাবে বিকশিত হয়েছে তার একটি বিশদ বিশ্লেষণ । অর্থাৎ --

        একটি দেশ বা সংস্থার মধ্যে সংবিধান গঠন সংবিধান সংশোধন করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় সাংবিধানিক উন্নয়ন।

১২) ব্রিটিশ সংবিধানে রীতিনীতি বলতে কী বোঝায়?

         উত্তর - ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থায় রীতিনীতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই রীতিনীতিগুলি না থাকলে ব্রিটেনের সংসদীয় ব্যবস্থার বুনিয়াদ ভেঙে পড়তো। যদিও আইনের মত এগুলি আদালত গ্রাহ্য নয় । তবে ব্রিটেনের শাসনকার্য সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করার ক্ষেত্রে শাসন তান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই রীতিনীতি গুলি হল-

        জনমতকে গুরুত্ব প্রদান করা , সংবিধানের নমনীয়তা রক্ষা,সরকারী কাজকর্মে সহযোগিতা প্রভৃতি হল ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার রীতিনীতি।

১৩) অব উপনিবেশ কাকে বলে?

         উত্তর -Decolonisation বা অব-উপনিবেশবাদ কথার অর্থ হল ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান।অর্থাৎ উপনিবেশবাদের বিপরীত ধারণা হল ‘অব-উপনিবেশবাদ’। 

        জার্মান বিশেষজ্ঞ মরিৎস জুলিয়াস বন ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম Decolonisation শব্দটি ব্যবহার করেন। এককথায়, ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তিকে অব-উপনিবেশীকরণ বা Decolonisation বলা হয়। 

১৪) সংবিধানের সংজ্ঞা দাও।

              উত্তর - সাধারণভাবে সংবিধান বলতে রাষ্ট্র পরিচালনার নিয়মকানুনকে বােঝায়। যে-কোনাে প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে গেলে যেমন কতকগুলি সাধারণ নিয়মকানুনের প্রয়ােজন হয়, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও তা দেখা যায়। রাষ্ট্রের পরিচালনার জন্য একান্ত আবশ্যক এই নিয়মকানুনগুলি হল সংবিধান। লর্ড ব্রাইস এর মতে-

     "সংবিধান বলতে সেইসব আইনকানুন ও রীতিনীতির সমষ্টিকে বুঝিয়েছেন, যেগুলি রাষ্ট্রীয় জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।" 

১৫) গণপ্রজাতন্ত্র চীনের সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর - ১) লিখিত সংবিধান-গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ১৯৮২ সনের সংবিধানটি ছিল লিখিত সংবিধান। এ সংবিধানে একটি প্রস্তাবনা ও ১৩৮টি ধারা ছিল। এগুলাে স্পষ্টভাবে লিখিত ছিল। 

২) সংবিধান পরিবর্তনীয়তা-  দুস্পরিবর্তনীয়তা ১৯৮২ সনের সংবিধানের একটি উল্লেখযােগ্য দিক। চীনের এ সংবিধানটি পুরাতন সােভিয়েত ইউনিয়নের সংবিধানের ন্যায় দুষ্পরিবর্তনীয়। সাধারণ আইন পাশের ন্যায় এ সংবিধানটি সংশােধন ও পরিবর্তন করা যায় না। 



Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প