কবি জীবনানন্দ দাশের আবার আসিব ফিরে কোন নির্দিষ্ট চিহ্নিত কবিতা নয়। এটি আসলে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের ষোল সংখ্যক সনেট। আর সেই সনেটটি প্রথম লাইন অনুসারে কবিতাটির নামকরণ করা হয়েছে আবার আসিব ফিরে। তবে এই কবিতাটি পরিপূর্ণভাবে প্রকৃতি চেতনার কবিতা নয়, বলা যায় তার আভাস বা অংশ মাত্র। আমরা জানি মানুষ প্রকৃতির কোলে গেলে শান্তি পায় মুক্তি পায় পায় এক অদ্ভুত অনাবিল আনন্দ। আসলে রূপসী বাংলার কবি ভালোবাসা ও বিষাদ, অবসাদ ও অলসতা সম্বন্ধে বড় বেশি সচেতন ছিলেন। তাই তার কবিতায় আমরা পাই-'মানুষের অন্তিম রিয়েলিটি।'যেখানে-
জীবনানন্দ দাসের 'কাব্য সমগ্র'এর ভূমিকায় ভ্রাতা অশোকানন্দ জানান যে-একটি বিশেষ ভাবাবেকে আক্রান্ত হয়ে কবিতাগুলি রচিত হয়েছে। সেই বিশেষ ভাওয়া ব্যক্তি কি সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কারভাবে জানাননি। শুধু তাই নয়, এরা প্রত্যেকে আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র সত্তার মতো নয় কেউ,এক শরীরী। যেখানে-
কবিতার শুরুতেই কবি আমাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানান যে,
তখন কোন কিছুকে আঁকড়ে ধরে নিজেকে সঞ্চালিত করতে পারেনা। আঁকড়ে ধরে মানুষ প্রকৃতিকে। কোভিদ সেই বিশাল প্রাকৃতিক সাম্রাজ্যে শুধুমাত্র পাখিরা বিরাজ করেনি করেছে আরো অনেক কিছু। তবে -
কবি আবারও ফিরে আসতে চেয়েছেন তবে তা পাখির নামে নয়। মাঠ ঘাট নদী প্রকৃতির মধুর আবেশে সোদা মাটির গন্ধে। আসলে কবি বাংলার সবুজ আবরণে নিজেকে মেলে ধরতে চান। যেখানে নেই কোন কোলাহল, নেই কোন আগ্রাসী মনোভাব। আছে কেবলমাত্র শান্ত, স্নিগ্ধ, কোমল, স্নেহ। আর সেই তিনি লালিত পালিত হয়ে পরিতৃপ্ত হতে চান। সেই পরিতৃপ্তির মাঝে তিনি আমাদেরকে কথা দিয়েছেন যে, প্রকৃতির মাঝে তাকে পাওয়া যাবে। তাই তিনি পৃথিবীর রূপ আর খুঁজতে চান না।
"বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে চাই না আর।"
আসলে কবি প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে থেকে যেতে চান। তবে তিনি কোন মতেই চান না কোলাহল,দ্বেষ, বিভৎসতা, যা বাতাসকে ভারি করে দিতে পারে। যেখানে একদিকে আছে মৃত্যুচেতনা, অপরদিকে প্রকৃতির চেতনা। আর এই দুই চেতনার মধ্যে তিনি মৃত্যুকে জয় ঘোষণা করেন। মৃত্যুই সর্বশ্রেষ্ঠ, অন্য কিছু না।
Comments
Post a Comment