Skip to main content

দর্শন প্রথম(NEP) এবং তৃতীয় সেমিস্টারের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

দর্শন। প্রথম এবং তৃতীয় সেমিস্টারের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 ১)ন্যায় সূত্রে প্রণেতা ও বৈশেষিক সূত্রের প্রণেতার নাম উল্লেখ করো।


          উত্তর -ন্যায় সূত্রের প্রণেতা হলেন মহর্ষি গৌতম 

 এবং বৈশেষিক সূত্রের প্রণেতা হলেন ঋষি কণাদ।


২) বৈশেষিক দর্শনের কত প্রকার অভাব স্বীকার করা হয়েছে? তাদের নাম লেখো।


        উত্তর - বৈশেষিক দর্শনে দুই প্রকার অভাব স্বীকার করা হয়েছে।আর সেই অভাব পদার্থগুলি হলো-

         ১) অন্যোন্যাভাব ২) সংসর্গাভাব।


৩) ন্যায় মতে সন্নিকর্ষ শব্দের অর্থ কি? 


             উত্তর -ন্যায়মতে সন্নিকর্ষ শব্দের অর্থ হলো, ইন্দ্রিয় এবং ইন্দ্রগ্রাহ্য বিষয়ের মধ্যে সম্বন্ধ। তাদের মতে এই সম্ভন্ধের ফলে আমাদের মনে প্রত্যক্ষ জ্ঞান উৎপন্ন হয়।


৪) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?


                উত্তর -জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ হলো,যে প্রত্যক্ষে কোনো ইন্দ্রিয় নিজস্ব বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও অন্য ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণ প্রত্যক্ষ করা যায়, তাকে জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ বলে। যেমন- “সুরভি চন্দনম্”- অর্থাৎ দূরে চন্দন কাঠ দেখে তার সুগন্ধের যে জ্ঞান লাভ তাই জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ।


৫) ন্যায় মতে ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি?


           উত্তর - ন্যায় মতে ব্যাপ্তি দুই প্রকার-

                   ১) সমব্যাপ্তি  ও

                   ২) বিষমব্যাপ্তি(অসমব্যাপ্তি)।


৬) বৈশেষিক মতে কর্ম কত প্রকার ও কি কি?


         উত্তর - বৈশেষিক মতে কর্ম পাঁচ প্রকার। আর সেই কর্ম গুলি হল উৎক্ষেপণ, অবক্ষেপণ, আকুঞ্চন, প্রসারণ এবং গমন।


৭) যদৃচ্ছাবাদ কি?


            উত্তর -চার্বাক দর্শন মতে ক্ষিতি, অপ,তেজ এবং মরুৎ এই চতুর্ভূতের আকস্মিক এবং অহেতুক মিশ্রণের ফলে নানা প্রকার জাগতিক বস্তুর এবং জীবদেহে চৈতন্য উৎপত্তি হয়, একেই বলা হয় যদৃচ্ছাবাদ।


৮) চার্বাক দর্শনকে কেন জড়বাদী দর্শন বলা হয়?


           উত্তর - চার্বাক দর্শনকে চড়বাদী দর্শন বলা হয় এই কারণে যে, চার্বাক দর্শন মতে আমাদের এই জগতের সব কিছুই যাবতীয় ভৌত দ্রব্য (পাহাড়, নদী, মাটি, প্রভৃতি) এমনকি প্রাণ ও চৈতন্যও জড় বা ভৌত উপাদান থেকে উৎপন্ন হয়। সেই কারণে চার্বাক

দর্শনকে জড়বাদী দর্শন বলা হয়।


৯) অদ্বৈতবাদ কি?


            উত্তর - অদ্বৈত মতবাদের শ্রেষ্ঠ প্রবর্তক হলেন আচার্য শংকর। আর ভারতীয় দর্শনে শংকরাচার্যের পরমসত্তা বিষয়ক মতবাদ অদ্বৈতবাদ নামে পরিচিত। এই মতবাদ অনুসারে ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা, জীব ব্রহ্ম ছাড়া আর কিছুই নয়।


১০) চার্বাক দর্শনকে নাস্তিক দর্শন বলা হয় কেন?


           উত্তর - চার্বাক দর্শনকে নাস্তিক বলা হয় এই কারণে যে- চার্বাক দর্শন সম্প্রদায় বেদের প্রামান্য স্বীকার করে না কিংবা বেদের কর্তকে অস্বীকার করে। বেদের বক্তব্যেরও বিরোধীতা করে বলে তাদের নাস্তিক দর্শন বলা হয়।


১১) অদ্বৈত বেদান্ত মতে সত্তা কয় প্রকার ও কি কি


         উত্তর -অদ্বৈত বেদান্ত মতে সত্তা দুই প্রকার-আর সেই সত্তা গুলি হল-

১) আত্মা ২) ব্রহ্ম। এই আত্মা ও ব্রহ্ম হলো শুদ্ধ চৈতন্য।

 


১২) বৈশেষিক স্বীকৃত দ্রব্য গুলির নাম লেখো।


            উত্তর -  বৈশেষিক দর্শনে স্বীকৃত দ্রব্য গুলি হল ৯টি। আর সেই দ্রব্য গুলি হল-

         ক্ষিতি (পৃথিবী), অপ (জল), তেজ (আগুন), মরুৎ (বায়ু), আকাশ (ব্যোম), কাল (সময়), দিক (স্থান), আত্মা (আত্ম) ও মন।


১৩) শঙ্করের মধ্যে ব্রহ্ম ও জীবের সম্বন্ধ কি?


         উত্তর - শঙ্করের মতে পারমার্থিক দিক থেকে জীব ব্রহ্ম -স্বরুপ। কিন্তু ব্যবহারিক দৃষ্টিতে জীব ব্রহ্মের সঙ্গে ভিন্ন ও অভিন্ন দুই ই। অবিদ্যাবশত জীব মে ব্রহ্ম স্বরূপ ,তার সে বিস্মৃত হয় এবং নিজেকে জ্ঞাতি,ক্রেতা ভোক্তা বলে মনে করে। জিপ সর্বতো ব্রহ্মের সঙ্গে অভিন্ন হলেও ব্রহ্মের বিবর্তন কার্য রূপে চিপ ব্রহ্ম থেকে ভিন্ন।



১৪) ব্রহ্মসূত্রের রচয়িতা কে?


       উত্তর -রামানুজ হলেন ব্রহ্ম সূত্রের রচয়িতা। আসলে রামানুজ ছিলেন একজন ভারতীয় দার্শনিক, হিন্দু ধর্মতাত্ত্বিক, সমাজ সংস্কারক এবং হিন্দু ধর্মের মধ্যে বৈষ্ণবধর্মের ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবক্তা। 


১৫) শঙ্করের মতে জগত কোন অর্থে মিথ্যা?


         উত্তর - শংকরের মতে জগত বন্ধ্যাপুত্রের মতো অসৎ নয়, তবে পারমার্থিক সত্য বা ব্রহ্মের উপলব্ধি হলে জগতের অস্তিত্ব থাকে না। সুতরাং জগৎ মিথ্যা,জগৎ মায়ার সৃষ্টি।



১৬)অদ্বৈত বেদান্ত মতে পারমার্থিক সত্তা কি?


          উত্তর -অদ্বৈত বেদান্ত মতে যা কখনো কোন জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার দ্বারা বাধিত হয় না বা অসৎ বলে প্রমাণিত হয় না, যা সব রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করে, তাই হলো পরমার্থিক সত্তা।



১৭)অযুতসিদ্ধ পদার্থ গুলির নাম লেখো।


          উত্তর -পাঁচটি যুগ্ম পদার্থ অযুত সিদ্ধ বলে গণ্য হয়।আর সেই পদার্থ গুলি হল- 

                গুণ ও দ্রব্য, ক্রিয়া ও দ্রব্য, জাতি ও ব্যাক্তি, বিশেষ ও নিত্য দ্রব্য এবং অবয়বী ও অবয়ব।



১৮) চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি?


           উত্তর -চার্বাক মতে ভুত চারটি।আর সেই ভূত গুলি হল-

           ক্ষিতি, অপ, তেজ ও মরুৎ।



১৯) অব্যাপদেশ্য পদার্থটি অর্থ কী?


        উত্তর -অব্যাপদেশ্য বলতে বোঝায় অশাব্দ ,অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না, তাই হলো অব্যপদেশ্য।


২০) পঞ্চাবয়বী অনুমানের অবয়ব গুলি কি কি?


          উত্তর - ন্যায়ের আশ্রয়বাক্যগুলিকে অবয়ব বলে । তাঁদের মতে অবয়বের সংখ্যা পাঁচটি।আর সেই অবয়বগুলি হলো-

        প্রতিজ্ঞা, হেতু, উদাহরণ, উপনয় এবং নিগমন।



২১) সামান্য ও জাতির মধ্যে পার্থক্য কি?


            উত্তর - যে সাধারণ প্রকৃতির জন্য এক জাতীয় অনেক দ্রব্যকে একই নামে ডাকা হয় সেই সাধারণ প্রকৃতিকে বলা হয় সামান্য। যেমন রাম, রহিম, করিম প্রমুখ ব্যক্তির সাধারণ প্রকৃতি মনুষত্ব। কিন্তু-

          ব্যক্তি মানুষ হিসেবে এক অন্য হতে পৃথক হলেও তাদের মধ্যে এমন কতগুলি গুণ আছে, যার জন্য তাদের একই জাতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


২২) আস্তিক দর্শন বলতে কী বোঝো? যেকোনো দুটি আস্তিক দর্শনের নাম লেখো।


           উত্তর -যে দর্শন বেদের প্রামাণ্যে বিশ্বাসী, সেই দর্শনকে আস্তিক দর্শন বলা হয়।

     বেদান্ত, মীমাংসা, বৈশেষিক, ন্যায়, সাংখ্য এবং যোগ এই ছয়টি আদি দর্শনগুলো আস্তিক দর্শনের অন্তর্ভুক্ত।


Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প