Skip to main content

কবি জয় (XI)গোস্বামী নুন কবিতার মধ্যে দিয়ে সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষের অসহায় জীবন যাত্রার করুন কাহিনী তুলে ধরেছেন- আলোচনা করো।

কবি জয় গোস্বামী নুন কবিতার মধ্যে দিয়ে সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষের অসহায় জীবন যাত্রার করুন কাহিনী তুলে ধরেছেন- আলোচনা করো।


              •আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে,কবি জয় গোস্বামীর একটি অন্যতম কবিতা 'নুন'। আর এই কবিতাটি 'ভুতুমভগবান' কাব্যগ্ৰন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। যেখানে আমাদের এই সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কথা তুলে ধরা হয়েছে। আসলে এই মানুষগুলির দৈনন্দিন জীবনযাত্রা করুন ও অসহায়। কিভাবে তাদের সংসার জীবন অতিবাহিত হবে তা তারা নিজেই জানে না। কারণ তাদের আজ নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায়! এ এক ঐ মানুষগুলোর অসহ্য অসহায় জীবন।আর সেখানে আমরা দেখি-

               • নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কাহিনী।যে কাহিনীতে আছে পরিবার গুলির মনের কথা, মনের ভাষা। তবে তাদের মনের কথা, মনের ভাষা যাইই হোক না কেন, এই মানুষগুলো কিন্তু অল্পতেই ভীষণ খুশি। কারণ তারা একবেলা ভাতে,এক কাপড়ে খুশি থাকে। বলা যায় এমন জীবনযাত্রায় তারা অভ্যস্ত এবং এভাবেই তাদের দিনগুলি কেটে যায়। কারণ-

                •ওই নিম্নবিত্ত মানুষগুলি জানে বা জেনে গেছে যে, এ জীবনে দুঃখ করে কোন লাভ নেই! আর এই সকল মানুষগুলির প্রতিটা দিন কেটে যায় নানান সমস্যার মধ্যে দিয়ে। যে সমস্যাগুলোর মধ্যে থাকে তাদের অসুখ-বিসুখ, ধার দেনা আরও অনেক কিছু। তবে এই মানুষগুলি নিরন্তর চেষ্টা করে এই কঠিন বাস্তব মাটি থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু মুক্তি তাদের জন্য নয়! তাই পুরুষগুলি সাময়িকভাবে নেশাগ্রস্ত হয়ে এই দুঃখ বেদনা ভুলে থাকতে চায়। আসলে তারা চেষ্টা করে আনন্দ পাওয়ার। তবে-

               •এই সকল নিম্নবিত্ত পরিবারগুলি প্রতিদিন বাজার করতে পারে না। তবে যেদিন হাতে একটু  পয়সা বেশি থাকে সেদিন অনেক বাজার করে, এমনকি সেদিন বাজার থেকে শখ করে গোলাপচারাও কিনে আনে। কিন্তু এই গোলাপ চারাটি কোথায় বসাবে সেই জায়গাটুকুও তাদের নেই! আর কোনমতে বাড়ির লাগুয়া যদি বসানো যায় তাতে ফুল আসবে কিনা সে বিষয়েও তাদের সন্দেহ থাকে। আর এই সকল ভেবে তারা আরো মশগুল হয়ে পড়ে নেশার মধ্যে। এ এক তাদের অদ্ভুত জীবনযাত্রা। শুধু তাই নয়-

               •আমরা পূর্বেই বলেছি যে, এই নিম্নবিত্ত মানুষগুলি খুব সাধারণভাবে বেঁচে থাকতে চায়, তাই তারা অল্পতেই খুশি হয়ে পড়ে। আসলে তারা হেসে খেলে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অতিবাহিত করতে চায়। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে তা তারা করে উঠতে পারে না। তবুও তারা নিরন্তর কাজের খোঁজে থাকে কোনদিন কাজ পায় কোনদিন আবার পায়না। আর বাড়িতে এসে যখন তারা খেতে বসে তখন ওই পুরুষ মানুষগুলির রাগ মাথায় চড়ে যায়। তার অন্যতম কারণ ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুনটুকু বাড়ির মহিলারা দিতে পারেনা! আর ঠিক তখনই পিতা পুত্র কিংবা দুই ভাই মিলে পাড়া মাথায় করে তোলে। আর ঠিক তখনই তারা প্রতিবাদ করে বলে ওঠে-

       "তাদের ঠান্ডা ভাতে যেন একটু নুনের

       ব্যবস্থা করা হোক।"

             •পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, কবি জয় গোস্বামী তাঁর নুন কবিতার মধ্যে দিয়ে মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা ভাত, কাপড়ের বিষয়টি তুলে ধরেছেন সমাজের বুকে। কিন্তু এই ভাতের সাথে অন্যান্য সামগ্রী যেমন ডাল, মাছ, মাংস, অন্যান্য তরিতরকারি না হলেও তাদের চলবে।ধ্যতবে তাদের একান্ত প্রয়োজন সামন্য নুন। আর এই নুনটুকুও তারা জোগাড় করতে পারেনা! আসলে নুন এখানে খেটে খাওয়া মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদার প্রতীক। তাই তারা আজকে এই দাবিতে সোচ্চার হয় যে-

        "এ সমাজ যেন তাদের বেঁচে থাকার 

         জন্য সামান্য নুনটুকু যোগান দেয়।

আসলে এই কবিতার মধ্যে দিয়ে আমরা বুঝতে পারি যে,নুন একটি সামান্য বিষয় কিন্তু এখানে অসামান্য হয়ে উঠেছে।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...