Skip to main content

অলৌকিক১ম সেমি) সন্নিকর্ষ কয় প্রকার ও কি কি আলোচনা করো।

অলৌকিক প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বিষয়ের অলৌকিক তথা পরােক্ষ সন্নিকর্ষ সম্পন্ন হয় , যেমন — ঘট প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে চক্ষু নামক ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে ঘটত্ব জাতির প্রত্যক্ষ ।

             অলৌকিক সন্নিকর্ষ হল তিন প্রকার— 

১) সামান্য লক্ষণ সন্নিকর্ষ  ২)  জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষ                        ৩) যােগজ লক্ষণ সন্নিকর্ষ । 

১)সামান্য লক্ষণ সন্নিকর্ষঃ যে প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে বিষয়ের সামান্য ধর্ম তথা জাতিধর্ম সন্নিকর্ষরূপে কাজ করে , তাকেই বলা হয় সামান্য লক্ষণ সন্নিকর্ষ । অর্থাৎ , সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে সামান্য জাতি বা সাধারণ ধর্মের সন্নিকর্ষ হয় । এ ক্ষেত্রে সামান্য জাতি বা সাধারণ ধর্মকে কখনােই সরাসরিভাবে প্রত্যক্ষ করা যায় না । সেকারণেই এই ধরনের সন্নিকর্ষ কখনােই লৌকিক বা সরাসরিভাবে সম্পন্ন হতে পারে না । এই ধরনের সন্নিকর্ষ তাই অলৌকিক তথা পরােক্ষভাবেই সম্পন্ন হয় । সে কারণেই এই সামান্য লক্ষণ সন্নিকর্ষকে অলৌকিক সন্নিকর্ষ রুপেও অভিহিত করা হয় । ঘট প্রত্যক্ষর ক্ষেত্রে যখন ঘটত্ব জাতি বা সামান্য ধর্মের প্রত্যক্ষ হয়, তখন এই প্রকার সন্নিকর্ষই সংঘটিত হয় ।

২) জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষঃ পূর্বজ্ঞানের ভিত্তিতে কোনো বিষয়কে প্রত্যক্ষ করার ক্ষেত্রে সেই বিষয়ের সঙ্গে ইন্দ্রিয়ের যে অলৌকি সন্নিকর্ষ সম্পন্ন হয়, তাকেই বলা হয় জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষ । এ ক্ষেত্রে বিষয়ের পূর্বজ্ঞানের স্মৃতিই সন্নিকর্ষের কাজ করে । বিষয়টির জ্ঞান আগে থেকেই আমাদের থাকে বলে , এই ধরনের সন্নিকর্ষকে জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষ বলা হয় । এই ধরনের সন্নিকর্ষ সরাসরিভাবে সম্পন্ন নয় ,তা অলৌকিকভাবেই সম্পন্ন । তাই এই জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষকে অলৌকি সন্নিকর্ষ বলা হয় । উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায় যে , নাসিকার দ্বারাই আমরা চন্দনকাঠের সুরভি লৌকিক সন্নিকর্ষের মাধ্যমে পাই এবং বলি যে চন্দন সুরভিযুক্ত । চন্দনের সুরভি তাই নাসিকা নামক ইন্দ্রিয়ের নিজস্ব  বিষয়রূপে গণ্য । কিন্তু চন্দনকাঠ দেখেই তাকে চন্দনকাঠ হিসেবে চিনে নিয়ে যখন আমরা পূর্বজ্ঞানের ভিত্তিতে বলি যে ,চন্দন সুরভিযুক্ত, তখন সেক্ষেত্রে যে প্রকার সন্নিকর্ষ হয় তাকেই বলা হয় জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষ । এ ক্ষেত্রে চক্ষুর সঙ্গে চন্দনের সুরভির সরাসরি বা লৌকিক সন্নিকর্ষ না হয়ে ,অলৌকিকভাবেই সম্পন্ন হয় । সেজন্যই জ্ঞান লক্ষণ সন্নিকর্ষকে অলৌকিক সন্নিকর্ষরূপে গণ্য করা হয়। 

৩) যােগজ লক্ষণ সন্নিকর্ষঃ যােগসাধনার দ্বারা সিদ্ধপুরুষগন অলৌকিক শক্তির অধিকারী হন ৷ এর ফলে তারা অতীত , বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ — এই তিনটি কালের সমস্ত বস্তুই প্রত্যক্ষ করতে পারেন । এই ধরনের প্রত্যক্ষ সম্ভব হয় যােগজ সন্নিকর্ষের দ্বারা । যােগজ সন্নিকর্ষের ক্ষেত্রে অতীন্দ্রিয় বিষয়ের প্রত্যক্ষ হয় । এই অতীন্দ্রিয় বিষয়কে কখনােই আমাদের ইন্দ্রিয় দ্বারা সরাসরিভাবে প্রত্যক্ষ করা যায় না । এ ক্ষেত্রে যে প্রকার সন্নিকর্ষ হয় , তা অলৌকিকভাবে সম্পন্ন । সে কারণেই যােগজ প্রত্যক্ষকে অলৌকিক সন্নিকরূপে উল্লেখ করা হয় । যােগীরা অলৌকিক বিষয়সমূহ প্রত্যক্ষ করতে পারেন । সে ক্ষেত্রে যােগীদের সঙ্গে অলৌকিক বিষয়সমূহের সন্নিকর্ষ অলৌকিকরূপেই গণ্য ।







Share This Facebook    

দর্শন

একাদশ শ্রেণী দর্শন সাজেশন

দর্শন

রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী দর্শনের মূল উৎসগুলি উল্লেখ করাে ও বিশ্লেষণ করাে ।

দর্শন

অভিজ্ঞতাবাদ কাকে বলে ? জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদের মূল বক্তব্যগুলি আলােচনা করাে ।

Next

ন্যায়মতে ব্যাপ্তি কাকে বলে ? ব্যাপ্তি জ্ঞানের উপায়গুলি কী কি ?

Previous

সরল বস্তুবাদের মূল বক্তব্যগুলি কী কী ? লক কীভাবে সরল বস্তুবাদের সমালােচনা করে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন ?

Post Comment

blogger

disqus

facebook

কোন মন্তব্য নেই





সূচিপত্র

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...