Skip to main content

পোটরাজ(XII,2nd Sem )গল্পটির পটভূমির আড়ালে আছে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন কথা-আলোচনা করো।

শঙ্কর রাও খারাটের 'পোটরাজ' গল্পটির পটভূমির আড়ালে আছে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন কথা- আলোচনা করো(পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, দ্বাদশ শ্রেণী, তৃতীয় সেমিস্টার)।

          • আলোচনা শুরুতেই আমরা বলে থাকি যে,শঙ্কর রাও খারাটের একটি অন্যতম ছোটগল্প 'পোটরাজ'।যে গল্পটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন সুনন্দন চক্রবর্তী।আর সেই গল্পটিতে লেখক শঙ্কর রাও খারাট তুলে ধরেছেন দলিত সমাজের এক বেদনাদায়ক বাস্তব চিত্র। যে চিত্রে আমরা দেখতে পাই-  

 দলিত সম্প্রদায়ের নির্মম বাস্তবতাঃ আলোচ্য গল্পে পোটরাজ শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার চরম দুর্দশা, দারিদ্র্য, বঞ্চনা এবং সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্নতার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যারা সমাজে চিরকাল ব্রাত্য হয়ে থাকে।কিন্তু তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস বা আচার-অনুষ্ঠানের জন্য এই সমাজ তাদের ব্যবহার করে থাকে।আর সেখানে-

বিশ্বাসের আড়ালে বৈষম্যঃ  পোটরাজরা নিজেদের দেবতার প্রতি উৎসর্গ করে, যা এক প্রকার আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত। কিন্তু এই ধর্মীয় বিশ্বাস তাদের সমাজে কোনো সম্মান বা মর্যাদা এনে দেয় না। বরং, তাদের এই অবস্থানকে ব্যবহার করে সমাজ তাদের শোষণ করে, তাদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়, অথচ তাদেরকে সামাজিকভাবে বর্জন করে। যেখানে -

সামাজিক নির্মমতাঃ পোটরাজ গল্পটি সমাজে বিদ্যমান উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ এবং শ্রেণিবিভাজনের নির্মম দিকটি তুলে ধরে।আসলে পোটরাজরা সমাজের নিম্নবর্গের মানুষ হওয়ায় তাদের প্রতি সমাজের আচরণ অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও অমানবিক।আর সেই অমানবিক  শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার কথা গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।আর সেখানে আছে-

শোষণ বঞ্চনার চিত্রঃ একসময় পোটরাজরা বুঝতে পারে যে, তার তথাকথিত ধর্মীয় অবস্থানে থাকে।আসলে তাদেরকে শোষণের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।তবে পোটরাজকে 'দেবতার প্রতিনিধি' বলা হলেও, বাস্তবে সে সমাজের দ্বারা শোষিত এক চরিত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।আর এই উপলব্ধি গল্পের শেষ পরিণতিকে বেদনাদায়ক করে তোলে। তবুও-

নজিরবিহীন আত্মত্যাগঃ  যদিও আলোচ্য গল্পটি শোষণের কথা বলে, তবুও পাশাপাশি পোটরাজদের আত্মত্যাগের দিকটিও পরোক্ষভাবে উঠে আসে।আর তারা দেবতার নামে নিজেদেরকে উৎসর্গ করে এক অদ্ভুত আত্মত্যাগ অনুভব করে, তবে এর বিনিময়ে তারা এ সমাজ থেকে কিছুই পায় না!

      • পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,'পোটরাজ' কেবল একটি গল্প নয়, এটি ধর্ম, সামাজিক শ্রেণি এবং নিপীড়নের বাস্তব চিত্র। আর সেই  চিত্রে মানবতাবোধ এবং সমাজভাবনার এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে।যে বিষয়ের  দলিত সমাজের বাস্তব চিত্র এবং সামাজিক শ্রেণী বৈষম্য।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 ।


Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...