ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার আলোচনা করো। ভূমিকাঃধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ভারতের সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা একটি মৌলিক অধিকার। এই অধিকারটি সকল ব্যক্তিকে তাদের ধর্ম পালন, অনুশীলন এবং প্রচারের স্বাধীনতা দিয়ে থাকে।ভারতের বহু ধর্মাবলম্বী মানুষের বসবাস। আর এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের ভাব বজায় রাখার জন্য সংবিধান রচয়িতা সংবিধানের ২৫ থেকে ২৮ নম্বর ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে ১৯৭৬ সালের আগে মূল সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির উল্লেখ ছিল না। কিন্তু ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারটি যুক্ত করা হয়। আর সেখানে বলা হয়- ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ রাষ্ট্রধর্ম বিরোধীতা নয়। অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে বোঝায়, রাষ্ট্র কোন ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা বা বিরোধিতা করবে না। বরং রাষ্ট্র সকল ধর্মাবলম্বী মানুষকে সমান সুবিধা দেবে, সব ধর্মকে সমান মর্যাদার চোখে দেখবে।আর সেই দৃষ্টিতে- •ক) সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা• সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের বিবেক এবং বিশ্বাস অনুযায়ী যে কোন ধর্ম গ্রহণ, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ও নিজের ধর্মমত প্রচার করতে পারবে। কিন্তু - রাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য,জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই অধিকারটির ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে। আর সেখানেই ধর্ম আচরণের সাথে জড়িত অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, এবং ধর্মনিরপেক্ষ কার্যাবলীকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার আছে। •খ) সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা• ভারতীয় সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের ধর্ম প্রচারের জন্য ধর্ম প্রতিষ্ঠান স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে পারবেন। শুধু তাই নয় তাদের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ভোগ ও পরিচালনা করতে পারবেন। তবে- ২৬ নম্বর ধারায় উল্লেখিত নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে কখনোই অবস্থান করে না। কারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই ধর্মীয় অধিকারটির ওপর রাষ্ট্র বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে, পাঞ্জাবে গুরুদ্বারগুলিকে কেন্দ্র করে উগ্রপন্থীদের কাজকর্ম প্রতিরোধ করার জন্য সরকার ১৯৮৮ সালে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। •গ) সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারা• সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন বিশেষ ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন ব্যক্তিকে কর বা চাঁদা দিতে বাধ্য করা যাবে না। •ঘ) সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারা• ভারতীয় সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি সরকারের সাহায্যে পরিচালিত হয় যেখানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া যাবে না। এছাড়া সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বা আংশিকভাবে সরকারি অর্থে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে শিক্ষার্থীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যাবে না। তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধার নিষেধ নেই। পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ভারতে কেবলমাত্র নাগরিক নয়, বিদেশীরাও পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করে থাকেন। তবে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হলেও সমাজ জীবনে এই আদর্শটি বাস্তবায়িত করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। রাষ্ট্রের পরিচালকরা কোন ধর্মকে উৎসাহ না দেওয়ার পরিবর্তে সকল ধর্মকেই উৎসাহ দিতে এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ধর্মকে জড়িয়ে ফেলতে আগ্রহী। আর সে কারণেই রাজনৈতিক দলগুলি মানুষের অন্ধ ধর্ম বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করে চলেছে বারেবারে। তবে - রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো যাইই হোক না কেন, মানুষকে বুঝতে হবে মিলেমিশে থাকতে হলে ধর্মনিরপেক্ষতার কোন গল্প নেই। তাই মানুষকে সংকীর্ণ মানসিকতার ঊর্ধ্বে উঠে পরমত সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা সামনে রেখে প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে এবং অপরকে গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। আর সেখানে ভারতবাসী হিসেবে প্রত্যেকের লক্ষ্য ও আদর্শ হবে- " I am an Indian, every Indian is my brother." ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল "SHESHER KOBITA SUNDORBON" YOUTUBE CHANNEL । রাজ্যপালের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আলোচনা করো। •ভূমিকাঃ ভারতের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি যেমন নাম সর্বস্ব শাসক প্রধান, ঠিক তেমনি রাজ্যের রাজ্যপাল নাম সর্বস্ব শাসক প্রধান। তবে ভারতের রাষ্ট্রপতির কোন স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা নেই। কিন্তু রাজ্যপালের কতকগুলি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আছে। রাজ্যপাল তাঁর স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের সময় মন্ত্রিসভার পরামর্শ মানতে বাধ্য নয়।আর সংবিধানের ১৬৩ নম্বর ধারায় রাজ্যপালের কতগুলি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সেই ক্ষমতা গুলি হলো - •প্রথমতঃ রাষ্ট্রপতি যদি কোন রাজ্যের রাজ্যপালকে পার্শ্ববর্তী কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন তাহলে তিনি ওই অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। •দ্বিতীয়তঃ অরুণাচল প্রদেশ, মনিপুর, সিকিম ও নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, রাজ্যপাল উপজাতিদের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা করতে পারেন। •তৃতীয়তঃ আসামের রাজ্যপাল উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার জন্য স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।তবে- •এছাড়াও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার নিয়োগ ও অপসারণ, বিধানসভা ভেঙে দেওয়া, বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তবে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা বিভিন্ন সময় রাজ্যপালকে নামসর্বস্ব শাসক প্রধানের পরিবর্তে সক্রিয় শাসকের পরিণত করো।
ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার আলোচনা করো।
ভূমিকাঃধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ভারতের
সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা একটি মৌলিক অধিকার। এই অধিকারটি সকল ব্যক্তিকে তাদের ধর্ম পালন, অনুশীলন এবং প্রচারের স্বাধীনতা দিয়ে থাকে।ভারতের বহু ধর্মাবলম্বী মানুষের বসবাস। আর এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের ভাব বজায় রাখার জন্য সংবিধান রচয়িতা সংবিধানের ২৫ থেকে ২৮ নম্বর ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে ১৯৭৬ সালের আগে মূল সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির উল্লেখ ছিল না। কিন্তু ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারটি যুক্ত করা হয়। আর সেখানে বলা হয়-
ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ রাষ্ট্রধর্ম বিরোধীতা নয়। অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে বোঝায়, রাষ্ট্র কোন ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা বা বিরোধিতা করবে না। বরং রাষ্ট্র সকল ধর্মাবলম্বী মানুষকে সমান সুবিধা দেবে, সব ধর্মকে সমান মর্যাদার চোখে দেখবে।আর সেই দৃষ্টিতে-
•ক) সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা•
সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের বিবেক এবং বিশ্বাস অনুযায়ী যে কোন ধর্ম গ্রহণ, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ও নিজের ধর্মমত প্রচার করতে পারবে। কিন্তু -
রাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য,জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই অধিকারটির ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে। আর সেখানেই ধর্ম আচরণের সাথে জড়িত অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, এবং ধর্মনিরপেক্ষ কার্যাবলীকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার আছে।
•খ) সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা•
ভারতীয় সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের ধর্ম প্রচারের জন্য ধর্ম প্রতিষ্ঠান স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে পারবেন। শুধু তাই নয় তাদের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ভোগ ও পরিচালনা করতে পারবেন। তবে-
২৬ নম্বর ধারায় উল্লেখিত নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে কখনোই অবস্থান করে না। কারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই ধর্মীয় অধিকারটির ওপর রাষ্ট্র বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে, পাঞ্জাবে গুরুদ্বারগুলিকে কেন্দ্র করে উগ্রপন্থীদের কাজকর্ম প্রতিরোধ করার জন্য সরকার ১৯৮৮ সালে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে।
•গ) সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারা•
সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন বিশেষ ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন ব্যক্তিকে কর বা চাঁদা দিতে বাধ্য করা যাবে না।
•ঘ) সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারা•
ভারতীয় সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি সরকারের সাহায্যে পরিচালিত হয় যেখানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া যাবে না। এছাড়া সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বা আংশিকভাবে সরকারি অর্থে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে শিক্ষার্থীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যাবে না। তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধার নিষেধ নেই।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ভারতে কেবলমাত্র নাগরিক নয়, বিদেশীরাও পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করে থাকেন। তবে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হলেও সমাজ জীবনে এই আদর্শটি বাস্তবায়িত করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। রাষ্ট্রের পরিচালকরা কোন ধর্মকে উৎসাহ না দেওয়ার পরিবর্তে সকল ধর্মকেই উৎসাহ দিতে এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ধর্মকে জড়িয়ে ফেলতে আগ্রহী। আর সে কারণেই রাজনৈতিক দলগুলি মানুষের অন্ধ ধর্ম বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করে চলেছে বারেবারে। তবে -
রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো যাইই হোক না কেন, মানুষকে বুঝতে হবে মিলেমিশে থাকতে হলে ধর্মনিরপেক্ষতার কোন গল্প নেই। তাই মানুষকে সংকীর্ণ মানসিকতার ঊর্ধ্বে উঠে পরমত সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা সামনে রেখে প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে এবং অপরকে গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। আর সেখানে ভারতবাসী হিসেবে প্রত্যেকের লক্ষ্য ও আদর্শ হবে-
" I am an Indian, every Indian
is my brother."
ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল "SHESHER KOBITA SUNDORBON"
YOUTUBE CHANNEL ।
রাজ্যপালের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আলোচনা করো।
•ভূমিকাঃ ভারতের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি যেমন নাম সর্বস্ব শাসক প্রধান, ঠিক তেমনি রাজ্যের রাজ্যপাল নাম সর্বস্ব শাসক প্রধান। তবে ভারতের রাষ্ট্রপতির কোন স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা নেই। কিন্তু রাজ্যপালের কতকগুলি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আছে। রাজ্যপাল তাঁর স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের সময় মন্ত্রিসভার পরামর্শ মানতে বাধ্য নয়।আর সংবিধানের ১৬৩ নম্বর ধারায় রাজ্যপালের কতগুলি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সেই ক্ষমতা গুলি হলো -
•প্রথমতঃ রাষ্ট্রপতি যদি কোন রাজ্যের রাজ্যপালকে পার্শ্ববর্তী কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন তাহলে তিনি ওই অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।
•দ্বিতীয়তঃ অরুণাচল প্রদেশ, মনিপুর, সিকিম ও নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, রাজ্যপাল উপজাতিদের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা করতে পারেন।
•তৃতীয়তঃ আসামের রাজ্যপাল উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার জন্য স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।তবে-
•এছাড়াও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার নিয়োগ ও অপসারণ, বিধানসভা ভেঙে দেওয়া, বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তবে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা বিভিন্ন সময় রাজ্যপালকে নামসর্বস্ব শাসক প্রধানের পরিবর্তে সক্রিয় শাসকের পরিণত করে।
ভূমিকাঃ। ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ভারতের
সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা একটি মৌলিক অধিকার। এই অধিকারটি সকল ব্যক্তিকে তাদের ধর্ম পালন, অনুশীলন এবং প্রচারের স্বাধীনতা দিয়ে থাকে।ভারতের বহু ধর্মাবলম্বী মানুষের বসবাস। আর এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের ভাব বজায় রাখার জন্য সংবিধান রচয়িতা সংবিধানের ২৫ থেকে ২৮ নম্বর ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে ১৯৭৬ সালের আগে মূল সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির উল্লেখ ছিল না। কিন্তু ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারটি যুক্ত করা হয়। আর সেখানে বলা হয়-
ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ রাষ্ট্রধর্ম বিরোধীতা নয়। অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে বোঝায়, রাষ্ট্র কোন ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা বা বিরোধিতা করবে না। বরং রাষ্ট্র সকল ধর্মাবলম্বী মানুষকে সমান সুবিধা দেবে, সব ধর্মকে সমান মর্যাদার চোখে দেখবে।আর সেই দৃষ্টিতে-
•ক) সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা•
সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের বিবেক এবং বিশ্বাস অনুযায়ী যে কোন ধর্ম গ্রহণ, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ও নিজের ধর্মমত প্রচার করতে পারবে। কিন্তু -
রাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য,জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই অধিকারটির ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে। আর সেখানেই ধর্ম আচরণের সাথে জড়িত অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, এবং ধর্মনিরপেক্ষ কার্যাবলীকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার আছে।
•খ) সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা•
ভারতীয় সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের ধর্ম প্রচারের জন্য ধর্ম প্রতিষ্ঠান স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে পারবেন। শুধু তাই নয় তাদের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ভোগ ও পরিচালনা করতে পারবেন। তবে-
২৬ নম্বর ধারায় উল্লেখিত নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে কখনোই অবস্থান করে না। কারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই ধর্মীয় অধিকারটির ওপর রাষ্ট্র বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে, পাঞ্জাবে গুরুদ্বারগুলিকে কেন্দ্র করে উগ্রপন্থীদের কাজকর্ম প্রতিরোধ করার জন্য সরকার ১৯৮৮ সালে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে।
•গ) সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারা•
সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন বিশেষ ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন ব্যক্তিকে কর বা চাঁদা দিতে বাধ্য করা যাবে না।
•ঘ) সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারা•
ভারতীয় সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি সরকারের সাহায্যে পরিচালিত হয় যেখানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া যাবে না। এছাড়া সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বা আংশিকভাবে সরকারি অর্থে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে শিক্ষার্থীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যাবে না। তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধার নিষেধ নেই।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ভারতে কেবলমাত্র নাগরিক নয়, বিদেশীরাও পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করে থাকেন। তবে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হলেও সমাজ জীবনে এই আদর্শটি বাস্তবায়িত করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। রাষ্ট্রের পরিচালকরা কোন ধর্মকে উৎসাহ না দেওয়ার পরিবর্তে সকল ধর্মকেই উৎসাহ দিতে এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ধর্মকে জড়িয়ে ফেলতে আগ্রহী। আর সে কারণেই রাজনৈতিক দলগুলি মানুষের অন্ধ ধর্ম বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করে চলেছে বারেবারে। তবে -
রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো যাইই হোক না কেন, মানুষকে বুঝতে হবে মিলেমিশে থাকতে হলে ধর্মনিরপেক্ষতার কোন গল্প নেই। তাই মানুষকে সংকীর্ণ মানসিকতার ঊর্ধ্বে উঠে পরমত সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা সামনে রেখে প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে এবং অপরকে গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। আর সেখানে ভারতবাসী হিসেবে প্রত্যেকের লক্ষ্য ও আদর্শ হবে-
" I am an Indian, every Indian
is my brother."
ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল "SHESHER KOBITA SUNDORBON"
YOUTUBE CHANNEL ।
রাজ্যপালের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আলোচনা করো।
•ভূমিকাঃ ভারতের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি যেমন নাম সর্বস্ব শাসক প্রধান, ঠিক তেমনি রাজ্যের রাজ্যপাল নাম সর্বস্ব শাসক প্রধান। তবে ভারতের রাষ্ট্রপতির কোন স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা নেই। কিন্তু রাজ্যপালের কতকগুলি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আছে। রাজ্যপাল তাঁর স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের সময় মন্ত্রিসভার পরামর্শ মানতে বাধ্য নয়।আর সংবিধানের ১৬৩ নম্বর ধারায় রাজ্যপালের কতগুলি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সেই ক্ষমতা গুলি হলো -
•প্রথমতঃ রাষ্ট্রপতি যদি কোন রাজ্যের রাজ্যপালকে পার্শ্ববর্তী কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন তাহলে তিনি ওই অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।
•দ্বিতীয়তঃ অরুণাচল প্রদেশ, মনিপুর, সিকিম ও নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, রাজ্যপাল উপজাতিদের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা করতে পারেন।
•তৃতীয়তঃ আসামের রাজ্যপাল উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার জন্য স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।তবে-
•এছাড়াও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার নিয়োগ ও অপসারণ, বিধানসভা ভেঙে দেওয়া, বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তবে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা বিভিন্ন সময় রাজ্যপালকে নামসর্বস্ব শাসক প্রধানের পরিবর্তে সক্রিয় শাসকের পরিণত করে।
Comments
Post a Comment