ব্রিটেনের (তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর)আইনের অনুশাসন,ক্ষমতার ভারসাম্য নীতি, তুলনামূলক রাজনীতির উদ্দেশ্য।
ব্রিটেনের আইনের অনুশাসন( পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)।
আমরা জানি ডাইসি আইনের অনুশাসন কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন।আর ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো আইনের অনুশাসন। ব্রিটেনে আইনের অনুশাসন হল নাগরিকদের অধিকার ও স্বাধীনতার মূল ভিত্তি। আর ডাইসি-
অধ্যাপক ডাইনিং তাঁর 'Introduction of the law of the constitution' নামক গ্ৰন্থে আইনের অনুশাসনের তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। আর সেই বৈশিষ্ট্য গুলি হলো - ক) আদালতের চোখে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। আসলে সে দেশে সরকারের কোনো স্বৈরী ক্ষমতা নেই। খ) কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, আইনের চোখে সকলের সমান এবং সমস্ত বিরোধের নিষ্পত্তি করবে সাধারণ আদালত। গ) ব্রিটেনে আইনের অনুশাসনের ভিত্তিতে সাধারণ আইন দ্বারা নাগরিকদের অধিকার গুলি স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হয়। তবে - ব্রিটেনে আইনের অনুশাসন নীতির ফলে নাগরিকদের অধিকার পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে ব্যাপক অর্থে আইনের অনুশাসন বলতে যা বোঝায় ব্রিটেনে তা নেই।
•• তুলনামূলক রাজনীতির উদ্দেশ্য
১) বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার শ্রেণীবিভাগ করা। বিভিন্ন দেশের সংবিধানকে আমরা লিখিত ও অলিখিত, নমনীয় ও অনমনীয় এইভাবে ভাগ করি। আবার সংসদীয় শাসনব্যবস্থা ও রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা, এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় ভাগ করি।
২) বিভিন্ন দেশের রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে বৃদ্ধি করা হয়। যার ফলে কোনো বিশেষ দেশের শাসন ব্যবস্থা ও রাজনীতির মান নির্ধারণ করা সম্ভব হয়।
৩) একটি তাত্ত্বিক কাঠামো নির্মাণ করা তুলনামূলক রাজনীতির একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। যার মাধ্যমে আলোচনার সূত্র নির্ণয় ও তত্ত্ব গঠনের চেষ্টা করা হয়।
৪) রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনুমান গঠন করা এবং তার পরীক্ষা করে দেখা তুলনামূলক রাজনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য।
৫) তুলনামূলক রাজনীতির আরেকটি উদ্দেশ্য হলো,বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে তুলনার মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভুলগুলিকে চিহ্নিত করা। আর এইভাবে শাসন ব্যবস্থার উৎকর্ষ বাড়ানো সম্ভব হয়।
•• ক্ষমতার ভারসাম্যের নীতি
আমরা জানি যে,কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের মধ্যে সমানুপাতিক হারে সামঞ্জস্য বিধান করে প্রয়োগ করাকে ক্ষমতার ভারসাম্যের নীতি বলে। যেখানে - ক্ষমতার ভারসাম্যের নীতি বলতে বোঝায় একজন কর্মকর্তাকে কোনো কাজের জন্য যে পরিমাণ দায়িত্ব প্রদান করা হয় তাকে সে পরিমাণ কর্তৃত্বও প্রদান করতে হবে। আর সেখানে-
কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত। সংগঠন কাঠামোর ভেতরে কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের সমতা বজায় না থাকলে কোনো কর্মীর পক্ষে সঠিক ও সমানভাবে দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব। এছাড়া-
প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীরা নির্বাহীর কাছ থেকে ন্যায়বিচার, নিরপেক্ষতা এবং সমান আচরণ প্রত্যাশা করে। নির্বাহীর চোখে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সকল কর্মী সমভাবে বিবেচিত হলে তিনি সবার সম্মানের অধিকারী হয়ে ওঠে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানে সাম্যতা গড়ে ওঠে। আসলে -
আন্তর্জাতিক সম্পর্কে, ক্ষমতার ভারসাম্য নীতি হলো, কোনও জাতি বা গোষ্ঠীর নিজেদের শক্তিকে অন্য পক্ষের শক্তির সাথে মিলিয়ে রাখার নীতি। এই নীতির উদ্দেশ্য হলো, কোনও একটি রাষ্ট্রকে অন্য সকলের উপর কর্তৃত্ব করার জন্য পর্যাপ্ত সামরিক শক্তি অর্জন থেকে বাধা দেওয়া। আর এই নিরিখে-
ক্ষমতার ভারসাম্য নীতির বৈশিষ্ট্য:
•এই নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলি তাদের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করে।
•এই নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলির সহাবস্থানের সংগঠিত নীতি তৈরি হয়।
•এই নীতির মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। যেখানে আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে দুর্বল শক্তির সাথে নমনীয় জোট গঠন করা যায়।
Comments
Post a Comment