Skip to main content

আদরিণী (XII,3rd) গল্পের মূলভাব বা বিষয়বস্তু নিজের ভাষায় লেখো।

'আদরিণী'গল্পের মূলভাব বা বিষয়বস্তু (পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, দ্বাদশ শ্রেণী, তৃতীয় সেমিস্টার)।


আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, অবলা পশুদের নিয়ে অনেক সাহিত্যিক অনেক গল্প রচনা করেছেন। কিন্তু তার মধ্যে প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের 'আদরিনী' এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'মহেশ' আমাদের মনকে অন্য পথে নিয়ে একটু নতুনভাবে ভাবিয়ে তোলে। যেখানে আদরিণী গল্পে আমরা দেখি রামজয় মুখোপাধ্যায়ের সাথে আদরিণী নামক হাতীর পিতা কন্যার সম্পর্ক এবং মহেশ গল্পে দেখিমহেশের সাথে গফুর মিঞায় পিতা পুত্রের সম্পর্ক। আর সেই সম্পর্কের মধ্যে আছে এক নিগূঢ় ভালোবাসার কথা। যেখানে আমরা দেখি-

        আদরিনী মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের শুধুমাত্র একটি পশু নয়,সেই ওই পরিবারের একজন সদস্য। যে সদস্যের অকাল প্রয়াণ আমাদের মনকে ভাবিয়ে তোলে, ভারাক্রান্ত করে তোলে। যেখানে গল্পের শুরুতে আমরা দেখি, মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের নাতনী কল্যাণীর বিয়ের আয়োজন চলছে সাড়ম্বরে। তবে এই বিয়ের জন্য বেশ অনেক টাকার প্রয়োজন দেখা যায়। আর সেই টাকা যোগাড় করতে না পেরে মুখোপাধ্যায় তার প্রিয় পোষ্য, কন্যাসম আদরিণীকে বিক্রি করতে বাধ্য হন।আসলে-

   আদরিনী ভালবাসার প্রতীক, শ্রদ্ধার প্রতীক, মমতার প্রতীক। এত কিছু থাকা সত্ত্বেও আলোচ্য গল্পটিতে বিচ্ছেদ বেদনা আমাদেরকে ব্যাথিত করে তোলে। আসলে পশুরাও মানুষের কথা বুঝতে পারে কিন্তু তারা বলতে পারেনা।ঠিক তেমনি মানুষও পশুদের কথা জানতে পারে, বুঝতে পারে। তবুও তাদের উপর নেমে আসে এক চরম নির্মমতা। আর সেই নির্মমতার বলি হয় আদরিণী।তবে-

আর সেই নির্মমতায় আমরা দেখি, একটা সময় আদরিণী জয়রাম বাবুর পরিবার থেকে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিচ্ছেদ হওয়ার ফলে জয়রাম বাবুর মনে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়।যে শূন্যতা মানুষের সংবেদনশীলতা,ভালোবাসার কথা জানিয়ে দেয়। আর সেই ভালোবাসা মানুষের আবেগ,অনুভূতি এবং সম্পর্কের গভীরতা আলোচ্য গল্পে ফুটে উঠেছে। যেখানে- 

        মানুষ ও পশু অর্থাৎ জয়রাম বাবু এবং আদরিণীর মধ্যে যে ভালোবাসার বন্ধন তা শুধুমাত্র মানুষ ও পশুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, যার বিস্তৃতি অনেক বেশি, অনেক দূর। যার ভালোবাসা অনেক গভীরতর। শুধু তাই নয়, এখানে তুলে ধরা হয়েছে পশুরও মনে অনুভূতি আছে। তারাও ভালবাসতে জানে, তারাও কষ্ট পেতে পারে।আর সেই কষ্ট নিয়ে সবাইকে দুঃখ দিয়ে, সকলকে ফাঁকি দিয়ে, নিরবে চলে যায় আমাদের আদরিণী। আদরিনী আজ চিরঘুমে শায়িত।আজ তার চোখ দিয়ে ঝরবে না জল। অতঃপর-

      আদরিণীর মৃত্যুতে মুখোপাধ্যায় বাবু মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়লেন। শুধু তাই নয় ধীরে ধীরে মৃত্যু পথে পা বাড়াতে থাকেন । অবশেষে আদরিণীর মৃত্যুর ঠিক দু মাস পরে মুখোপাধ্যায় বাবুও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...