Skip to main content

ভারতের বিচার বিভাগের (2nd Semester) সক্রিয়তা আলোচনা করো।

ভারতের বিচার বিভাগের সক্রিয়তা আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় সেমিস্টার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর)

              ১) বিচার বিভাগের সক্রিয়তাঃ আমরা বিচার বিভাগের সক্রিয়তা (Judicial Activism) বলতে জানি যে,যখন বিচার বিভাগ প্রচলিত আইন ও সংবিধানের ব্যাখ্যার বাইরে গিয়ে সামাজিক পরিস্থিতি ও জনগণের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের ক্ষমতা সচেতনভাবে প্রয়োগ করে। তবে এর মূল উদ্দেশ্য হল-জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা। কিন্তু-

          এই বিষয়টি একটি বিতর্কিত ধারণা।কারণ কেউ কেউ মনে করেন যে,এটি ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি লঙ্ঘন করে, তবুও অনেকে এটিকে গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে দেখেন।আর সেখানে বিচার বিভাগের সক্রিয়তার দিকগুলি হলো -

               ২) জনস্বার্থ মামলাঃজনস্বার্থ মামলা ভারতে বিচার বিভাগীয় সক্রিয়তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হল জনস্বার্থ মামলা। যেখানে ১৯৮০-এর দশকে এই ধারণার উদ্ভব ঘটে। তবে এর আগে কেবল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিই আদালতে মামলা করতে পারত। কিন্তু জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়াও অন্য যে কেউ বা আদালত নিজেই সমাজের কোনো বৃহত্তর স্বার্থে বা দুর্বল ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার রক্ষায় মামলা শুরু করতে পারে।আর ভারতে এই জনস্বার্থ মামলার পথিকৃৎ হলেন পি. এন.ভগবতী। 

               ৩) মৌলিক অধিকারে সুরক্ষদানঃ কখনো কখনো বিচার বিভাগ সক্রিয় হয়ে জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেখানে সরকার বা অন্য কোনো সংস্থার দ্বারা যখন নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তখন আদালত হস্তক্ষেপ করে সেই অধিকার পুনরুদ্ধার করে।

              ৪) আইন ও শাসন বিভাগের পর্যালোচনাঃ বিচার বিভাগ আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইন এবং নির্বাহী আদেশের সাংবিধানিকতা পর্যালোচনা করে থাকে। যদি কোনো আইন বা আদেশ সংবিধানের পরিপন্থী হয়, তাহলে বিচার বিভাগ তা বাতিল করতে পারে।আর এই বিষয়টি বিচার বিভাগের অন্যতম ক্ষমতা।

                  ৫) ক্ষমতার ভারসাম্যতাঃ বিচার বিভাগীয় সক্রিয়তা আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে একটি ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বিচার বিভাগের অতি সক্রিয়তায় বলা যায় যে-

             ৬) বধূহত্যাঃ বধূহত্যা সংক্রান্ত রায় (১৯৮৩): সুপ্রিম কোর্ট ১৯৮৩ সালে বধূহত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করে, যা সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি-

               ১৯৮৬ ওড়িশার কালাহান্ডি অঞ্চলে অনাহারক্লিষ্ট মানুষের দুর্দশার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট সক্রিয় ভূমিকা নেয় এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেয়। সেই সাথে-

           ১৯৯৭) কর্মস্থলে নারী কর্মীদের যৌন হয়রানি রোধে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশনা জারি করে, যা পরে আইন হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

             ৭) পরিবেশ দূষণ রোধঃ বিভিন্ন সময়ে আদালত পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করেছে, যেমন তাজমহলের সুরক্ষায় শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ, যানবাহনের দূষণ নিয়ন্ত্রণে সিএনজি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা ইত্যাদি।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...