Skip to main content

গণতান্ত্রিক (XI-2nd.Sem) শাসনব্যবস্থাল বিপক্ষে যুক্তি।

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপক্ষে যুক্তি দেখাও।(BA,1st.Sem./XI, Second Semester)


                 • আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, গোটা পৃথিবীতে গণতন্ত্রের স্বপক্ষে বলিষ্ঠ প্রচার ও সমর্থন থাকলেও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অর্থাৎ বিপক্ষে বেশ জোরালো যুক্তি আছে। আর সেখানে দেখা যায় অক্ষম ও অযোগ্যের শাসন ব্যবস্থা এবং এই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিতান্তই অস্থায়ী ক্ষণভঙ্গুর। আর সেখানে আমরা দেখি-

•√ ১) অক্ষম অযোগ্যের শাসন ব্যবস্থাঃ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সাফল্য নির্ভর করে শাসকগণের দক্ষতা, শিক্ষা ও বিচার বিবেচনার ওপর। গণতন্ত্রে শিক্ষা ও গুণগত যোগ্যতার বিশেষ সমাদর নেই ও গুণগত যোগ্যতা অপেক্ষা সংখ্যার উপর প্রাধান্য আরোপ করা হয়। অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত ও রাজনৈতিক চেতনহীন বলেই অজ্ঞতা,অশিক্ষা অযোগ্যতাই এই শাসনব্যবস্থায় প্রতিফলিত হয়।

•২) নিম্নস্তরের নেতৃত্বঃ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় নেতৃত্বের যোগ্যতাকে বিশেষ সমালোচনা করা হয়েছে। এরূপ শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব শিক্ষা, ধর্ম,কলা প্রভৃতি অতীত দিনের হতে বিশেষ নিম্নমানের এবং নিম্নমনের। আর এখানে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি স্বীকৃত হওয়ায় অযোগ্য, অজ্ঞ ব্যক্তির নেতৃত্ব লাভের সুযোগ ঘটে। ফলে তাদের মধ্যে দক্ষতা ও জ্ঞানের অভাবে গণতন্ত্র অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। 

•৩) স্বাধীনতার প্রতিবন্ধকতাঃ গণতন্ত্র হলো সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনব্যবস্থা। আর সেখানে সমাজের অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞ ও অশিক্ষিত বলে স্বাধীনতার প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারে না। গতানুগতিকতার বাইরে সকল কাজ ও মতামতকে অশিক্ষিত জনগণ সন্দেহ ও অবিশ্বাসের চোখে দেখে বলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সুতরাং গণতন্ত্রে ব্যক্তিত্বের যথার্থ বিকাশ ও স্বাধীনতার উপলব্ধি অপেক্ষা তাদের প্রতিবন্ধকতাই অধিক পরিলক্ষিত হয়।

•৪) শিল্প,সাহিত্য,বিজ্ঞানের পরিপন্থীঃ গণতন্ত্র শিল্প, সাহিত্য,চারুকলার,বিজ্ঞান প্রভৃতি সুকুমার বৃত্তিগুলির পরিপন্থী। সাধারণ অজ্ঞ,অশিক্ষিত মানুষ শিল্প-সাহিত্য,চারুকলা বা বিজ্ঞানের যথার্থ গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সম্পূর্ণ অক্ষম। সুতরাং শিল্প,সাহিত্য বা বিজ্ঞানের বিকাশে তারা সচেষ্ট হন না।

•৫) আমলাতন্ত্রের প্রাধান্যঃ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আমলাগণের প্রাধান্য বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ থাকে। যার ফলে এখানে প্রকৃত জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি উপেক্ষিত হয়। আর এখানে প্রশাসনিক কাজে স্থায়ী কর্মচারীরা আমলাগণের ওপর নির্ভর করে। ফলে সকল পরিকল্পনাই বাস্তবে কার্যকর করতে অযথা সময় নষ্ট হয় কিংবা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়না।

•৬) জাতীয় সংকটে উপযুক্ত নয়ঃ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বহুজনের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিক আলাপ আলোচনা এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির জন্য দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। জাতীয় সংকট বা জরুরী অবস্থার সময়ে এই শ্লথগতি পদ্ধতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL ।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...