Skip to main content

গণতন্ত্রের(XI-2nd semester.)পক্ষে যুক্তিগুলি আলোচনা করো।

গণতন্ত্রের পক্ষে যুক্তিগুলি আলোচনা করো।

আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, যুগ যুগ ধরে গণতন্ত্রের আদর্শ সমাজবদ্ধ মানুষের রাজনৈতিক আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাই বিভিন্ন যুগে রাজনীতিবিদ, দার্শনিক ও চিন্তা নায়কগণ গণতন্ত্রের তাৎপর্য ও মূল্য সম্পর্কে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন। আর সেখানে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার স্বপক্ষে যেরূপ বলিষ্ঠ সমর্থন মিলেছে, ঠিক তেমনি এর বিরুদ্ধেও সমালোচনা কম হয়নি। আর সেখানে-

           গ্ৰীসের অ্যারিস্টটল, জন স্টুয়ার্ট মিল,বেন্থাম, বার্কার,ল্যাক্সি প্রমুখ লেখকগণ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার স্বপক্ষে বলিষ্ঠ যুক্তি প্রদর্শন করেছেন। অপরদিকে-হেনরী মেইন,লেকী,ট্রিটসকে প্রমুখ চিন্তাবিদ গণতন্ত্রের তীব্র সমালোচনাও করেছেন। 

               •গণতন্ত্রের স্বপক্ষে যুক্তি•

•১) সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়ঃ গণতন্ত্রই একমাত্র শাসন ব্যবস্থা যার মাধ্যমে রাজনৈতিক সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। রাজনৈতিক সত্যের উপলব্ধির জন্য প্রয়োজন সকলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা ও ভাব বিনিময়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আলাপ-আলোচনা ও ভাব বিনিময়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এই জন্যই গণতন্ত্রকে যথার্থ আলাপ-আলোচনার উপর প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থা বলে অভিহিত করা হয়।

•২) স্বাধীনতা ও সাম্যের স্বীকৃতিঃ গণতন্ত্র সাম্য,মৈত্রী ও স্বাধীনতার আদর্শকে বাস্তবে রূপায়িত করে। ব্যক্তির বিকাশের জন্য স্বাধীন চিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার একান্ত প্রয়োজন। গণতন্ত্র তা স্বীকার করে বলে প্রত্যেক ব্যক্তি আপন যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে আত্মবিকাশের পথ খুঁজে পায়। আর সেখানে সকলের সমান সুযোগ ও অধিকার স্বীকৃত হয়।

•৩) সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও ব্যাপক কল্যাণ সম্ভবঃ সুশাসনের প্রধান সমস্যা হলো শাসক ও শাসিতের স্বার্থ। আর তার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে জনগণের ব্যাপক কল্যাণ সাধন করা সম্ভব। আসলে সাধারণ মানুষই সাধারণ মানুষের স্বার্থ উপলব্ধি করতে পারে। সুতরাং শাসিতকে শাসকের পদে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই সুশাসন সম্ভব। আর তখনই জনগণের সর্বাধিক কল্যাণ সাধন সম্ভব হয়।

•৪)আত্ম-শাসনের সুযোগঃ ব্যক্তিত্ব বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো আত্ম-শাসন। সুশাসনই সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, জনগণের মানসিক উন্নতিও অন্যতম উদ্দেশ্য। শাসনকার্যে ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণ সুশাসনের শিক্ষা লাভ করতে পারে, আত্ম বিকাশের সুযোগ লাভ করে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাই আত্মশাসনের সুযোগদানে ব্যক্তিকে দায়িত্বশীল করে তোলে।

•৫) দেশপ্রেম জাগ্ৰতঃ একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পারে। এই শাসন ব্যবস্থায় সকলের অংশগ্রহণের সমান সুবিধা স্বীকৃত হয় বলে জনগণ একে নিজস্ব শাসনব্যবস্থা বলেই গ্রহণ করতে পারে। আর সেখানে গণতন্ত্রকে সংরক্ষণ করার জন্য মানুষ ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত থাকে। গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে গভীর দেশপ্রেম সমাজ ও জাতির প্রগতির পথে উন্মুক্ত করে। 

     •√ ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL •

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...