Skip to main content

তার সঙ্গে' কবিতার(XII,3rd.Sem) প্রেক্ষাপট আলোচনা করে এ কবিতায় কবির মনোভাবের পরিচয় দাও

'তার সঙ্গে' কবিতার প্রেক্ষাপট আলোচনা করে এ কবিতায় কবির মনোভাবের পরিচয় দাও(পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, দ্বাদশ শ্রেণী, বাংলা,তৃতীয় সেমিস্টার)

       বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক হলেন পাবলো নেরুদা । আসলে এই পাবলো নেরুদা ছিলেন চিলির একজন উল্লেখযোগ্য কবি,রাজনীতিবিদ্ এবং সুবিচক্ষণ ব্যাক্তিত্ব।তবে নেরুদা এ কবির ছদ্মনাম, তাঁর প্রকৃত নাম হল নেফতালি রিকার্দো বেয়েস বাসোয়ালতো। আর  'তার সঙ্গে'কবিতাটি একটি স্প্যানিশ ভাষায় রচিত কবিতা। যে কবিতার প্রেক্ষাপট হিসেবে আমরা দেখি স্পেনের গৃহযুদ্ধ(১৯৩৬-১৯৩৯)সময়ে এ কবিকে বিষাদগ্ৰস্ত করে তোলে। শুধু তাই নয়, কবি পাবলো নেরুদা শাসক শ্রেণীর রক্তচক্ষুর বিরুদ্ধে তীব্র আঘাত করেন। তাই তাঁর কবিতায় আমরা দেখতে পাই একদিকে প্রেম, অন্যদিকে প্রতিবাদের ভাষা।যেখানে-

        স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময় সেখানে অন্যায়,অবিচার দেখা দেয়।আর ঠিক সেই সময়ে সেখানে উঠে আসে প্রতিবাদের ঝড়, সেই সাথে গর্জে ওঠে শত শত মানুষের তীব্র প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। আর তার কারণে এ কবি হলেন সরকারের বিরাগভাজন। তবু তিনি কখনো তীব্র ক্ষমতাধর বুর্জোয়া দলের নাম লেখেননি। তবে তিনি গোপনে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। অতঃপর তাঁর কবিতায় শোনা যায়-ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম চেতনা, প্রকাশ পায় প্রণয়ের আকুতি। আর সেখানে এ কবিকে দেখি-

       "আমাদের দুজনের হাত গুলোই লাগবে                              ধুয়ে মুছে আগুন বানাবার জন্য।"

     আসলে কবি জানেন, 'সময়টা খুব সুবিধের নয়।'আর সে কারণে লড়াই খুব সহজ হবে না। তাই শ্রমজীবী মানুষ শাসকের তীব্র আঘাতে লুটিয়ে পড়লেও আবার তাদের উঠে দাঁড়াতে হবে।তবে এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা ভীষণ কঠিন ব্যাপার। কারণ একটা অস্থিরতা,দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণা মানুষকে গ্রাস করতে চলেছে। তবে কবি মানুষকে প্রতিকূল সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে এবং অতঃপর তার পায়ের তলার মাটি শক্ত করে যুদ্ধে জয়ী হয়ে আনন্দে মেতে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন।আসলে-

        'তার সঙ্গে'কবিতাটির প্রেক্ষাপটে আছে স্পেনের গৃহযুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধটি হলো ভয়ানক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, যে যুদ্ধে অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়। আর এখানে মানুষ তার অতি প্রয়োজনকে হারিয়ে নিদারুন দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করতে থাকে। আর সেই কষ্টের চিত্র কবি তার কবিতার প্রথম স্তবকে তুলে ধরেছেন। আর সেখানে আমরা দেখি-

     "সময়টা খুব সুবিধে না।                                                       আমার জন্য অপেক্ষা করো।                                               আপনি খুব সমযোতা করতে পারেন,।"

        তবে সময়টা খুব সুবিধা মত না হলেও কবি তাঁর প্রাণের প্রিয় নারীকে অপেক্ষা করতে বলেন।কারণ তারা দুজন মিলে এই কঠিন কঠোর সময় অতিক্রম করতে চান। শুধু তাই নয়, এই কঠিন সময়টা তিনি তাঁর প্রিয়তমার হাত ধরে এবং মনের দৃঢ়তা নিয়ে এই নিদারুণ অসহায় অবস্থা কাটিয়ে উঠতে চান। অর্থাৎ এখানে আমরা দেখতে পাই কবির কাছে এই বর্তমান সময়টা মোটেই সুবিধাজনক নয়। তাই কবি তার কর্মের উপকরণ গুলি নিয়ে তিনি অন্য কোনখানে চলে যেতে চান। কারণ-

          কবি ভালো করেই জানেন যে, আজকের এই কঠিন সময়ে আমাদের পরস্পর পরস্পরকে ভীষণ প্রয়োজন।কারণ তাদের কাছে আছে কেবলমাত্র দুজোড়া হাত, যে হাত আজ আগুন বানাবার কাজে লাগবে। তবে এই সময় তারা কখনই বিপ্লবের পথে ফুলের স্তবক দিয়ে প্রেম নিবেদন করতে চান না, বরং প্রতিবাদের আগুনে প্রেমকে পুড়িয়ে তাদের ভালোবাসাকে প্রকৃত সোনায় পরিণত করার এটাই উপযুক্ত সময়। আর সেই সময়ে তাদের হাতিয়ার হল ঐক্যবদ্ধতা। আর সেই ঐক্যবদ্ধতার হাত ধরে শাসকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তারা বিজয়ী হবেন এ আশা তাদের মনে আছে।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 •

                    •কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দার্থ•

• কাঁক- কোল,  •রোসো-অপেক্ষা করো,  •কারনেশন ফুল - ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের জাত গোলাপি রঙের ফুল। •তালাস- খোঁজ বা অনুসন্ধান।  •যুযবো- প্রতিহত করব।

•• এখানে "তাঁর সঙ্গে" কবিতার উপর কিছু বহুনির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন (MCQ) এবং উত্তর আলোচনা করা হলো-

১. পাবলো নেরুদা কোন দেশের কবি?

•চিলি

২. "তাঁর সঙ্গে" কবিতাটি বাংলায় কে অনুবাদ করেছেন?

•শক্তি চট্টোপাধ্যায়

৩. "তাঁর সঙ্গে" কবিতায় কবি কাকে 'অপেক্ষা' করতে বলেছেন?

 •প্রেমিকার

৪. কবি তার সঙ্গীর সাথে মিলে কী পার করতে চান?

• কঠিন সময়

৫. কবি ও তাঁর সঙ্গীকে কিসের মতো 'এক জুড়ি' বলা হয়েছে, যারা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এসেছে?

•পাথর ও ফাটল

৬. কবিতার মূল সুর কী?

•প্রেম ও সহমর্মিতা

৭. 'ছোট্ট দুটি হাত' বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

• নির্ভরতা

৮. কবি তার সঙ্গীর হাতে হাত রেখে কী করতে চান?

• কষ্টেসৃষ্টেও উঠে দাঁড়াতে চান

৯. এই কবিতার মাধ্যমে কীসের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে?

• পারস্পরিক সম্পর্ক

১০. কবিতার কোন অংশটি কঠিন পরিস্থিতি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে?                                                                • উত্তরঃ "এক সময় এসেছে, যখন সবকিছু সহজ নয়"


Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...