পদিপিসির বর্মীবাক্স শেষ পর্যন্ত কে কীভাবে আবিষ্কার করতে পেরেছিল, আলোচ্য গল্প অবলম্বনে তা আলোচনা করো।
পদিপিসির বর্মীবাক্স শেষ পর্যন্ত কে কীভাবে আবিষ্কার করতে পেরেছিল, আলোচ্য গল্প অবলম্বনে তা আলোচনা করো।(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার,NEP)
ভূমিকাঃ আলোচনা শুরুতেই আমরা বলতে পারি যে, বাংলা কথাসাহিত্যে লীলা মজুমদার এক অনন্য প্রতিবাধর লেখিকা। আর সেই প্রতিবাধর লেখিকার অন্যতম অসামান্য একটি গল্প হল 'পদিপিসির বর্মীবাক্স'। তবে গল্পটি শিশুদের উপযোগী হলেও কিশোর, বৃদ্ধ বনিতা সকলের মন কেড়ে নিয়েছেন লীলা মজুমদার এই গল্পের মধ্যে দিয়ে। বলা যায় এই গল্পে লীলা মজুমদার সকল স্তরের মানুষের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দের রসের ধারা বইয়ে দিয়েছেন।আর-
গল্পটির শুরুতেই আমরা দেখি,পদিপিসি নিমাই খুড়োর কাছ থেকে একটি গয়নার বাক্স পান এবং বাড়িতে এসে তিনি সেই বাক্সটি আর খুঁজে পান না। প্রবল তেজস্বী মহিলা পদিপিসি কিভাবে একশো বছর পর সেই মহামূল্যবান বাক্সটি ফিরে পেলেন সেটাই আমাদের আলোচ্য বিষয়। আর সেখানে আমরা দেখি-
পদিপিসির বর্মীবাক্স র গল্পের কথক মামার বাড়িতে যাচ্ছেন। আসলে এই কথক হলেন চৌধুরী পরিবারের মেজ মেয়ের পুত্র। আর মামার বাড়ি যাওয়ার সময় তিনি সঙ্গে নিলেন পাঁচুমামাকে।এই পাঁচুমামা দেখতে ঠিক অনেকটা প্যাঁকাটির মত। তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে,এই পাঁচুমামা ইঁদুর দেখলে ভীষণ ভয় পায়। তাসত্ত্বেও সে পদিপিসির হারিয়ে যাওয়া মহামূল্যবান বাক্সটি আবিষ্কার করার কথা নিরন্তর ভেবে চলেছে। এখানে পাঁচুমামা ট্রেনে আসার সময় কথককে পদিপিসি এবং তার হারিয়ে যাওয়া বর্মিবাক্সের গল্প শোনায়।পাশাপাশি নিধিরাম শর্মাকে আর একজন শ্রোতা হিসেবে আমরা দেখতে পাই। তবে -
রাত্রিতে মামার বাড়ির ষ্টেশনে কথকরা নেমে দেখলেন ষ্টেশন জনমানবহীন এবং ঘনশ্যাম তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ষ্টেশনে এসেছে।তবে এখানে কথক অন্য আরোও বেশি কিছু প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু বোধহয় কথকের প্রত্যাশা হতাশায় রূপান্তরিত হলো। অতঃপর করা মামার বাড়িতে পৌঁছে যায় এবং বিরাট ভুঁড়িভোজ করে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দিদিমার কাছ থেকে পদিপিসির গল্প শোনে।আর সেখানে -
পদিপিসিকে দেখানো হয়েছে-বিধবা মানুষ। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা থাকলেও মনে ছিল ভীষণ প্যাঁচ।তবে তেজ ছিল তার সিংহের ন্যায়। এই পিসি একদিন গভীর বনের মধ্যে দিয়ে নিমাই খুড়োর বাড়িতে যায়। তবে সেখানে যাওয়ার আগে এই পিসি ডাকাতের কবলে পড়ে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। বেশ কিছুদিন পর পিসি জানতে পারে ঐ ডাকাত দলের সর্দার হলো নিমাই খুড়ো। এই বিষয়টি যাতে আর পাঁচকান না হয় তার জন্য নিমাই খুড়ো মোটা অংকের টাকা দিতে গেলে পদিপিসি তা নিতে অস্বীকার করে। কিন্তু নিমাই খুড়ো লোহার সিন্দুক থেকে তার পছন্দমত গয়না নিতে বললে পদিপিসি সানন্দে তা নিয়ে বর্মিবাক্সে ভরে বাড়ির পথে পা বাড়ায়। কিন্তু --
পদিপিসি বাড়িতে এসে সেই বর্মিবাক্সটি আর খুঁজে পায়না। চারিদিকে খোঁজ পড়ে যায় বর্মী বাক্সটি উদ্ধার করার জন্য। এই বাক্সটি খোঁজ করতে গিয়ে অনেক পুরানো হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পাওয়া গেল,কিন্তু বর্মী বাক্সটি কিছুতেই খুঁজে পাওয়া গেল না। এই সময়কালে কথক দেওয়াল বেয়ে ছাদে উঠে যায়। সেখানে গিয়ে কথক দেখে বহু বছর ধরে শুকনো পাতায় ছাদ ভরে গেছে। অবশ্যই ছাদে পায়রার খোপ থেকে একটি বাক্স কথক আবিষ্কার করে। অতঃপর সেই বাক্সটি এনে কথক দিদিমার হাতে দুহাত ভরে তুলে দেয়। অতঃপর--
আমরা দেখি দিদিমার হারিয়ে যাওয়া বর্মি বাক্সটি ফিরে পেয়ে সক্কলকে রত্ন ভাগ করে দিলেন।কথককে দিলেন একটি বহু মূল্যবান পান্নার আংটি। আর সকলকে সব কিছু দিয়ে নিজের জন্য রাখলেন বর্মিবাক্সটি তার রান্না ঘরে মশলা রাখার জন্য।
Comments
Post a Comment