Skip to main content

পোষ্টমাষ্টার গল্পের নামকরণ কতটা যুক্তিযুক্ত গল্পের নায়ক চরিত্রের নিরিখে আলোচনা করে দেখাও।(চতুর্থ সসেমিস্টার, বাংলা মিল)



পোষ্টমাষ্টার গল্পের নামকরণ কতটা যুক্তিযুক্ত গল্পের নায়ক চরিত্রের নিরিখে আলোচনা করে  দেখাও।(চতুর্থ সসেমিস্টার, বাংলা মিল)


       ভূমিকা: আলোচনার শুরুতেই বলে রাখি যে-নামে কিছু যায় আসে না তবুও বলতে হয় গল্প বা উপন্যাসের ক্ষেত্রে এই কথাটি একদম খাটে না। আর আলোচ্য গল্পের ক্ষেত্রে আমরা দেখি গল্পটা নাম পোস্টমাস্টার। যে নামটি চরিত্রটির পেশার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেখানেই এই পোষ্টমাষ্টার চরিত্রটি অতি জীবন্ত। কিন্তু এই গল্পের প্রাণ প্রাণ হলো রতন নামক চরিত্রটি । তবুও গল্পটির নাম পোস্ট মাস্টার। যেখানেই রবীন্দ্রনাথ জানালেন---

      " সাজাদপুরের কৃষি বাড়িতে যে পোস্ট অফিস        ছিল তার পোষ্টমাষ্টারকে তিনি প্রতিদিন দেখতেন। তাকে নিয়েই এ গল্প ।"

          পোস্টমাস্টার গল্পে পোস্টমাস্টার এর কোন নাম নেই। তিনি কলকাতার মানুষ। তিনি গ্রামে এসে ভীষণ সমস্যার সম্মুখীন হলেন। ঠিক যেমন জলের মাছকে ডাঙায় তুললে সেই মাছের যে অবস্থা হয় পোস্টমাস্টার গল্পে পোস্টমাস্টার এর সেই একই অবস্থা আমরা দেখি। এই সকল সমস্যার মধ্যে আবার রতন তাঁর মনের মধ্যে অনেকটা জায়গা জুড়ে নেয়।

পোষ্টমাষ্টার চিন্তিত ঘরের জন্য।এই রতন একটি সময়ে  তাঁর একান্ত সঙ্গী হয়ে উঠে।রতনের যাবতীয় লেখাপড়ার খরচ তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। রতন হয়ে ওঠে তার কাছে স্নেহপুত্তলি মানবমুর্তি। রতন আজ পোস্ট মাস্টারের কাছে মনের মনের মানুষ হয়ে ওঠে। অতঃপর----

         একদিন পোস্টমাস্টারের ভীষণ জ্বর আসে। সেই সময় তার ইচ্ছা হলো একটুখানি সেবা পাবার। তাঁর মনে পড়ে শাঁখা পরা নরম হাতের তপ্ত ভালের স্পর্শের কথা।মনে পড়ে তাঁর জননী,দিদি পাশে বসে আছেন।আর ঠিক সেই সময়ে রতন জননী রূপে দেখা দিল তাঁর জীবনের পাতায়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ডাক আসে বিদায়ের! স্নেহ বন্ধন নয়,এবার বিদায়ের পালা।

রতনকে টাকা দিতে গেলে তিনি প্রত্যাখ্যাত হন। প্রকাশ ঘটে নিস্পাপ প্রেমের।রতন তাঁর সাথে যেতে চায়। কিন্তু----

       সমাজ বাঁধা হয়ে যায়। রতন অশ্রুসজল নয়নে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকে।আর সেই দৃষ্টির মধ্যে মুখ লুকিয়ে থাকে মনের মর্মব্যথা। যে ব্যথার কোন হিসাব থাকে না কেউ হিসাব রাখে না। কেউ মূল্য দেয় না। অসংখ্য বিচ্ছেদ অসংখ্য মৃত্যু ঠিক এভাবেই পথেই ঝটপট করে। কিন্তু সেই স্বপ্ন মৃত্যু সেই সকল মৃত্যুর কোন মরণ থাকে না। বলা যায় এই পৃথিবীর কেউ কারো নয় । সবই সামরিক জীবনের এক খেলা।

             পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে-রতন গল্পের অন্যতম চরিত্র হলেও পোস্টমাস্টার চরিত্রটি মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে গল্পকার রবীন্দ্রনাথের লেখনীতে। গল্পটির মধ্যে তত্ত্ব আছে আছে মর্মবেদনার কথা। যে মর্মবেদনা রতনকে  উদ্বিগ্ন করে তোলে। রতন পোষ্টমাস্টারকে ধরে রাখতে পারিনি। চাকরির সূত্রে পোস্ট মাস্টার চলে যান উন্যত্রে। পোস্টমাস্টার গল্পটি মধ্যেই আছে পারিবারিক জীবনের মর্মবেদনা, করুন আবেদন যে আবেদন গল্পটির মধ্যে রতন এবং পোস্টমাস্টার উভয়কে বন্ধনে আবদ্ধ রাখে । আর এখানেই গল্পটির নামকরণের সার্থকতা।।

                            শেষের কবিতা

                             সমরেশ স্যার

Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প