Skip to main content

ব্রিটেন ও(3rd. Sem) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিটি ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো।

ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিটির ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, তৃতীয় সেমিস্টার মাইনর) ।

                     আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, আধুনিক কালে আইন প্রণয়নের কাজ জটিল ও বিশেষীকৃত হয়ে পড়েছে। আর সে কারণে আইন প্রণয়নের কাজে আইনসভাকে সাহায্য করার জন্য কমিটি ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যতিক্রম নয়। উভয় দেশেই আইনসভায় কমিটি ব্যবসার প্রচলন দেখা যায়। উভয় দেশের মধ্যে কমেডি ব্যবস্থার যে তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য দেখা যায় তা হলো -

•১) আইনগত পার্থক্যঃ

 ব্রিটেনে কমিটি গুলির সদস্যগণ একটি মনোনয়ন কমিটির দ্বারা নিযুক্ত হন। কিন্তু-

            মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমিটি গুলির সদস্যগণ প্রতিটি কক্ষের সরকারি ও বিরোধী সদস্যের নিয়ে গঠিত 'কমিটি গুলির কমিটি' দ্বারা নিযুক্ত হন।

•২) সংখ্যা ও আয়তন কত পার্থক্যঃ

ব্রিটেনে কমিটির সংখ্যা কম এবং কমিটিগুলির সদস্য সংখ্যাও কম। কিন্তু-

             মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমিটির সংখ্যা বেশি এবং কমিটিগুলির সদস্য সংখ্যাও বেশি। 

•৩) বিল প্রেরণগতঃ

ব্রিটেনে বিল দ্বিতীয় পাঠের পর সেই বিলকে কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু-

             মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিল সম্পর্কে আলোচনা হওয়ার আগেই কোন বিলকে সংশ্লিষ্ট কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।

•৪) বিশেষীকৃতগত পার্থক্যঃ 

ব্রিটেনে কমিটি গুলি বিশেষীকৃত নয়। কিন্তু -

     মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রিক কমিটিগুলি বিশেষীকৃত। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রবীণ সদস্যদের নিয়ে এক একটি কমিটি গঠিত হয়।

•৫) বিল অনুসারে কমিটি গঠনঃ

ব্রিটেনে সরকারি ও বেসরকারি বিলের বিবেচনার জন্য পৃথক কমিটির গঠন করা হয়। কিন্তু- 

            মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ও বেসরকারি বিলের  মধ্যে পার্থক্য করা হয় না বলে তাদের জন্য কোন পৃথক কমিটি নেই।

•৬) দলীয় রাজনীতির প্রভাবঃ

ব্রিটেনের কমিটিগুলি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় রাজনীতির প্রভাব থাকে না। তবে কমিটিগুলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা যাতে সদস্যপদ লাভ করতে পারেন তা দেখা হয়। কিন্তু-

               মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমটিগুলি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব থাকে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আনুপাতিক শক্তি কমিটি গুলিতে প্রতিফলিত হয়।

•৭) বিল উত্থাপনঃ

ব্রিটেনে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি গৃহীত হয়নি। তাই এখানে ক্যাবিনেট সদস্যরা আইনসভার সদস্য। এখানে আইনসভার কোন কক্ষে বিল উত্থাপনের ক্ষেত্রে ক্যাবিনেটই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। যেখানে কমিটির কোন ভূমিকা থাকে না। কিন্তু-

            মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতি গৃহীত হয়েছে। তাই এখানে ক্যাবিনেট সদস্যরা আইনসভার সদস্য নন। ক্যাবিনেট সদস্যরা আইনসভায় কোন বিল উত্থাপন করতে পারে না। এখানে আইসো একদিন উত্থাপন করে কমিটিগুলি। 

•৮) সভাপতির ক্ষমতার সংক্রান্ত পার্থক্যঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলির সভাপতিগণের ক্ষমতা ও প্রভাব ব্রিটিশ কমিটিগুলির সভাপতি গণের তুলনায় অনেক বেশি। সেখানে-

          ব্রিটেনে বিলগুলি কমিটির সভাপতিত্বের নামে পরিচিত হয় না। কিন্তু-

           মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বিল কমিটির সভাপতিদের নামেই পরিচিত হয়।

•৯) কমিটিগুলির ক্ষমতাঃ

ব্রিটেনে স্থায়ী কমিটিগুলি বিলের ধারা ও উপধারার উপর বিস্তারিত আলোচনা করতে পারলেও কোন বিলের শিরোনাম,মূলনীতি পরিবর্তন করতে পারে না। কিন্তু-

                মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী কমিটিগুলি বিলের শিরোনাম ছাড়া অন্যান্য সবকিছু পরিবর্তন করতে পারে।

•১০) জনগণের আগ্রহঃ

ব্রিটেনের জনগণ কমিটির সদস্য হতে আগ্রহ দেখায় না বরং তারা আইনসভার সদস্য হতে আগ্রহ দেখায়। কিন্তু-

            মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ আইনসভার সদস্য হওয়ার পরিবর্তে কমিটির সদস্য হতে বেশি আগ্রহ দেখায়। 

                       •পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থার তুলনায় মার্কিন কমিটি ব্যবস্থার ভূমিকা,গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। ব্রিটেনে কমিটিগুলির কাজ কেবলমাত্র অনুসন্ধান ও রিপোর্ট প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমিটিগুলি আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলিকে আইনসভার চক্ষু,কর্ণ ও মস্তিষ্করূপে অভিহিত করা হয়।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL.

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...