•রম্যরচনা কাকে বলে?•
আমরা জানি যে,রম্য রচনা' কথাটির অভিধানিক অর্থ হলো, যে রচনা রমণীয় বা সুন্দর। আর এই অর্থে রম্য রচনার এই সংজ্ঞাটি অতি ব্যাপক। কারণ হিসেবে আমরা বলতে পারি যে-
সাহিত্যের ধর্মই এই যে, তা রমণীয় ও সুন্দর হবে, হবে রসোত্তীর্ণ। আর এই অর্থে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ—সকল শ্রেষ্ঠ রচনাসমূহকেই রম্য রচনা অভিধায় ভূষিত করতে পারি। তবে ‘রম্য রচনা’ কথাটির এই ব্যাপক অর্থ স্বীকার করেও, বিশেষ অর্থে রম্য রচনা বলতে আমরা এক বিশেষ রচনারীতিকেই বুঝে থাকি। আর সেখানে বলা যেতে পারে-
যে রচনায় জীবনের লঘু-চপল বিকাশগুলিকে নিয়ে উচ্চতর সারস্বত কর্মে নিয়োজিত করা হয়, সেই রচনাই রম্য রচনা।
•রম্যরচনার বৈশিষ্ট্য লেখো•
প্রথমতঃ হালকা বৈঠকি চালে, ঘরোয়া মেজাজে, লঘু
হাস্যরসাত্মক, রম্য কল্পনার স্পর্শযুক্ত যেকোনো গদ্য রচনাকেই রম্য রচনা বলা যায়।
দ্বিতীয়তঃ রবীন্দ্রনাথের মতে, রম্য রচনা হলো-বাজে
কথার রচনা। যেখানে অন্য খরচের চেয়ে বাজে খরচের মানুষকে যথার্থ চেনা যায়। কারণ মানুষ ব্যয় করে বাধা নিয়ম অনুসারে।আর অপব্যয় করে নিজের খেয়ালে। যেমন বাজে খরচ তেমনি বাজে কথাতেই মানুষ আপনাকে ধরা দেয়। এই মন্তব্যের আলোকে দেখলে স্বচ্ছন্দ, নির্ভয়, খেয়ালী কল্পনায় সর্ববন্ধন মুক্ত রম্যতাই এ জাতীয় রচনা চরিত্র লক্ষণ।
তৃতীয়তঃ ভার বর্জনের প্রয়াস যেমন থাকবে ভাষা ও
আঙ্গিকে, তেমনই থাকবে বিষয়েও। কোন গভীর তত্ত্বকথা প্রকাশের তাগিদ বা পাণ্ডিত্য প্রদর্শনের বাসনা যেমন থাকবে না, ভাষাভঙ্গি তেমনি সচ্ছন্দ স্বাধীন গতিতে চলবে কোন স্থির অনুশাসনের পরোয়া না করে।
চতুর্থতঃ লেখক ও পাঠকের নিবিড় সান্নিধ্য লঘু
ও সরস আড্ডাই রম্যরচনা প্রাণ। তবে মজলিসি মেজাজ না থাকলে এ রচনার উপভোগ্যতাই হারিয়ে যায়।
Comments
Post a Comment