Skip to main content

চৈতন্যভাগবত(1st.Sem) গ্ৰন্থের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলোচনা করো।

চৈতন্যভাগবত গ্রন্থের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলোচনা করো। (West Bengal State University Bengali first semester Mejor)

           •আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, বৃন্দাবন দাস ধর্মীয় প্রচারমূলক কাব্য রচনায় প্রবৃত্ত হয়ে সমকালীন নবদ্বীপের অবৈষ্ণব সমাজের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।আর সেই কাব্য চিত্রে তাঁর ইতিহাস চেতনার সুন্দর পরিচয় পাওয়া যায়। চৈতন্যদেবের আবির্ভাবকালে সমগ্র দেশের রুচি কোন দিকে প্রবাহিত হয়েছিল, ধর্মকর্মের অবস্থা কেমন ছিল, তার একটি নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত চিত্র আমরা চৈতন্যভাগবত গ্রন্থে পাই। সমসাময়িক নবদ্বীপের জনসংখ্যা, নবদ্বীপবাসীর সম্পদ সমৃদ্ধি এবং শিক্ষা দীক্ষার বিষয়ে তিনি লিখেছেন-

              “নবদ্বীপ সম্পত্তি কে বর্ণিবারে পারে।                              এক গঙ্গাঘাটে লক্ষ লোক স্নান করে।।                            ত্রিবিধ বৈসে এক জাতি লক্ষ লক্ষ।                                সরস্বতী প্রসাদের সবাই মহাদক্ষ।।”

যেকোনো অল্পবয়সী বালক ও যে মহাপণ্ডিতের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা রাখতো, তার স্বীকৃতি জানিয়েছেন স্বয়ং বৃন্দাবন দাস। মনসা-চন্ডী-আদি অনার্য দেবদেবীগণ যে সমাজে যথাযোগ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন এবং চৈতন্যপূর্ব যুগেই যে এদের মহাত্ব্যসূচক বিভিন্ন মঙ্গলকাব্য রচিত হয়েছিল, এ সংবাদটি আমরা চৈতন্য-ভাগবত গ্রন্থ থেকেই জানার সুযোগ পেয়েছি। শুধু তাই নয়-

বৃন্দাবন দাসের কবি প্রতিভা অতি উচ্চশ্রেণীর না হলেও তাঁর রচনাপ্রবাহ যে স্বচ্ছন্দগতিতে অগ্রসর হয়েছে, তা অনস্বীকার্য। ড. সুকুমার সেন এর মতে-

        “কাব্যটির মধ্যে কবিত্ব ফলাইবার কিছুমাত্র।                      চেষ্টা দেখা যায় না,তথাপি চৈতন্যচরিত্রের                      অপরিসীম মাধুর্য কবির অন্তর হইতে                           স্বতঃ-উৎসারিত অজস্র ভক্তিরস চৈতন্য                        ভাগবতকে শ্রেষ্ঠ কাব্যের মর্যাদা দান                                 করিয়াছে।”

          আর সে কারণেই চৈতন্য ভাগবতের যে কোন স্থান পড়িলে ভক্ত কবির আবেগ পাঠকের মনে সঞ্চারিত হতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব হয় না। আসলে এরূপ human interest হিসাবে চৈতন্যভাগবত পুরাতন বাংলা সাহিত্যি একক এবং অদ্বিতীয়।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...