Skip to main content

কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী আলোচনা করো।

কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী আলোচনা করো।

ভূমিকাঃ আমরা জানি যে, কোন দেশের সরকারের 

               সাফল্য নির্ভর করে সেই দেশের সরকারি কর্মচারীদের সততা,কর্মদক্ষতা এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির উপর। আর সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হলে তাদের নিয়োগের বিষয়টি রাজনৈতিক প্রশাসকের পরিবর্তে একটি নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের হাতে প্রদান করা শ্রেয় । এই ধরনের উপলব্ধি থেকে ভারতীয় সংবিধানের ১১৫ নম্বর ধারায় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে।

গঠনঃ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত একজন সভাপতি এবং 

           কয়েকজন সদস্য নিয়ে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশন গঠিত হয়। আর কতজন সদস্য নিয়ে এই কমিশন গঠিত হবে তা নির্ধারণ করে থাকেন রাষ্ট্রপতি। তবে বর্তমানে রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের সদস্য সংখ্যা হল ১০। এই কমিশনের সভাপতি ও সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ ৬ বছর। তবে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে কমিশনের যেকোনো সদস্য পদত্যাগ করতে পারেন। আবার বিশেষ কারণে রাষ্ট্রপতি যে কোন সদস্যকে অপসারণও করতে পারেন।

                   •ক্ষমতা ও কার্যাবলী•

•প্রথমতঃ রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের প্রথম এবং প্রধান 

             কাজ হল কেন্দ্রীয় এবং সর্বভারতীয় কর্মচারী নিয়োগের পদগুলি পূরণের জন্য সঠিক সময় পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। আর এই উদ্দেশ্যে কমিশন প্রতিবছর সঠিক সময়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে।


•দ্বিতীয়তঃ দুই বা ততোধিক রাজ্যের অনুরোধের 

            ভিত্তিতে কমিশন ঐসব রাজ্যগুলির সরকারি কর্মচারী নিয়োগের জন্য এক চূড়ান্ত নিয়ম প্রণয়ন করতে পারে। আর সেই নিয়ম গুলি যাতে কার্যকরী করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্ৰহণ করে থাকে। যেখানে যোগ্য বাছাইয়ের কাজে কমিশন সাহায্য করতে পারে।


•তৃতীয়তঃ কমিশন রাষ্ট্রপতির কাছে তার কার্যকলাপ 

             সম্পর্কে বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করে থাকে। এক্ষেত্রে কমিশন কি কি কাজ করেছে, সরকারের কোন কোন পরামর্শ কমিশন গ্রহণ করেছে, কমিশনের কোন কোন পরামর্শ সরকার গ্রহণ করেছে প্রতিবেদনে তার উল্লেখ থাকে। রাষ্ট্রপতি ওই প্রতিবেদন পার্লামেন্টের পেশ করে।


•চতুর্থতঃ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশন বিভিন্ন সময়ে 

           বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে থাকে। আর সেই পরামর্শ গুলি হল-

•ক) অসামরিক চাকরি ও পদ সমূহেরর নিয়োগ পদ্ধতি, পদোন্নতি,বদলির নীতি নির্ধারণ।

•খ) অসামরিক কর্মচারীদের শৃঙ্খলা সম্পর্কিত বিষয়। 

•গ) কর্মরত অবস্থায় আহত হয়ে অবসর গ্রহণের জন্য অসামরিক কর্মচারীদের পেনশনের দাবি। 

•ঘ) কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনীত মামলার ব্যয়ের সংক্রান্ত বিষয়ে প্রভৃতি।

পঞ্চমতঃ পার্লামেন্টে আইন করে কোন অতিরিক্ত 

             কাজের দায়িত্ব কমিশনের উপর অর্পণ করতে পারে।আর কমিশন সেই দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য।

                        •মূল্যায়ন•

•প্রথমতঃ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশন একটি 

             পরামর্শদান মূলক প্রতিষ্ঠান। এর সুপারিশ গুলি সরকারকে মেনে চলতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে সুপারিশ অগ্রাহ্য করে সরকার নিজের খুশিমত কর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে আদালতের কোন এক্তিয়ার নেই।

•দ্বিতীয়তঃ কমিশনের রিপোর্ট কত দিনের মধ্যে 

             পার্লামেন্টে পেশ করতে হবে এ সম্পর্কে সংবিধানে কিছু উল্লেখ নেই। যার ফলে অনেক দেরিতে কমিশনের রিপোর্ট যখন পার্লামেন্টে পেশ করা হয় তখন সেই রিপোর্টের কোন গুরুত্ব থাকে না।

•তৃতীয়তঃ কমিশনের সুপারিশ ছাড়াই সরকার 

              অস্থায়ীভাবে সরকারি কর্মচারী নিয়োগ করতে পারে। পরে যখন এইভাবে নিযুক্ত কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে সরকার কমিশনের মতামত চায়, তখন তাদের স্থায়ীভাবে নিয়োগের সুপারিশ করা ছাড়া কমিশনের অন্য কিছু করার থাকে না। কারণ সাধারণত এইসব ক্ষেত্রে অস্থায়ী কর্মচারীদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশ থাকে।

•চতুর্থতঃ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পার্লামেন্ট, 

            কার্যক্ষেত্রে মন্ত্রীপরিষদ,রাষ্ট্রকৃত্যক সংক্রান্ত সাংবিধানিক বিভিন্ন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে  বা কমিশনের ক্ষমতা সংকোচিত করতে পারে।


ঠিক এইরকম অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL ।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...