Skip to main content

চৈতন্য জীবনী(1st. Sem )গুলির মধ্যে কোনটি তুমি শ্রেষ্ঠ মনে করো? কারণ উল্লেখ করে গ্ৰন্থটির পরিচয় দাও।

চৈতন্য জীবনীগুলির মধ্যে কোনটিকে তুমি শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করো? কারণ উল্লেখ করে গ্রন্থটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও(West Bengal State University Bengali Mejor)

ভূমিকাঃ বৃন্দাবনদাস রচিত চৈতন্যভাগবতই সম্ভবত বাংলা ভাষায় রচিত চৈতন্য চরিতগ্রন্থ সমূহের মধ্যে প্রাচীনতম গ্রন্থ। তবে চৈতন্য ভাগবতের প্রথম নামকরণ করা হয়েছিল চৈতন্যমঙ্গল। অতঃপর বৃন্দাবনের মহন্তাদের অনুরোধ অথবা মা নারায়ণীর নির্দেশে ব্যক্তির জীবনসম্মত কিছু জনশ্রুতি ছাড়া প্রামাণিক তথ্য বিশেষ কিছু পাওয়া যায় না। আর সেই তথ্য হতে আমরা জানতে পারি-

    তার মাতার নাম নারায়নী এবং তিনি চৈতন্য-পার্ষদ শ্রীবাসের ভ্রাতুস্পুত্রী ছিলেন। তবে তাঁর পিতৃপরিচয় অজ্ঞাত, কিন্তু গুরু নিত্যানন্দ প্রভুর গুণকীর্তনে তিনি ছিলেন পঞ্চমুখ। চৈতন্য ভাগবতের উপাদান সংঘের মূল উৎস নিত্যানন্দ এবং চৈতন্যদেবের অপরাপর ভক্তগণ। আর এ তথ্য গ্রন্থকার প্রয়োজনীয় স্থলে সর্বত্র উল্লেখ করেছেন। আর সেই উল্লেখ থেকে জানা যায় যে-

রচনাকালঃ বৃন্দাবন দাসের চমৎকার বিশ্বেই নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় তবে তিনি সক্ষোপে স্বীকার করেছেন যে-

    হইল পাপিষ্ঠ জন্ম নহিল তখনে।হইয়াও বঞ্চিত সে সুখ দরসনে।।

এই তথ্য থেকে অনুমান করা হয় যে, চৈতন্যদেবের জীবৎকালেই কবি জন্মগ্রহণ করলেও হয়তো মহাপ্রভুর দর্শন থেকে তিনি বঞ্চিত ছিলেন। তিনি নিত্যানন্দ প্রভুর সাক্ষাৎ এবং উপদেশও লাভ করেছিলেন। আর এসব বিচারে বৃন্দাবন দাস ১৫১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং নিত্যানন্দ প্রভুর পুত্র বীরচন্দ্রের জন্মের পূর্বেই অর্থাৎ পুরস্কার ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই গ্রন্থ রচনা সমাপ্ত করেছিলেন এই অনুমান অসঙ্গত নয়। তবে-

তবে চৈতন্যদেবের জীবন কাহিনী বিষয়ে বৃন্দাবনদাস যেসব ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন তাদের প্রামাণিকতায় সন্দেহের কোনো কারণ নেই। কারণ কবির স্ব-কৃত ব্যাখ্যার সাথে অপরের মতের গড়মিল হওয়া অসম্ভব নয়। আর এই দায়িত্ব কবির নয়।

চৈতন্যভাগবত তিন খন্ডে বিভক্ত এক সুবৃহৎ গ্রন্থ। যেখানে এই গ্ৰন্থের আদি খন্ডে ১৫ টি অধ্যায়-এতে সমসাময়িক যুগের পরিচয় এবং চৈতন্যদেবের জন্মগ্রহণ থেকে গয়া গমন প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। আর মধ্যখন্ডে ২৭ টি অধ্যায়-এতে প্রধানত চৈতন্যদেবের সন্ন্যাসগ্রহণই বিবৃত হয়েছে। অন্ত খন্ডের দশটি অধ্যায়ে নীলাচলে মহাপ্রভুর গুণ্ডিচাযাত্রা কাহিনী পর্যন্ত স্থান পেয়েছে। তবে-

    মহাপ্রভুর শেষ জীবনের কাহিনী অনুপস্থিত থাকায় গ্রন্থটি যে অসম্পূর্ণ অবস্থার সমাপ্ত হয়েছে, তাতে সন্দেহের কোন কারণ নেই। এই অসম্পূর্ণতার কারণ সম্বন্ধে কেউ খুব মনে করেন যে বৃন্দাবন দাস বৃদ্ধ বয়সে কাব্য রচনা আরম্ভ করেছিলেন এবং আকস্মিক মৃত্যুহেতু গ্রন্থ রচনা শেষ করে যেতে পারেননি। কিন্তু বৃন্দাবন দাসের প্রায় সমকালীন কবি কিছুদাস কবিরাজের উক্তি থেকে ভিন্ন কারণ অনুমিত হয়। আর সেখানে কৃষ্ণদাস কবিরাজ বলেন-

         নিত্যানন্দ লীলা বর্ণনে হইল আবেশ।                           

          চৈতন্যর শেষ লীলা রহিল অবশেষ।।

নিত্যানন্দ শিষ্য বৃন্দাবনদাস যে গুরুর গুণাখ্যাপনে অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন, এ সত্য অনস্বীকার্য। তাই কৃষ্ণদাসের অনুমান সত্য হওয়ায় সম্ভব।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...