Skip to main content

যুক্তির (3rd.Sem) বৈধতা নির্ণয়

১) সে নিশ্চয়ই কাপুরুষ, কেননা সে অসৎ এবং সব কাপুরুষই অসৎ।

•• যুক্তিটির তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার-

              A-সকল কাপুরুষ হয় অসৎ।                                        A-সে হয় অসৎ।                                              সুতরাং A-সে হয় কাপুরুষ।

•• বিচার ও ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য যুক্তিটি অবৈধ। যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের একটি অশুদ্ধ মূর্তি। কারণ নিরপেক্ষ ন্যায়ের দ্বিতীয় নিয়মে বলা হয় যে, দুটি আশ্রয় বাক্যে হেতুপদকে অন্ততপক্ষে একবার ব্যাপ্য হতে হবে। কিন্তু এখানে প্রধান ও অপ্রধান আশ্রয় বাক্য উভয়ই A বচন হওয়ায় এবং হেতুপদ বিধেয় স্থানে (অসৎ) থাকায় একবারও ব্যাপ্য হওয়ার সুযোগ পায়নি, তাই যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট।

২) তুমি ডাক্তার নও, তাই তুমি এ পদের প্রার্থী হতে পারো না।

•• যুক্তিটির তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকারঃ

              A-সকল ডাক্তার হয় এ পদের প্রার্থী।                              E-তুমি নও ডাক্তার                                            সুতরাং E-তুমি নও এ পদের প্রার্থী।

•• বিচার ও ব্যাখ্যাঃ যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের একটি অশুদ্ধ মূর্তি এবং অবৈধ যুক্তি। কারণ নিরপেক্ষ ন্যায়ের চতুর্থ নিয়মে বলা হয়েছে যে, যে পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তের ব্যাপ্য হতে পারে না। কিন্তু এখানে প্রধান আশ্রয় বাক্যের A বচনের বিধেয় স্থানে সাধ্য পদটি( এ পদে প্রার্থী) থাকার জন্য ব্যাপ্য হয়নি। অথচ ওই সাধ্য পদটি সিদ্ধান্তে E বচনের বিধেয় স্থানে থাকার জন্য ব্যাপ্য হয়েছে। তাই যুক্তিটি অবৈধ সাধ্য দোষে দুষ্ট।


৩) বোলপুর বর্ধমানের কাছে, বর্ধমান কলকাতার কাছে সুতরাং বোলপুর কলকাতার কাছে। 

•• যুক্তটির তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকারঃ

                A-বর্ধমান হয় কলকাতার কাছে।                                   A-বোলপুর হয় বর্ধমানের কাছে।                  সুতরাং    A-বোলপুর হয় কলকাতার কাছে।

•• বিচার ও ব্যাখ্যাঃ যুক্তিটি অবৈধ। কারণ নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রথম নিয়মে বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক বৈধ-নিরপেক্ষ ন্যায়ের তিনটি পদ থাকবে। তার কমনও এবং বেশিও নয়। কিন্তু এখানে চারটি পদ আছে। আর সেই চারটি পদ হলো-১- বর্তমান ২-বোলপুর ৩-বর্ধমানের কাছে ৪-কলকাতার কাছে। তাই চুক্তিটি চারিপদ ঘটিত দোষে দুষ্ট।

৪) মানুষ পূর্ণ নয় এবং মানুষ ঈশ্বর নয়। কাজেই ঈশ্বর পূর্ণ নয়।

•• যুক্তির তর্ক বিজ্ঞানসম্মত আকারঃ

                     E-কোন মানুষ নয় পূর্ণ।                                                 E-মানুষ নয় ঈশ্বর।                                            সুতরাং E-ঈশ্বর নয় পূর্ণ।

•• ব্যাখ্যা ও বিচারঃ আলোচ্য যুক্তিটি অবৈধ এবং তৃতীয় সংস্থানের একটি অশুদ্ধ মূর্তি। কারণ নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম হয়েছে যে,দুটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে তার থেকে কোন যথার্থ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় না। আর এখানে প্রধান ও অপ্রধান আশ্রয়বাক্য উভয়ই নঞর্থক। তাই যুক্তিটি দুটি নঞর্থক আশ্রয়বাক্য জনিত দোষে দুষ্ট।

৫) বিবেকানন্দ একজন বড় ধর্মসংস্কারক এবং তিনি অবিবাহিত। কাজেই সমস্ত অবিবাহিত পুরুষই ধর্মসংস্কারক।

•• যুক্তিটির তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকারঃ

              A-বিবেকানন্দ হন ধর্ম সংস্কারক।                                  A-বিবেকানন্দ হন অবিবাহিত পুরুষ।                  সুতরাং A-সকল অবিবাহিত পুরুষ হয় ধর্ম সংস্কারক।

•• ব্যাখ্যা ও বিচারঃ আলোচ্য যুক্তিটি অবৈধ এবং তৃতীয় সংস্থানের একটি অশুদ্ধ মূর্তি। কারণ নিরপেক্ষ ন্যায়ের চতুর্থ নিয়ে বলা হয়েছে যে, যে পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারে না। কিন্তু এখানে প্রধান আশ্রয় বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে পক্ষপদটি (অবিবাহিত পুরুষ) থাকার জন্য ব্যাপ্য হয়নি। অথচ ঐ পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকার জন্য ব্যাপ্য হয়েছে। তাই যুক্তিটি অবৈধ পক্ষ দোষে দুষ্ট।


৬) এই সংবাদটি এত ভালো যে সত্য হতে পারে না। 

•• যুক্তির তর্ক বিজ্ঞানসম্মত আকারঃ

             E-কোন অতিরিক্ত ভালো সংবাদ নয় সত্য।                    A-এই সংবাদটি হয় অতিরিক্ত ভালো সংবাদ।     সুতরাং A- এই সংবাদটির নয় সত্য।

•• ব্যখ্যা ও বিচারঃ আলোচ্য যুক্তিটি বৈধ এবং প্রথম সংস্থানের একটি শুদ্ধ মূর্তি। যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের অবস্থিত বৈধ ন‌্যায়। কারণ যুক্তিটিতে ন্যায়ের প্রতিটি নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। তাই যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি এবং নাম হলো-CELARENT (EAE)

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...