Skip to main content

ভারতের রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি আলোচনা করো।

ভারতের রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি আলোচনা করো।(West Bengal State University, Second Semester, NEP2020 Syllabus)। 


ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন দেশের শাসক প্রধান। তবে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রত্যক্ষভাবে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন না, তিনি পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকেন । আর ভারতীয় সংবিধানের ৫৪ ও ৫৫ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আর সেখানে বলা হয়েছে যে-

মনোনয়নপত্রঃ

        রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর মনোনয়নপত্র কমপক্ষে ৫০ জন নির্বাচক দ্বারা প্রস্তাবিত এবং অন্তত ৫০ জন নির্বাচকরা সমর্থিত হওয়ার দরকার। এছাড়া প্রার্থীকে ১৫,০০০ টাকা জমানত হিসেবে রাখতে হয়।

নির্বাচক সংস্থা গঠনঃ 

         ভারতীয় সংবিধানের ৫৪ নম্বর ধারা অনুসারে একটি বিশেষ নির্বাচক সংস্থা কর্তৃক রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। আর এই সংস্থার নির্বাচকমণ্ডলী দ্বারা একক হস্তান্তরযোগ্য সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে গোপন ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। আর এই নির্বাচক সংস্থা গঠিত হয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং রাজ্যগুলির বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে। তবে-

            রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দুটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। অঙ্গ রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব সমাহারে যাতে থাকে এবং সংসদের ও রাজ্য বিধানসভা গুলির সমষ্টিগত ভোট সংখ্যার সমতা যাতে রক্ষিত হয়। আর সেখানে- 

          ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতিকে নিম্নলিখিত পর্যায়ের ভিত্তিতে আলোচনা করা যেতে পারে-

১) বিধানসভার সদস্যদের ভোটের মূল্য নির্ণয়ঃ     

              সর্বপ্রথম প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বিধানসভার একজন নির্বাচিত সদস্যদের ভোটের মূল্য হল-

সর্বশেষ জনগণনা অনুসারে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জনসংখ্যা 

    -------------------------------               ÷১০০০

সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা।

           এক্ষেত্রে ভাগশেষ ৫০০ বা তার বেশি হলে ভাগফলের সাথে ১ যোগ করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচিত প্রত্যেক সদস্যের ভোটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

২) সংসদ সদস্যদের ভোটের মূল্য নির্ধারণঃ

             রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্যায় হল সংসদ সদস্যদের ভোটের মূল্য নির্ধারণ করা। সেখানে-

 সংসদে একজন নির্বাচিত সদস্যদের ভোটের মূল্য হল-

অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের মোট ভোটমূল্য 

----------------------------------------------

সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচিত সদস্যদের ভোট সংখ্যা। 

           তবে এক্ষেত্রে যদি ভাগশেষ থাকে এবং তা যদি ভাজক সংখ্যার অর্ধেকের সমান বা তার বেশি হয় তাহলে ভাগফলের সাথে ১ যোগ করলে যে সংখ্যা হবে সেটি হল সংসদের প্রতিটি নির্বাচিত সদস্যের ভোট মূল্য।

৩) সমানুপাতিক নির্বাচনঃ

       সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নিয়ম অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যতজন প্রার্থী থাকেন একজন ভোটদাতা ততগুলি পছন্দের ভোট দিতে পারেন। এক্ষেত্রে এইভাবে ভোটদাতাগণ ব্যালাটে প্রার্থীদের নামের পাশে ১,২,৩,৪, প্রভৃতি সংখ্যা বসাবেন। তবে ভোটদাতারা প্রথম পছন্দ অবশ্যই জানাবেন, অন্য পছন্দগুলি না জানালেও চলবে, তা না হলে ব্যালট বাতিল হবে 

কোটাঃ

     ভোটগ্রহণের পর সব প্রার্থীর প্রথম পছন্দের বৈধ ভোট গুলি গণনা করা হয়। এরপর এই যোগফল কে ২ দিয়ে ভাগ করলে তার সাথে ১ যোগ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তা হল কোটা। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হতে হলে এই কোটা সংখ্যক ভোট অবশ্যই পেতে হবে। 

ভোট হস্তান্তরঃ 

             ভোট গণনার পর যদি দেখা যায় যে,কোন প্রার্থী 'কোটা' ভোট না পান তাহলে যে প্রার্থী সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন তাকে নির্বাচন থেকে বাদ দিয়ে তাঁর ব্যালাটের দ্বিতীয় পছন্দের ভোটকে অবশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে হস্তান্তরিত করা। হয় যতক্ষণ না পর্যন্ত এই কোটা পূর্ণ হয় ততক্ষণ পর্যন্ত ভোট হস্তান্তর চলতে থাকে। তবে সর্বনিম্ন ভোটপ্রাপ্ত স্থানে যদি দুজন প্রার্থী থাকেন তাহলে লটারির মাধ্যমে তখন নির্ধারণ করা হয়।


ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল "SHESHER KOBITA SUNDORBON" YOUTUBE CHANNEL ।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...