Skip to main content

জ্ঞানের স্বরূপ (টীকা) ও উৎপত্তি সম্পর্কীয় মতবাদ -।

•            বিশ্লেষক বাক্য ও সংশ্লেষক বাক্য 
বিশ্লেষক বাক্যঃ কোন বাক্যের উদ্দেশ্য পদের ধারণাকে বিশ্লেষণ করলে যদি বিধেয় পদের ধারণা পাওয়া যায়, তাকে বিশ্লেষক বাক্য বলে। যেমন-
     'সকল লাল ফুল হয় লাল।'-এই বাক্যটি হলো বিশ্লেষক বাক্য। কারণ এখানে উদ্দেশ্য পদ 'লাল ফুল'এর ধারণাকে বিশ্লেষণ করলে 'লাল' এর ধারণা পাওয়া যায়। আবার-
            অনেকে মত প্রকাশ করে বলেন যে, বিশ্লেষক বাক্য হল এমন এক প্রকার বাক্য যাকে অস্বীকার করলে স্ববিরোধ দেখা যায়। অর্থাৎ এই বাক্যের বিরুদ্ধ বাক্যটি হলো স্ববিরোধী। যেমন -
       সকল ত্রিভুজ হয় তিনটি কোণ বিশিষ্ট
         কোন কোন ত্রিভুজ হয় তিনটি কোণবিশিষ্ট।
• সংশ্লেষক বাক্য ঃ যদি কোন বাক্যের উদ্দেশ্য পদের ধারণাকে বিশ্লেষণ করলে বিধেয় পদের ধারণাটি পাওয়া না যায়, তাকে বলা হবে সংশ্লেষক বাক্য। সংশ্লেষক বাক্যের বিঁধেয় পদের যে অর্থ তা উদ্দেশ্য পদের মধ্যে বর্তমান থাকে না। বরং বলা যায়, ওই বাক্যের বিধেয় পদ উদ্দেশ্য সম্পর্কে নতুন তথ্য পরিবেশন করে। যেমন-
    কোন কোন রাজনীতিবিদ হয় সৎ, মানুষ হয় মরণশীল, গোলাপ ফুল হয় সুগন্ধি ইত্যাদি। সংশ্লেষক বাক্যের দুটি স্বতন্ত্র পদকে যোগ করা হয়। এই জাতীয় বাক্যের বিরুদ্ধ বাক্য স্ববিরোধী নয়। 'কোন কোন গোলাপ ফুল হয় সুগন্ধি'- এই জাতীয় বাক্যের উদ্দেশ্য পদ 'গোলাপ'-কে বিশ্লেষণ করলে বিধেয়পদ সুগন্ধিকে পাওয়া যায় না। তাই -
         এই বাক্যে বিধেয় পদের অর্থ উদ্দেশ্য পদের মধ্যে নিহিত নেই। আসলে এখানে গোলাপ ও সুগন্ধি এই দুটি স্বতন্ত্র পদকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্বন্ধটি অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল। আর অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে এটি নতুন তথ্যজ্ঞাপক।
•পূর্বতঃসিদ্ধ বাক্যঃ যদি কোন বাক্যের সত্যতা ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতার পূর্বেই সিদ্ধ হয় অর্থাৎ যে বাক্যের সত্যতা নির্ণয়ের জন্য পর্যবেক্ষণ কিংবা পরীক্ষণ এর প্রয়োজন হয় না তখন তাকে বলা হয় পূর্বতঃসিদ্ধ বাক্য।যেমন-
       কোন ত্রিভুজ নয় বর্গাকার। 
        সকল লাল ফুল হয় লাল বর্ণের ইত্যাদি।
এই বাক্য গুলির বৈশিষ্ট্য হলো এরা সার্বিক ও আবশ্যিক। তাই পূর্বতঃসিদ্ধ বাক্যে যে জ্ঞান ব্যক্ত হয়, তাকে বলা হয় পূর্বতঃসিদ্ধ জ্ঞান।
পরতঃসাধ্য বাক্যঃ যদি কোন বাক্যের সত্যতা নির্ণয়ের জন্য ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের উপর নির্ভর করতে হয়, তাকে বলা হয় পরতঃসাধ্য বাক্য।যেমন-
         কোন কোন ফুল হয় সাদা, ইত্যাদি 
    এই জাতীয় বাক্যের বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, এরা সার্বিক সত্য বাক্য নয়। আসলেই এই বাক্যগুলি সম্ভাব্য বা আপতিক। তাই এই ধরনের বাক্যগুলি পরতঃসাধ্য বাক্য। আর পরতঃসাধ্য বাক্যে যে জ্ঞান প্রকাশিত হয় তা অনুমানলব্ধ।

•• ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ-'আমরা ছাত্রদল' এবং SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 



Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...