Skip to main content

UK আইন (3rd.Sem) সভার কার্যাবলী আলোচনা করো।

UK আইন সভার কার্যবিবরণী আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মাইনর সিলেবাস)।

               কমন্সসভা,লর্ডসভা ও রাজা বা রানীকে নিয়ে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট বা আইনসভা গঠিত হয়। কমন্সসভা ও লর্ডসভা হলো ব্রিটিশ আইনসভার দুটি কক্ষ। সেখানে কমন্সসভা হলো নিম্নকক্ষ আর লর্ডসভা হল উচ্চকক্ষ। অর্থাৎ ব্রিটেনের আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট। সেখানে শাসনতান্ত্রিক বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘকালীন ক্রমবিকাশের ফলে ব্রিটেনের কমন্সসভা ও লর্ডসভার উৎপত্তি ও বিকাশ ঘটেছে। যেখানে-

                •কমন্সসভার কার্যাবলী• 

•১) আইন প্রণয়নঃ ব্রিটেনের কমন্সসভা হলো জনপ্রতিনিধিত্বমূলক কক্ষ, যে কক্ষের প্রধান কাজ হল আইন প্রণয়ন করা। এই সভাকে প্রতিবছর অনেক আইন পাস করতে হয় এবং যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিল এই সভায় উত্থাপিত হয়। তবে এখানে রাজা বা রানীর আইন সংক্রান্ত ক্ষমতাও আনুষ্ঠানিকমাত্র।

•২) অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতাঃ ব্রিটেনের পার্লামেন্টের আইন অনুযায়ী অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে লর্ডসভার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। অর্থবিল কেবলমাত্র কমন্স সভায় উত্থাপিত হয়। আর কমন্সসভায় পাস হওয়া অর্থবিলকে লর্ডসভা নাকচ করতে বা সংশোধন করতে পারে না। তবে একমাস আটকে রাখতে পারে। তবে কোন বিল অর্থ বিল কিনা সে বিষয়ে কমন্সসভার স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

•৩) সরকার গঠনঃব্রিটেনের মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে কমন্সসভার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের পর যে দল কমন্সসভার সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সেই দলের নেতাকে রাজা বা রানী প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। আর প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে তার দলের কিছু সদস্যকে রাজা বা রানী অন্যান্য মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। তবে কমন্সসভার সদস্য না হয়েও ছমাস পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকা যায়।

                    •লর্ডসভার কার্যাবলী•

•১) শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতাঃ ব্রিটেনের লর্ডসভা সরকারের বিভিন্ন নীতি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে পারে। আর এই আলোচনার মধ্যে সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে লর্ডসভা জনগণকে প্রভাবিত করতে পারে এবং সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কারণ পরবর্তী নির্বাচনে জনমত হারানোর ভয়ে লর্ডসভার সমালোচনাকে সরকার অবহেলা করতে পারে না, সরকার সংযত হয়ে চলে। এছাড়াও বিচারপতিদের পদচ্যুত করার ব্যাপারে লোকসভা কমন্সসভার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী।

•২)বিচার সংক্রান্ত ক্ষমতাঃ ১৯ শতক থেকেই ব্রিটেনের লর্ডসভা সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সেই সময়কালে লর্ডসভার মূল ও আপিল উভয় এলাকা ছিল। তবে বর্তমানে খেতাবসংক্রান্ত এবং লর্ডসভার অবমাননা সংক্রান্ত মামলার বিচার মূল এলাকায় হয়ে থাকে। তবে বহুকাল ধরে লর্ডসভা ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আপিল আদালত ছিল। আর সেখানে দেওয়ানী ও ফৌজদারি উভয় ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ আপিল আদালতের ভূমিকা পালন করত। তবে এখন লর্ডসভা উপাধি সংক্রান্ত সমস্ত বিরোধের মীমাংসা হয় এবং সভার অধিকার ভঙ্গের জন্য লর্ডসভা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...