Skip to main content

শ্রীজাত(XII-3rd Sem) বন্দোপাধ্যায় এর অন্ধকার লেখাগুচ্ছ কাব্যগ্ৰন্থের অন্তর্গত ধর্ম কবিতার বিষয়বস্তু নিজের ভাষায় লেখো

শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায় এর অন্ধকার লেখাগুচ্ছ কাব্যগ্ৰন্থের অন্তর্গত ধর্ম কবিতার বিষয়বস্তু নিজের ভাষায় লেখো (পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, দ্বাদশ শ্রেণী তৃতীয় সেমিস্টার)।

       আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে,শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ধর্ম' কবিতাটি তাঁর 'অন্ধকার লেখাগুচ্ছ' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ১৪ সংখ্যক কবিতা। আর সেই কবিতাটিতে কবি স্বয়ং চিরাচরিত ধর্মীয় গোঁড়ামি ও সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে এক বলিষ্ঠ প্রতিবাদ এবং মানবিকতার জয়গান করেছেন। আর সেখানে আমরা দেখি- 

          •সংকীর্ণ অর্থে ধর্মের ব্যাখ্যাঃ সংকীর্ণ অর্থে ধর্মের ব্যাখ্যা এই কবিতায় প্রচলিত ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা, বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠান এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টিকারী দিকগুলির সমালোচনা করা হয়েছে। তিনি আরও দেখিয়েছেন যে, ধর্মের নামে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরি করা হয় এবং সেই সাথে সংকীর্ণ চিন্তাভাবনার জন্ম দেওয়া হয়। তবে -

         •ধর্মই মানবিকতাঃ আলোচ্য কবিতায় কবি মনে করেন যে,মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাই হল প্রকৃত ধর্ম। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি সমান মনোভাব পোষণ করাই মানবধর্ম। এর ঊর্ধ্বে অন্য কোনো ধর্মীয় পরিচয় থাকতে পারে না। যেখানে-

        •ধর্মীয় বিদ্বেষ ও হানাহানিঃ আলোচ্য কবিতাটিতে ধর্মের বিষয়টি অপব্যবহার করে যে হানাহানি, বিদ্বেষ ও বিভেদ সৃষ্টি করা হয়, তার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়,কবি সেই সমস্ত ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা মানুষকে দ্বন্দ্বের দিকে ঠেলে ফেলে দেয়।আর সেখানে -

         •শান্তির বার্তাঃ কবি শ্রীজাতের 'ধর্ম' কবিতাটি বিভিন্ন ধর্ম ও মতাদর্শের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বলে। আসলে তিনি এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখেন যে সমাজের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে সকলে মিলেমিশে বসবাস করবে এবং শান্তির বার্তা বহন করে আনবে।তবে-

         •ধর্মের আসল স্বরূপঃ আলোচ্য কবিতাটিতে ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচন করা হয়েছে।আর সেখানে এ কবির মতে- ধর্ম কোনও নির্দিষ্ট আচার-অনুষ্ঠান বা বাহ্যিক পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। বরং বলা যায় যে,ধর্ম মানুষের কর্মে, জীবনবোধে এবং বিশ্বাসে প্রতিফলিত হয়। যেখানে অন্যের জন্য স্থান করে দেওয়া এবং ভালোবাসা দেওয়াই হল মুখ্য ধর্ম।

             পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ধর্ম' কবিতাটি ধর্মের নামে প্রচলিত কুসংস্কার, গোঁড়ামি ও বিভেদের বিদ্বেষের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিবাদ এবং মানবতাবাদের জয়গান। আসলে কবিতাটি উদার ও মানবিক ধর্মচেতনার কথা বলে।আর সেখানে ভালোবাসাই মানব জীবনের, মানবতার মূল ভিত্তি।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL । 

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...