চৈতন্যজীবনী রচনার কারণ আলোচনা করো ।•অথবা চৈতন্যদেবকে অবলম্বন করে মধ্যযুগে চৈতন্যজীবনী কাব্য রচনার কারণ আলোচনা করো।
•আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, চৈতন্যজীবনী সাহিত্য বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই একটু বলা দরকার যে- কোন কারণে মধ্যযুগে চৈতন্যজীবনী গুলি রচিত হয়েছিল। আর সেখানে আমরা দেখি-
স্বকালে অনেক ধর্মগুরুই পুরুষোত্তম রূপে বন্দিত হয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, তদীয় ভক্ত শিষ্যাদি তারা পূজার্যাদি লাভ করে থাকেন। কখনো কখনো ভক্ত হয়তো তার অলৌকিক জীবনের মাহাত্ম্য রচনায় তৎপর হয়েও থাকেন। কিন্তু ওই ধর্মগুরুগণ উল্কা কিংবা ধূমকেতুর সঙ্গেই বড়জোর উপমিত হতে পারেন। ফলে এদের ক্ষণভাস্বর মাহাত্ম্য তাঁদের অন্তর্ধানের সঙ্গে সঙ্গেই তিরোহিত হয়। কিন্তু -
চৈতন্য মহাপ্রভু ক্ষণজন্মা পুরুষ। লোকোত্তর প্রতিভার অধিকারী এই মহাপুরুষের দীপ্তি ও অন্তর্ধানের পরও বাংলা তথা ভারতের আকাশমণ্ডল কে জ্যোতিষ্মান করে রেখেছে। তাই তার বক্তব্যেন্দু শুধু তিরোধানের অব্যবহিত পরেই নয় দীর্ঘকাল পরেও এর উপযোগিতা উপলব্ধি করে চৈতন্যজীবনী রচনায় তৎপরতা দেখিয়ে গেছেন। তবে-
এটা অবশ্য যথার্থ যে, জীবনীকারগণ সকলেই ছিলেন চৈতন্য ভক্ত এবং চৈতন্য জীবনী অথবা বৈষ্ণবতত্ব মাহাত্ম্য প্রচার করবার জন্যই চৈতন্য-চরিত রচনা করেছিলেন। কিন্তু আমরা একালে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চৈতন্য জীবনী রচনার অপর একটি বিশেষ কারণের সন্ধান পাই। আর সেই কারণটি হলো-
•বাঙালির জাতীয় জীবনে ইতিপূর্বে এমন কোন মহৎ বা বৃহৎ পুরুষের আবির্ভাব ঘটেনি,যাকে আদর্শ রূপে বাঙালির সামনে উপস্থাপিত করা যায়। এই উদ্দেশ্য সিধির প্রয়োজনেই পূর্বে রামায়ণ,মহাভারতাদি অনুবাদ দ্বারা রাম-কৃষ্ণ-পাণ্ডব-আদি মহৎ পুরুষদের কীর্তিগাথা এবং বিভিন্ন মঙ্গলকাব্য রচনা করা হয়েছে।যে রচনার মধ্যে দিয়ে কালকেতু, চাঁদসদাগর, লাউসেন প্রভৃতি কল্পিত বীরপুরুষের চরিত্র সৃষ্টি করা হয়েছে।আর-
চৈতন্যদেবের আবির্ভাবে একজন প্রকৃত বাস্তব পুরুষের সন্ধান পাওয়া গেল, যার জীবনচরিত পূর্বোক্ত উদ্দেশ্যসিদ্ধি করেছে। অতএব সামাজিক এবং ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই চৈতন্য-চরিতসমূহ রচিত হয়েছিল-একথাও সমান সত্য।
•ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL ।
Comments
Post a Comment