প্রাথমিক বা মুখ্যগোষ্ঠী কাকে বলে? প্রাথমিক গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।
• প্রাথমিক মুখ্য গোষ্ঠীঃ প্রাথমিক গোষ্ঠী হল এক অন্তরঙ্গ সংগঠন।যে সংগঠনটি অল্প সংখ্যক মানুষ নিয়ে গঠিত হয়। এই সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্যের মধ্যে প্রত্যক্ষ বা ব্যক্তিগত পরিচয় থাকে। আর সেই পরিচয়ের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে স্বনিষ্ঠতাও বর্তমান থাকে। সেই সাথে থাকে প্রত্যেকের সাথে গভীর ও নিবিড় প্রত্যক্ষ বা মুখোমুখি সম্পর্ক। এই মুখোমুখি প্রত্যক্ষ, নিবিড়, অন্তরঙ্গ সম্পর্ককে বলা হয় প্রাথমিক গোষ্ঠী বা মুখ্য গোষ্ঠী বা মুখোমুখি গোষ্ঠী। আর এরূপ গোষ্ঠী গুলি হল পরিবার, খেলার দল, বন্ধু গোষ্ঠী ইত্যাদি।সমাজবিজ্ঞানী জিসবার্ট এর মতে- "প্রাথমিক গোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত হয়।"
•• প্রাথমিক গোষ্ঠীর প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য••
✓১) ব্যক্তিগত সান্নিধ্যঃ ব্যক্তিগত সান্নিধ্য সদস্যদের ভাব-ভাবনা, মতামত ইত্যাদির পারস্পরিক আদান-প্রদানকে সহজতর করে তোলে। এর ফলে গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে এক আত্মীয়তার মনোভাব গড়ে ওঠে।
✓২) আয়তনঃ গোষ্ঠীর আয়তনের উপর নির্ভর করে মুখোমুখি সম্পর্ক বা অন্তরঙ্গতা কতটা গভীর বা নিবিড়। আসলে গোষ্ঠীর আয়তন ক্ষুদ্র হলে সম্পর্ক গভীর হয়, আর গোষ্ঠীর আয়তন বিশাল হলে সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ঠিক ততটাই ক্ষীণ হয়।
✓৩) স্থিতিকালঃ প্রাথমিক গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে যার বেশি সাক্ষাৎকার হবে তার তত বেশি আন্তরিকতায় গভীরতা আসবে। আর সেখানে গোষ্ঠীর স্থিতিকাল দীর্ঘতর হয় সদস্যদের মধ্যে আবেগ অনুভূতির কারণে।
✓৪) দৈহিক নৈকট্যঃ প্রত্যক্ষ পরিচয় বা মুখোমুখি পরিচয় দৈহিক নৈকট্যের উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। দৈহিক নৈকট্য চিন্তা,চেতনা, ভাব-ভাবনা ও মতামতের পারস্পরিক আদান-প্রদানকে সহজ করে তোলে
✓৫) ব্যক্তিগত সম্পর্কঃ প্রাথমিক গোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা যেহেতু কম সেহেতু এই গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের বন্ধন অনেক বেশি দৃঢ় হয়। শুধু তাই নয়, নিবিড় ও দীর্ঘস্থায়ী যোগাযোগ সদস্যদের সম্পূর্ণরূপে আবদ্ধ করে।
✓৬) অভিন্ন উদ্দেশ্যঃ প্রাথমিক গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা খুবই কম হওয়ার কারণে এই গোষ্ঠীর সদস্যদের উদ্দেশ্য ও মনোভাবের মধ্যে বৃহৎ বা বিস্তর কোন মনোভাবের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। বলা যায় এই গোষ্ঠীর সকলেই এক অভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে চলে। তার প্রধান কারণ, জন্মের পর থেকেই প্রতিটি ব্যক্তি অনৈচ্ছিকভাবে এই গোষ্ঠীর সদস্যপদ গ্রহণ করে।
✓৭) স্বতঃস্ফূর্ত সম্পর্কঃ প্রাথমিক গোষ্ঠীর সদস্যরা মিলিত হয় এক স্বতঃপ্রবিত্ত হয়ে। অর্থাৎ অন্যের বিদ্বেষ ব্যতিরেকে স্বেচ্ছায় সদস্যরা প্রাথমিক সম্পর্কের সৃষ্টি করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। আর সেখানে শিশুরা ধীরে ধীরে সামাজিক প্রকৃতি লাভ করে।
• পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাথমিক বা মুখ্য গোষ্ঠী হলো সমাজের মধ্যে বসবাসকারী সকল ব্যক্তির মধ্যে মুখোমুখি বা প্রত্যক্ষ সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এক গোষ্ঠী। যে গোষ্ঠির মানুষেরা একে অপরের সহযোগিতার ওপর নির্ভর করে। আর সেই নির্বাহ তারপর ভিত্তি করি সব সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়।
✓✓ ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL ।
Comments
Post a Comment