Skip to main content

আজব(XI,2nd Semester)শহর কলকেতা'প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক জীবন অভিজ্ঞতা আলোচনা করো।

'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধের ভাববস্তু নিজের ভাষায় লেখো বা প্রাবন্ধিকের অভিজ্ঞতা আলোচনা করো। (পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ একাদশ শ্রেণি বাংলা দ্বিতীয়)।

         আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, সৈয়দ মুজতবা আলী র অন্যতম প্রবন্ধ 'আজব শহর কলকেতা'। আর সেই প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক তাঁর জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। আর শুরুতেই সেখানে বলা হয়েছে যে, কলকেতা শহর- যে শহরকে অনেকেই আজব শহর বলে চিনতে বা জানতে অথবা বলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।আর এই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে প্রাবন্ধিক দেখেন-

             এক বৃষ্টিমুখর দিন। আর সেদিন প্রাবন্ধিকের হাতে ছাতা ছিল না,ছিল না তাঁর পকেটে খুব বেশি পয়সাও।কলকাতা শহর। আর সেই শহরে রাস্তার ধারে প্রাবন্ধিক দেখতে পেলেন একটি বইয়ের দোকান(ফ্রেন্স বুক সপ)। অবশ্যই সেটি একটি ফরাসি বইয়ের দোকান। দোকানটি দেখার পর প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছিল যে, এই শহরে ফরাসি বই বিক্রি করে কেউ যে রোজগার করতে পারে এ অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল না। কিন্তু অতি আগ্রহের সাথে সেই বইয়ের দোকানে তিনি ঢুকে দেখলেন যে, সেখানে শুধুমাত্র ফরাসি বইয়ের সম্ভার। তবে-

          প্রাবন্ধিকের ধারণা আজকাল ভালো বই বা উপন্যাস খুব বেশি বিক্রি হতে দেখা যায় না। কারণ এই সকল বই পাঠকরা আজকাল খুব বেশি পছন্দ করেন না। তাই প্রকাশকরা বাধ্য হয়েই একটু ভিন্ন ধর্মী, অর্থাৎ বলা যেতে পারে খারাপ উপন্যাস ছাপাতে তারা অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হন। তবে তিনি সেই বইয়ের দোকানে দেখলেন যে,সেখানে কেবলমাত্র ফরাসি বই বিক্রি হচ্ছে। এখানে আরো দেখা গেল যে, লেখকের কথা বলার মধ্যে ফরাসি শব্দের ব্যবহার । শুধু তাই নয়, এই বইয়ের দোকানে প্রাবন্ধিক মেমসাহসের সাথে ফরাসি ভাষায় কথা বলা শুরু করেন। আর সেখানে আমরা দেখতে পাই-

      মেমসাহেব প্রাবন্ধিকের এই ফরাসি ভাষার ব্যবহার দেখে তাঁকে বাহবা দিলেন। আর মেমসাহেবের এরূপ প্রশংসায় ফরাসি দেশের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ বহুগুণ বেড়ে গেল। এখানে সেই মেমসাহেব প্রাবন্ধিককে অবগত করেন যে, এই দোকানটি আসলে তার এক বান্ধবীর। আর বান্ধবীর অনুপস্থিতির জন্য তিনি এই দোকানে সেদেশের ভাষা ও সাহিত্য প্রচার করার জন্য এ কাজ করছেন। তবে একজন ফরাসি মানুষ ফ্রান্স থেকে বিপুল বইয়ের ভান্ডার নিয়ে কলকাতায় বইয়ের দোকান করেছেন এই বিষয়টি তাঁর কাছে বড়ই আজব মনে হয়েছে। শুধু তাই নয়,এই বিষয়টি কলকাতা শহরের আজব চরিত্রকে স্পষ্ট করে দেয়।

           প্রাবন্ধিক দেখলেন সেই দোকানে অসংখ্য ফরাসি বই। যে বইগুলো কিছুটা সাজানো, কিছুটা অগোছালো, কিছুটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যত্রতত্রে। যা দেখে প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছে-এই বই কে কিনবে? নিশ্চয়ই দোকানদার পথ ভুলে কলকাতার বুকে দোকান সাজিয়ে বসেছেন। তবে এখানে প্রাবন্ধিক আরও দেখলেন যে, এক বাঙালি ফরাসি ভাষায় কমার্শিয়াল আর্টের বই খুঁজছে। যা দেখে তাঁর মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। তবে এই ঘটনার পর তিনি হিটলারের চরিত্র বিষয়ক একটি বই পেয়ে যান। তবে লেখকের ইচ্ছা ছিল এই বইটির সাথে পাঠকদের পরিচয় করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কাকের ডাকে রাত ভোর হয়ে যাওয়ার কারণে তিনি সেই কাজটি করতে পারলেন না। আর এখানে প্রাবন্ধিক বললেন-

    "কলম ফুরিয়ে গিয়েছে, আরেক দিন হবে।"

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...