Skip to main content

দ্রব্য=ঈশ্বর=প্রকৃতি,(2nd.Sem) এই উক্তিটি কে করেছেন? ব্যাখ্যা কর।

 "দ্রব্য = ঈশ্বর = প্রকৃতি" - এই উক্তিটি কে করেছেন ? ব্যাখ্যা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় সেমিস্টার দর্শন)।

আলোচ্য মন্তব্যটি আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের অন্যতম প্রভাবশালী চিন্তাবিদ স্পিনোজা করেছেন।

স্পিনোজার ব্যাখ্যাঃস্পিনোজার দর্শনকে সর্বেশ্বরবাদ বলা হয়, যেখানে ঈশ্বরকে প্রকৃতির থেকে আলাদা কোনো সত্তা হিসেবে দেখা হয় না, বরং ঈশ্বর ও প্রকৃতিকে একই জিনিস বলে মনে করা হয়। তার বিখ্যাত ল্যাটিন উক্তি হল- "Deus sive Natura", যার অর্থ "ঈশ্বর অথবা প্রকৃতি"। আসলে স্পিনোজার এই সমীকরণটি বুঝতে হলে তার "দ্রব্য" (Substance) ধারণাকে বোঝা প্রয়োজন:

স্পিনোজার মতে দ্রব্যঃস্পিনোজার মতে, দ্রব্য হল এমন এক সত্তা যা নিজের অস্তিত্বের জন্য অন্য কোনো কিছুর উপর নির্ভরশীল নয়। এটি নিজেই নিজের কারণ এবং এর অস্তিত্বকে বোঝার জন্য অন্য কোনো ধারণার প্রয়োজন হয় না। এটি অসীম, একক এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ। তার মতে, মহাবিশ্বে কেবল একটিই দ্রব্য আছে।

স্পিনোজার মতে ঈশ্বরঃ স্পিনোজা ঈশ্বরকে কোনো ব্যক্তিগত সত্তা হিসেবে দেখেননি যিনি জগত সৃষ্টি করেছেন এবং বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন। বরং, তার কাছে ঈশ্বর হলেন মহাবিশ্বের সকল কিছুর অন্তর্নিহিত সারসত্তা, সকল অস্তিত্বের মূল ভিত্তি। ঈশ্বর হলেন সেই অসীম, স্বয়ংসম্পূর্ণ দ্রব্য।

স্পিনোজার মতে প্রকৃতিঃ স্পিনোজার কাছে প্রকৃতি মানে শুধু আমাদের চারপাশে দেখা গাছপালা, পাহাড়-নদী নয়। তার কাছে প্রকৃতি হল সমগ্র মহাবিশ্ব, যা তার সকল নিয়মকানুন, কার্যকারণ এবং অভিব্যক্তিসহ বিদ্যমান। এই প্রকৃতিই হল সেই অসীম দ্রব্য, অর্থাৎ ঈশ্বর। আর সেখানে -

স্পিনোজা মনে করেন-ঈশ্বর প্রকৃতির বাইরে নন, বরং ঈশ্বরই প্রকৃতি। আমরা যা কিছু দেখি, যা কিছু অনুভব করি, যা কিছু ঘটে - সব কিছুই সেই এক ও অদ্বিতীয় দ্রব্যের প্রকাশ বা "মোড" (Modes)। অর্থাৎ, এই মহাবিশ্বের সকল বস্তু ও ঘটনা ঈশ্বরেরই ভিন্ন ভিন্ন রূপ। ঈশ্বর কোন দূরবর্তী শাসক নন, বরং তিনি মহাবিশ্বের প্রতিটি কণা, প্রতিটি নিয়ম, প্রতিটি অস্তিত্বের মধ্যে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তার কাছে, ঈশ্বর ও প্রকৃতি এক এবং অভিন্ন সত্তা।আর-

                     এই ধারণার মাধ্যমে স্পিনোজা প্রচলিত ধর্মীয় ঈশ্বরের ধারণা থেকে সরে এসে এক যুক্তিনির্ভর, প্রাকৃতিকতাবাদী ঈশ্বরকে উপস্থাপন করেন।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...