Skip to main content

প্রাচীন ভারতের (RMV)ইতিহাস রচনার লিপির গুরুত্ব( XII, 3 rd sem)আলোচনা করো।

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লিপির গুরুত্ব আলোচনা করো।

   আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লিপির গুরুত্ব সর্বাধিক। তাই প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের মধ্যে লিপিকে প্রথম স্থানে রাখা হয়। কারণ লিপি তথ্য সরবরাহে অমূল্য সম্পদ। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি, অশোকের শিলালিপি, সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি, চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর আইহোল লিপি প্রভৃতি বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। আর এই সকল লিপি থেকে যে সকল তথ্য আমরা পাই তা হলো-

•রাজার রাজ্যসীমাঃ কখনও লিপির প্রাপ্তিস্থান থেকে, আবার কখনও লিপিতে উৎকীর্ণ তথ্য থেকে সংশ্লিষ্ট রাজার রাজ্যসীমা সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়। যেমন সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে রাজা সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যসীমা সম্পর্কে আমরা তথ্য পাই। 

রাজাদের কার্যকলাপঃ লিপিতে উৎকীর্ণ তথ্যাদি থেকে রাজাদের যুদ্ধ জয়, ধর্মপ্রচার, আদেশ উপদেশ, সংস্কার প্রভৃতি জনকল্যাণ মূলক কার্যাবলী সম্পর্কে জানা যায়। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি, অশোকের শিলালিপি থেকে সে যুগের ধর্মপ্রচার, কলিঙ্গ যুদ্ধ, প্রজা কল্যাণমূলক কার্যাদি ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়।

ধর্মবিশ্বাস ও শিল্পকলা ঃ দেব মন্দিরের গায়ে উৎকীর্ণ ধর্মীয় উদ্দেশ্যে প্রচারিত বেসরকারি লিপিগুলি ধর্ম ও শিল্পকলার ইতিহাস রচনার এক অপরিহার্য উপাদান। আর এখানে অশোকের ধর্মলিপিগুলি থেকে সে যুগে বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। শুধুমাত্র ধর্ম নয়, লিপিগুলিতে ব্যবহৃত ভাষা থেকে সে যুগের ভাষা চর্চার সম্পর্কে ধারণা করা যায়। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি অশোকের লিপি থেকে ব্রাহ্মী,খরোষ্ঠী, প্রাকৃত প্রভৃতি ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। 

•কৃষি ও অর্থনীতিঃসাতবাহন, গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগের তামা পাতে উৎকীর্ণ যে ভূমিদান সংক্রান্ত লিপিগুলি পাওয়া যায়, তা থেকে তৎকালীন ভূমি ও কৃষি ব্যবস্থা এবং রাজ্যের অর্থনীতি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়।। যেমন ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে মালদাহ জেলায় আবিষ্কৃত তাম্রলিপি থেকে তৎকালীন পালরাজা মহেন্দ্র পাল বৌদ্ধদের জমি দান করেছিলেন। আসলে লিপি হল ইতিহাসের জীবন তো দলিল।


Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...