Skip to main content

মনস্তাত্ত্বিক(3rd.Sem) উপন্যাস নির্মাণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো

মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস নির্মাণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো।


       আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে এক উজ্জ্বলতর জ্যোতিষ্ক। আর সেই জ্যোতিষ্কের আলো বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি দুয়ারে পৌঁছে গেছে। এই দৃষ্টিতে আমরা বলতে পারি, ভারতীয় বাংলা সাহিত্য রবীন্দ্রনাথের অবদানে সমৃদ্ধময় হয়ে উঠেছে। কারণ বাংলা সাহিত্যের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অবাধ বিচরণ করেননি।বলা যায় সকল ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ নিজ গুনের আপন মাধুরী নিয়ে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেছেন। তাই তিনি বাঙালির,ভারতীয় এবং গোটা বিশ্বের কাছে আজও উজ্জল জ্যোতিষ্ক। শুধুমাত্র জ্যেতিষ্ক নন, তিনি আমাদের কাছে গর্বের এক অমূল্য সম্পদ। আসলে-

          রবীন্দ্রনাথের অবদান কেবলমাত্র একটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকেনি, তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে সকল ক্ষেত্রে নিজেকে পারিপার্শ্বিক কোনো অবলম্বন ছাড়াই নিজেকে নিজে তুলে ধরেছেন। শুধুমাত্র সাহিত্যক্ষেত্রে নয়, শিক্ষা, দর্শনে, সমাজ সংস্কার আন্দোলনে, স্বাধীনতা সংগ্রামের, মানবতাবাদ প্রকাশে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সাহিত্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটাতে, সংগীত জগতে, শিল্পকলা প্রদর্শনে প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সাথে আজও স্মরণীয়। তাই তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম নবারুণ। আসলে তিনি মহাসাগর, আর সেই সাগরের চোরাবালির অতল তলে সমসাময়িক যুগে অনেকেই ডুবে গেছেন। কারণ তার কাব্যে ছিল প্রতিভার মায়াজালের প্রবল শক্তি, ছিল মোহিনী মায়া। আসলে--

           রবীন্দ্রনাথ একজন শ্রেষ্ঠ কবি, আর কবি হয়েও তিনি কথাসাহিত্যের জগতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। যেখানে তিনি নারীর অন্তরের কথা, বিধবা নারীর অন্তরের দ্বন্দ্ব, মনস্তাত্ত্বিক দিক তিনি তুলে ধরেছেন একাধিক উপন্যাসে। যা বাংলা উপন্যাসে বা বাংলা সাহিত্যে অভিনব। আসলে নারী জীবনের সার্থকতা কোথায় এই ধরনের জটিল জিজ্ঞাসা তাঁর মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসগুলিতে প্রবলভাবে স্থান পেয়েছে। তা ছাড়াও তার সমসাময়িককালে উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি উপন্যাসগুলিতেও লক্ষ্য করা গেছে। লক্ষ্য করা গেছে রোমান্স কাব্যধর্মী, রোমান্টিক উপন্যাস গুলিতে নারীর মনস্তত্ত্ব। আসলে সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি এনেছিলেন এক বৈচিত্র্যময় জগৎ।যে জগতে আছে দার্শনিকতা,আছে অভিনব চিন্তার ইমারত।আর সেখানে-

       'চোখের বালি'',রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম বাংলা ভাষায় রচিত মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। আর এই উপন্যাসে তিনি চরিত্র চিত্রন, ঘটনা সংস্থাপনে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। যার ফলে উপন্যাসটিতে দাম্পত্য সমস্যার মনস্তাত্ত্বিক রূপ আমরা দেখতে পাই। আর সেই সাথে দেখতে পাই ফ্রয়োডীও মনস্তত্ত্বের ধারণা। তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে, রবীন্দ্রনাথের সাথে ফ্রয়েডের সাক্ষাৎও ঘটেছিল। তাই তিনি মনের বিভিন্ন স্তর সম্পর্কে সজাগ ও সচেতন ছিলেন। তবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, তিনি 'অচৈতন্য' নমক একটি প্রবন্ধে লিখেছেন-

    "আমরা যতখানি অচেতন ততখানি সচেতন নহি             নিশ্চয়ই। আমাদের শরীরের মধ্যে কোন যন্ত্র                  কিরূপে কাজ করিতেছে, তাহার কিছুই আমরা                জানি না। শরীরের সম্বন্ধে যা ঘটে, মনের সম্বন্ধেও            ঠিক তাই ঘটে।"

            তবে আমরা যা জানি না, সেটি আছে এই বিষয়টি অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেন না। আসলে মানুষের অন্তঃকরণে দুটি অংশ আছে। একটি অচেতন বৃহৎ গুপ্ত এবং নিশ্চেষ্ট, আরেকটি সচেতন সক্রিয় চঞ্চল পরিবর্তনশীল। যেখানে যে মানুষ যার গহন মনের গভীরে ঘটে চলা বিচিত্র জটিল ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সে নিজেই সচেতন নয় অথচ তার দ্বারাই তার প্রতিটি বাহ্য আচার আচরণ নিয়ন্ত্রিত। আর মনুষ্যত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেই বিষয়টি রবীন্দ্রনাথ মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসে বাস্তব এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন। তবে-

           আমাদের মনে হয়, রবীন্দ্র উপন্যাস সম্পর্কে প্রধান অভিযোগ অবশ্যই তাঁর ওই বাস্তবতা নিয়ে, তাই তার উপন্যাসে চিত্রিত নর নারীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। আসলে রবীন্দ্র উপন্যাসের অধিকাংশ চরিত্রই অসাধারণ। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে যারা ধূলো কাদায় মানুষ, যারা মাটিতে হেঁটে বেড়ায়,যারা হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খায়,তাদের উপস্থিতি রবীন্দ্র উপন্যাসে খুবই কম। তাঁর উপন্যাসে চরিত্ররা শুধুমাত্র শরীরীস্বত্তা নয়, ভাবসত্তাও। তাই বিনোদিনী, গোরা, ললিতা, দামিনী, নিখিলেশ, বিমলা, কুমুদিনী, লাবণ্য এদের চিন্তা চেতনা, আবেগ অনুভূতি, ব্যক্তিত্ব সাধারণ আটপৌরে বাঙালির সাথে মেলে না। তবে এখানে রবীন্দ্রনাথের অভিমত হলো-

    " ... যাকে সৃষ্টি বলি তার নিসংশয় প্রকাশই তার               অস্তিত্বের চরম কৈফিয়ৎ।.... যে-কোনো রূপ নিয়ে           যা স্পষ্ট করে চেতনাকে স্পষ্ট করে তাই বাস্তব।"

                'চোখের বালি' উপন্যাসটি শুধু রবীন্দ্র সাহিত্যে নয়, বাংলা উপন্যাস সাহিত্যেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে চোখের বালি রচনার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের প্রভাবকে স্বীকার করে নিলেও আমাদের বলতে কোন দ্বিধা নেই যে, এটি বাংলা উপন্যাসের জগতে নতুন পদক্ষেপ। উনিশ শতকে গল্প,উপন্যাস নির্মিতিতে কল্পিত সম্পর্কের ঘাত-প্রতিঘাতের প্রতি বেশি লক্ষ্য রাখা হতো। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ সেই চির কাহিনীর খোলস  ছিন্নভিন্ন করে চরিত্রের অন্তরের মানুষটিকে বাইরের আলো বাতাসে মুক্তি দিলেন। আর সেটি হল আধুনিকতা নবযুগের মুক্তির মহামন্ত্র, ব্যক্তি স্বতন্ত্রবাদ। আর সেখানে কলকাতার নাগরিক সমাজের অসুখী দাম্পত্য সম্পর্ক, যেটি ধনী শ্রেণীর মধ্যে চল ছিল। সেটি রবীন্দ্রনাথ খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। আর এখানে তিনি মনে করেন-

      "স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মানসিক সম্পর্কের সেতু                     বলিষ্ঠ না হলে শুধু আত্ম-বিচ্ছেদ ঘটে না মৃত্যু                 পর্যন্ত হতে পারে।"

              উনিশ শতকের বাবু কালচারের পুরবাসিনী নারীদের অশ্রুজলও রবীন্দ্রনাথের কাছে অজানা ছিল না। এমনকি মধ্যবিত্ত বাঙালিরাও স্বামী স্ত্রীর সহধর্মী, সহযোগী সম্পর্কের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে পারিনি। আর সেরূপ নষ্ট দাম্পত্যের জটিল কাহিনী,মানস বৃত্তান্তের কাহিনী রবীন্দ্রনাথ তুলে ধরেছেন চোখের বালি উপন্যাসে। তবে নিছক কাহিনী বর্ণনা নয়,এই ভ্রষ্ট দাম্পত্যের পিছনে সক্রিয় ছিল যে গভীর মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাভাবনা, চোখের বালি উপন্যাসে তা মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ করা হয়েছে।আর সে কারণেই চোখের বালি উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় অভিনবত্বের দাবিদার। যেখানে-

         মহেন্দ্র-আশার দাম্পত্য জীবনের সমস্যাই চোখের বালি উপন্যাসে মূল উপজীব্য বিষয়। যেখানে চিরাচরিত ঘটনা বিবরণের পরিবর্তে,চরিত্রের মনস্তত্ত্ব ও তাদের মানসিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া এই চোখের বালি উপন্যাসের মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। মহেন্দ্র,বিনোদিনী, আশলতা, বিহারী, রাজলক্ষী ও অন্নপূর্ণার চিত্তজগতের অন্দরমহলের খবর, তাদের কেন্দ্র করে আবর্তিত হওয়া বিভিন্ন ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কারের প্রয়াসই হলো চোখের বালি উপন্যাস। আর সেই উপন্যাসে সূচনা অংশে রবীন্দ্রনাথ জানালেন-                                               "সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্ধতি হচ্ছে ঘটনা                       পরম্পরার বিবরণ দেওয়া নয়,বিশ্লেষণ করে।                 তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো।                         সেই পদ্ধতি দেখা দিল চোখের বালিতে।"

               আমরা জানি 'চোখের বালি'র কাহিনী অতি সামান্য। আর সেই উপন্যাসের মধ্যে ব্যাপক নতুনত্ব আছে এ কথাও জোর দিয়ে বলা যায় না। তবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তির আগমনের ফলে দাম্পত্য সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি হয় সেই বিষয়টি এখানে অতি স্পষ্ট। আর সেখানে আমরা দেখতে পাই-রাজলক্ষ্মীর ইচ্ছা ছিল বাল্যসখি হরিমতির কন্যা বিনোদিনীর সাথে ছেলে মহেন্দ্রের বিবাহ সম্পর্ক স্থাপন করা। তবে মহেন্দ্র সেই বিয়েতে অসম্পতি দান করলে বিনোদিনীর অন্যত্রে বিবাহ হয়। আর বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই বিনোদিনীর জীবনে নেমে আসে বৈধব্য। অতঃপর রাজলক্ষ্মীর ইচ্ছায় বিনোদিনী তাদের বাড়িতে আসে। আর বিনোদিনীর আগমনে মহেন্দ্র-আশার দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরে। তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে, বিনোদিনীর মোহিনী মায়া মহেন্দ্রকে আকৃষ্ট করলেও বিনোদিনী তার হৃদয় সমর্পণ করেছিল মহেন্দ্র বন্ধু বিহারীকে। তবে একটা সময় এই বিহারীর সাথে আশালতার বিয়ে হওয়ার কথা হয়েছিল, কিন্তু মহেন্দ্রর জন্য তা সম্ভব হয়নি। তাই তার প্রতি বিহারীর মনে এক ধরনের দুর্বলতা ছিল। আসলে-

              মহেন্দ্র-বিনোদিনী-বিহারী-আশালতা এদের চতুর্মাত্রিক প্রণয়বৃত্তান্তই চোখের বালি উপন্যাসের মূল কাহিনী। তবে কাহিনী সামান্য হলেও চরিত্র তথা সম্পর্কের মানসলোক এখানে উন্মোচনে এই উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে নতুন পথের দিশা। আর সেখানে মহেন্দ্র আশালতার নষ্ট দাম্পত্যের থেকে বিনোদিনীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি উপন্যাসে আপাততভাবে উজ্জ্বল হয়ে উঠলেও কাহিনীর মূল কাঠামো কিন্তু আবর্তিত হয়েছে মহেন্দ্র আশালতার সংসার কে কেন্দ্র করেই।বিনোদিনী,বিহারী,রাজলক্ষ্মী,অন্নপূর্ণা এই সংসারবিত্তেই ঘুরপাক খেয়েছে। আর সেখানে-

       বিনোদিনী,মহেন্দ্র,আশালতা ও বিহারী এই চারজনের মধ্যকার সম্পর্কের উত্থান পতন উপন্যাসের ভিত্তি নির্মাণ করেছে। তবে আশালতা চোখের বালি এই বিশেষণটি শত্রুতার পরিবর্তে বন্ধুত্ব করার জন্যই সে শপথ গ্রহণ করেছিল। তবে পরবর্তীতে সেই আশালতা বিনোদিনীর কাছে চোখের বালি অর্থাৎ চক্ষুঃশূল হয়ে উঠলো। যা বিনোদিনীর অন্তরে অগ্নিদাহ সৃষ্টি করে। 

         পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,চোখের বালি উপন্যাসে বিনোদিনীর পরিনাম মোটেই অসঙ্গত নয়। মহেন্দ্র আশার প্রতি তার ক্ষোভ বিক্ষোভ, বিরাগ বিদ্বেষ, বিহারীর প্রতি প্রেমের আকর্ষণ ও তার প্রেমের আলোকে বিনোদিনীর উত্তরণ তার চারিত্রিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। যে প্রেক্ষাপটে বিনোদিনী চরিত্রের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে বিহারীর সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি হলে তার পরিণাম হয়ে উঠতো অসঙ্গত। বিনোদিনী মহেন্দ্রের সাথে পশ্চিমে গিয়েছিল তার প্রতি প্রেমের আকর্ষণে নয়, নিজের ভালোবাসার পাত্র ঘর ছাড়া বিহারীর খোঁজেই। কিন্তু বিহারী বিনোদিনীর উদ্দেশ্য প্রথমে ধরতে পারিনি ঠিকই,তবে বিনোদিনী বিহারীকে তার মনের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। জানিয়ে দিয়েছিল অন্তরের শ্রদ্ধা, ভক্তি, নিবেদনের কথা। আর এখানে দেখা যায় বিহারী তার প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আর বিনোদিনী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কারণ বিহারীর সাথে বিবাহের বাধা ছিল বিনোদিনীর আত্মচেতনায়, বৈধব্য সংস্কারে নয়। তবে-

            বিহারী ও বিনোদিনী প্রেমকে ঔপন্যাসিক কোন চরম পরিণতিতে পৌঁছে দিতে পারেননি। তাই সমালোচকরা একথা বলেন যে, উপন্যাসে বাস্তবতাকে সাহস ভরে রবীন্দ্রনাথ প্রকাশ করতে পারেননি। তবে অভিযোগ,অনুযোগ রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে যাই থাকুক না কেন- মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস নির্মিতিতে রবীন্দ্রনাথ যে সিদ্ধহস্ত সে কথা অস্বীকার করার কোন পথ নেই। আর সেই পথে পরবর্তী সাহিত্যিকরা পদচারণা করেছেন, যে পথের নির্মাতা একমাত্র রবিন্দ্রনাথই।


ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL ।


Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...