Skip to main content

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন(1st Sem .)কাব্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বা তাৎপর্য লেখো।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বা তাৎপর্য লেখো(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম সেমিস্টার বাংলা মেজর ও মাইনর সিলেবাস)

•ভূমিকাঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন সম্পর্কে ভাষাতাত্ত্বিকেরা মন্তব্য করেছেন যে, এটি একটি মধ্যযুগের বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন। তবে এই কাব্য যখন রচিত হয়েছিল তখনই এই কাব্যের মধ্যে নিহিত হয়ে যায় ঐতিহাসিক তাৎপর্যের বীজ। আর তার কারণ -তুর্কি বিজয়ের পর প্রায় দুশো বছর ধরে বাংলা সাহিত্যে চলছিল বন্ধ্যা যুগ। সেই বন্ধ্যা যুগে বন্ধ্যাত্বকে সরিয়ে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আবির্ভাব নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার নিরিখে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব হলো-

•প্রথমতঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি আদি-মধ্যযুগের প্রথম সাহিত্য নিদর্শন। আর প্রথম সাহিত্য নিদর্শন হিসেবে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ভাষাতাত্ত্বিক গুরুত্বকে কখনই অস্বীকার করা যায় না। এছাড়াও-

       চর্যাপদের প্রায় ২০০ বছর পরে বাংলা ভাষার মৌলিক লক্ষণ, ব্যাকরণের মুখ্য বৈশিষ্ট্য এবং ভাষাগত রূপের একটি সার্থক দলিল শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য।

•দ্বিতীয়তঃ বাংলা ভাষায় লেখা রাধা কৃষ্ণ প্রণয় বিষয়ক প্রথম আখ্যান কাব্য শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য।

•তৃতীয়তঃ লৌকিক প্রেমের যে মহিমা শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে বর্ণিত হয়েছে তা পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে বিশেষ করে মঙ্গলকাব্য, লোকসাহিত্য এবং আরাকান সাহিত্যে প্রভাব ফেলেছে।

•চতুর্থতঃ লৌকিক ও পৌরাণিক উপাদানের প্রয়োগে, গীতিরস ও নাটকীয়তার সংমিশ্রণে,অভিনব চরিত্র চিত্রণ, নিসর্গ প্রকৃতিতে প্রেমের পটভূমিকা নির্মাণে পন্ডিত কবি বড়ু চন্ডীদাসের কৃতিত্ব ঐতিহাসিক তাৎপর্যমণ্ডিত।

•পঞ্চমতঃ তুর্কি বিজয়ের পর বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির একটি বিচ্ছিন্নরূপ ধরা পড়েছে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে।

•ষষ্ঠতঃ শ্রীকীর্তন কাব্য আবিষ্কৃত হওয়ার পর চন্ডিদাস সমস্যার সৃষ্টি হয়। আর সেই সমস্যা এখনো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে কোন সমাধান হয়নি।

•সপ্তমতঃ বাংলা সাহিত্যে উক্তি প্রত্যুক্তিমূলক প্রথম নাট্যগীতির নিদর্শন হলো শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য।

•অষ্টমতঃ মধ্যযুগের বৈষ্ণব সাহিত্যের বীজ নিহিত ছিল শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...