•প্রশ্নঃ লালন শাহ ফকিরের গান কবিতায় বাউল সাধনার মানবতত্ত্বের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের বাউল গানের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা হলেন লালন শাহ্ ফকির। আর সেই কবিতায় যেভাবে বাউল সাধনার মানবতত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে তাহলো-
লালন শাহ ফকিরের গান কবিতায় মানবতার জয়গান করা হয়েছে। আসলে বাউল সম্প্রদায়ের সাধকরা বিশ্বাস করতেন যে, এ মানবদেহের মধ্যে সব তত্ত্ব ও সত্য লুকিয়ে আছে। তাই কবি মানুষ ভজনার কথা এখানে বারেবারে বলেছেন। কারণ মানুষের মনের মধ্যে ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়া যায়। তাই কবি সর্বমানবতার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। শুধু তাই নয়-
আলোচ্য কবিতাটিতে বেশ কয়েকবার সোনার মানুষের কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেন যে মানতত্ত্ব সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান না থাকলে বা মানুষকে উপেক্ষা করলে মানবতার মূল হারাতে হবে। আর এই মানবসত্য গুরুর কৃপা পেলেই তা জানা সম্ভব। আসলে মানবজীবন 'সোনার মানুষ' ছাড়া অপরিপূর্ণ। আর এটাই আলোচ্য কবিতায় বাউল সাধনার মানবতত্ত্ব।
•প্রশ্নঃ"মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি", বক্তা কে? সোনার মানুষ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? বিষয়টি বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃআলোচ্য উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হলেন- বাংলা সাহিত্যের বাউল গানের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা লালন শাহ ফকির। আর এখানে সোনার মানুষ বলতে বোঝানো হয়েছে বাউল সম্প্রদায়ের সাধনার 'মনের মানুষ' অর্থাৎ ঈশ্বরকে।
আলোচ্য অংশটির মধ্য দিয়ে কবি লালন সহ ফকির মানুষকে ভজনা করতে বলেছেন। কারণ সর্ব মানবতাবাদের সাথেই বাউলদের আত্মতত্ত্বের ধারণা জুড়ে আছে। আর সেখানে শুদ্ধ মানুষ আছে মনের ভিতরে। তাই কবি মানুষের ভজনা করলেই সোনার মানুষ হওয়া বা পাওয়া যায় একথা বারে বারে বলেছেন। আর বাউল সম্প্রদায়ের সাধকদের এই মনের মানুষই হলো মানবতত্ত্বের প্রধান বিষয়।
•প্রশ্নঃ লালন শাহ ফকিরের গান কবিতায় কবি যে দেহতত্ত্বের কথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃবাউল সাধকরা মানুষের মনের মধ্যেই ঈশ্বরের সন্ধান করেছেন। তাই আলোচ্য কবিতাটিতে সর্বমানবতার উপর অধিক কবি গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ এখানে কবি নিজেই বলেছেন-
'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি'।
শুধু তাই নয়-
বাউল সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বিশেষ অংশ জুড়ে আছে আত্মতত্ত্ব। তাই আলোচ্য অংশে দেখা যায় যে, 'মনের মানুষ' এর সন্ধান মনের ভেতরেই পাওয়া যায়। অর্থাৎ মনের মানুষ আছে নিজের মনের মধ্যেই।আসলে-
আলোচ্য কবিতাটিতে বাউল সাধনার অসংখ্য পদ বা অনুষঙ্গ আছে। আর সেখানে আমরা দেখতে পাই দ্বি-দলের-মৃণাল, আলোক লতা প্রভৃতি পদ বা অনুসঙ্গ। আর ঐ সকল অনুসঙ্গের মধ্যে দিয়ে কবি আলোচ্য কবিতাটির মধ্যে দেহতত্ত্বের কথা তুলে ধরেছেন।
•প্রশ্নঃ "দেখ না যেমন আলোক লতা"-আলোচ্য অংশটির বক্তা কে? আলোক লতা বলতে এখানে কি বলা হয়েছে? তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃআলোচ্য অংশটির বক্তা হলেন কবি লালন শাহ ফকির। আর এখানে 'আলোক লতা' বলতে বোঝানো হয়েছে স্বর্ণলতাকে।
আলোচ্য অংশটি বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই যে, স্বর্ণলতা আসলে একটি পরজীবী উদ্ভিদ। যে উদ্ভিদটি বেড়ে উঠে অন্য কোন গাছকে আশ্রয় করে। ঠিক তেমনিই লালন ফকিরের মতানুসারে বাউল সম্প্রদায়ের সাধকরা এই মানব দেহকে কেন্দ্র করেই স্বর্ণলতার মতো মনের মানুষ তথা সোনার মানুষকে নিরন্তর খুঁজে চলেছেন। আর সেখানে দেহ সাধনা হল-বাউল সাধনা। আর এই তত্ত্বে বাউল সম্প্রদায় ছিলেন প্রবল বিশ্বাসী। তবে এই ঈশ্বরকে বুঝতে বা জানতে হলে গুরুর প্রয়োজন আছে।কারণ গুরুর দেখানো পথেই মনের মানুষ র কাছে আসা যায়। আর এই প্রসঙ্গে কবি 'আলোক লতার' কথা বলেছেন।
Comments
Post a Comment