পঁচিশে বৈশাখ (XI,2nd) প্রবন্ধের মাধ্যমে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রবীন্দ্রনাথের সম্পর্কে যে মূল্যায়ণ করেছেন তার নিজের ভাষায় লেখো।
পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধের মাধ্যমে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যে মূল্যায়ন করেছেন,তা নিজের ভাষায় লেখো।
আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর ব্যক্তিগত সাহচর্যের কারণে এবং একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাবন্ধিক রবীন্দ্রনাথের মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন বা করতে পেরেছেন। সেই কারনে ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, নাট্যকার কিংবা কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথের যে খ্যাতি ও দক্ষতা তা তিনি নিজে অকপটে স্বীকার করেছেন। তাই-
প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি কিংবা শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তাঁর যে বিকল্প শিক্ষাভাবনা তাঁর কৃতিত্বকেও তিনি শিরোধার্য করেছেন। কিন্তু তিনি মনে করেন যে, রবীন্দ্রনাথ অমর হয়ে আছেন তাঁর গানের জন্য। প্রসঙ্গত প্রাবন্ধিক বহু বিখ্যাত কবি এবং গীতিকারদের সৃষ্টির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে পরিচিত হয়েছিলেন।তবে
সেই পরিচয়ের মাধ্যমে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করেছিলেন। তবুও কোথাও যেন একটা অতৃপ্তি তাঁর মনের মধ্যে কাজ করেছিল। সেই অতৃপ্তি থেকে রবীন্দ্রনাথের গান শুনতে গিয়ে অতৃপ্তির কারণ তিনি উপলব্ধি করেছেন। এখানে বলে রাখা ভালো যে-
প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছে রবীন্দ্রনাথের গান যে অখণ্ড রূপ দিয়ে তাঁর মনকে অভিভূত করতে পারে তা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এখানে তিনি কিছুটা তুলনা করলেন জার্মানদের ‘লীডার’ কিংবা ইরানিদের গজলের সাথে।কিন্তু-
সেখানেও রয়েছে বেশ অসম্পূর্ণতা, যা রবীন্দ্রনাথের গানে কখনোই পাওয়া যায় না। তবে রবীন্দ্রগানে হয়তো অতৃপ্তি কখনো-কখনো আসে, কিন্তু সে অতৃপ্তি আসলে তার ব্যঞ্জনার কারণে। আর সেকারণেই রবীন্দ্রনাথের গানকে আরও ভালোভাবে শুনতে, আরও গভীরে ডুব দিতে আমাদের বাধ্য করে। তবে-
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, রবীন্দ্রনাথের গান কখনই নিজেকে সম্পূর্ণ নিঃশেষ করে না বা করতে পারে না। কারণ গানের শব্দচয়ন, শব্দসংস্থাপন যে ভাব, অর্থ এবং মাধুর্যের পরিসমাপ্তিতে পৌঁছে দেয় তা বিকল্পহীন, একথা স্বীকার করতে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
Comments
Post a Comment