জীবনানন্দ দাশের 'সুচেতনা'(4th. Semester)কবিতাটি অবলম্বন করে দেখাও যে, গভীর আশাবাদ এবং জন্মান্তরবাদের ধারণা এই কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে,- তা আলোচনা করো ।
জীবনানন্দ দাশের 'সুচেতনা' কবিতাটি অবলম্বন করে দেখাও যে, গভীর আশাবাদ এবং জন্মান্তরবাদের ধারণা এই কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে,- তা আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, চতুর্থ সেমিস্টার, বাংলা মেজর)
আলোচনার শুরু হতেই আমরা বলে রাখি, জীবনানন্দ দাশের 'সুচেতনা' কবিতাটি তাঁর 'বনলতা সেন' গ্রীষ্মের অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আর সেই কাব্যগ্রন্থের গভীর কবিতা এবং কবির দাওয়ার শব্দ আশ্চর্য জীবন ফুটে কবিতা চিন্তা। আর আমাদেরকে আলোচিত কবিতা আশাবাদ এর মতো গভীর জন্ম অত্যন্ত নিপুণভাবে প্রকাশ করা হয়েছে 'সুচেতনা' কবিতায়। আর সেখানে আমরা-
•কবির আশাবাদ•
'সুচেতনা' কবিতায় আমরা পাঠই কবির আশাবাদের দিকটি শিখেছি- কবিতাটি শুরু হতে পারে লেখক "পৃথিবীর গভীর গভীর অসুখ" - এর কথা। যেখানে কবি মানবজীবনের সংগ্রামী, রূঢ়তা, রক্তক্ষয়ীতা এবং নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র বাস্তবায়িত হয়েছে। মহল সভ্যতার এই ময় চিত্র পাঠকের মনে বিষাদের জন্মও, কবি এখানে থেমে থাকেনি কবি-
'সুচেতনা'র কাছে এক আলোর দিশা খুঁজেছেন। আসলে 'সুচেতনা' এখানে কোনো ব্যক্তিগত প্রয়সী নয়, এক শুভ চেতনা, শুভবুদ্ধি, যা মানবজাতিকে এই মুক্তি থেকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে। দায়বদ্ধতা কবির কণ্ঠে আমরা পাই- পাইয়া এই পথ আলো জ্বলে- এই পথ শুনতে শান্তি ক্রমমুক্তি হবে; সে অনেক ক্ষমতার মনীষীর কাজ;
প্রকৃতপক্ষে এই পঙ্ক্তিটি কবির গভীর আশা ব্যাক্ত হয়েছে। তাই তিনি বিশ্বাস করেন, বর্তমান অন্ধকার দেখতে এক শুভতর ভবিষ্যৎ দেখতে আর বিদ্যমান থেকে মানব-সমাজ আরও উন্নত হবে। তবে এই পরিবর্তন কোনম লড়াই হবে না। কারণ সে "অনেক অনুশীলনকারী মনীষীর কাজ; দেখতে, এর পরীক্ষায় তিনি আস্থাশীল আজ তিনি-'
"ক্লান্ত, দূরের দৃষ্টিহীন নাবিক" - এর মতো কবিও এই উন্নত মানব-সমাজ ঘাড়ের স্বপ্ননযও তা "আজ নয়, ঢের অন্তিম প্রভাতে" ঘটবে। এই 'অন্তিম আভাত' অদূরে আগমন না প্রগতি, তার মূল অবধারিত – এই বিশ্বাসের কবির আশাবাদ দিয়ে। সর্বোচ্চ বর্তমান দুঃখকন, হানাহানি তিনি মানবজাতির ক্রমোতি এবং শুভ চেতনার জয় দেখেছেন, তার আশা মনোরমভাবে পরিচায়ক।
• কবির জন্মান্তর •
সুচেতা কবিতায় কবির জন্মান্তরবাদের বার্তা পরোক্ষভাবে এবং অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে প্রকাশ। জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রকৃতি, ইতিহাস এবং মানবজন্মের সামাজিক সম্পর্ক বারবার আসে। এই কবিতাতেও সেই প্রবনতা দেখা যায়। আর সেখানে বলেন- মাটি-পৃথিবীর টানে মানবজন্মের গঠন কখনই না এলেই ভালো হ'ত নিজের ক'রে;
আবার পরক্ষনেই কবিতা বলেন-
"এসে যেটার লাভ হ'ল সে গভীর সকলে শিশির শরীর ছুঁয়ে সমুজ্জল ভোরে।"
প্রকৃতপক্ষে এই সকল পঙ্ক্তিতে জন্মান্তরবাদের একটি নিখুঁত আভাস পাওয়া যায়। 'কখন' এই প্রশ্নের মধ্যে মানবজন্মের পূর্বাপর উত্তর একটি ইঙ্গিত রয়েছে। মনে হয় আত্মা বারবার এই আসে, নতুন করে জন্ম নেয়। পাশাপাশি---
•'সুচেতনা' কবিতায় জন্মান্তরবাদের ধারণাটি সরাসরিভাবে উল্লিখিত না হলেও, কয়েকটি পঙক্তিতে এর একটি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত পাওয়া যায়।যে ইঙ্গিত কবির নিজস্ব বিশ্বাস ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে জড়িত। আর সেখানে পাই-
•মানবজন্মের অনুভবঃ মানবজন্মের কবি যখন বলেন, "মাটি-পৃথিবীর টানে মানবজন্মের ঘরে কখন এসেছি, না এলেই ভালো হ'তো অনুভব ক'রে; এসে যে গভীরতর লাভ হ'লো সে-সব বুঝেছি শিশির শরীর ছুঁয়ে সমুজ্জ্বল ভোরে", তখন তিনি মানবজন্মের প্রতি এক মিশ্র অনুভূতির কথা জানান। প্রথমে মনে হয়েছে, এই পৃথিবীতে না এলেই ভালো হতো, কারণ পৃথিবীর রূপ দেখে তিনি হতাশ। কিন্তু পরে তিনি এই মানবজন্মের "গভীরতর লাভ" উপলব্ধি করেছেন। এই লাভ হলো জীবনের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান অর্জন, এবং শুভ চেতনার বিকাশ।
•পুনরাবৃত্তি ও অভিজ্ঞতাঃ যদিও কবিতায়'জন্মান্তর' শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি, "দেখেছি যা হ'লো হবে মানুষের যা হবার নয়— শাশ্বত রাত্রির বুকে সকলি অনন্ত সূর্যোদয়" এই পঙক্তিতে এক ধরনের কালচক্রের পুনরাবৃত্তি এবং অভিজ্ঞতার সঞ্চয়ের প্রতিধ্বনি শোনা যায়।যেটি এমন একটি ধারণাকে নির্দেশ করে যেখানে মানবাত্মা বা চেতনা বিভিন্ন জন্ম বা পরিস্থিতিতে বারবার ফিরে আসে। নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং পরিশেষে শাশ্বত সত্যের দিকে এগিয়ে যায়।
•পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,'সুচেতনা' কবিতায় জীবনানন্দ দাশ মানবজাতির বর্তমান দুর্দশা দেখেও ভবিষ্যতের প্রতি এক অদম্য আশাবাদ পোষণ করেছেন। এই আশাবাদ তার সুচেতনা বা শুভচেতনার উপর নির্ভরশীল, যা মানবসমাজকে এক উন্নততর ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করবে। একই সাথে, জন্মান্তরবাদের পরোক্ষ উল্লেখ মানবজীবনের ধারাবাহিকতা এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আত্মিক অগ্রগতির একটি দিক তুলে ধরে।
ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏
প্রথম, এই কবিকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, "না এল ভালো হ'তো ক'রে" - এই নির্তয়ের কারণ হতে পারে আশা-রক্ত-সফলতা, গভীর অসুখ। কিন্তু-
কবিরান্দ দাশ পরে এই জীবন গভীর তাৎপর্য আলোচনা করতে পারেন। "শিশির শরীর ছুঁয়ে সমজ্জ্বল ভোরে" প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এবং "দেখেছি যা হ'লো যা মানুষের উপস্থিতি নয়— শাশ্ব রাত্রি বুকে সকলেন্ত সূর্যোদয়" - এই পঙ্ক্তি মধ্যকবি জীবন এক গভীরতর অর্থ খুঁজে পান।
এখানে জন্মান্তরবাদ পুনর্নির্মাণের শারীরিক ধারণা নয়, চেতনার এক বিরামহীন প্রবাহের ইঙ্গিত দেয়। আত্মা বা চেত বারবার এই ফিরে আসা আসা এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বিকশিত প্রক্রিয়া, তারই একটি দাশনিক প্রতিচ্ছবি এখানে বিদ্যমান।আর-
মানুষ যা "হবার নয়" তাশাত রাত্রির বুকে "নন্ত সূর্যোদয়"-এ পরিণত হয়, অন্য জীবন আপাত বা সমাপ্তিও এক বৃহত্তর, অনন্ত ভ্রমণের অংশ, যেখানে শেষ বলে কিছু নেই, কেবল নতুন সুচনা। এই স্বপ্ন জন্মান্তরবাদের মূল চেতনার সঙ্গে সংতিপূর্ণ, যেখানে জন্ম-মৃত্যু এক অবিচ্ছন্ন চক্রের অংশ।
•পরিশেষে আমরা বলতে পারি,'সুচেতনা'কবিতায় জীবনানন্দ দাশ নিদারুন বর্তমান স্বপ্ন বাস্তবতার মধ্যেও মানবমুক্তির এক সুদূরপ্রসারীর বিষয় তুলে ধরেছেন। যেখানে 'সুচেতনা' নামক শুভ চেতনার মাধ্যমে এই গভীর অসুখ থেকে মুক্তি সম্ভব। এই আশাবাদের ছাড়াও, তিনি- মানবতার পুনরাগমন এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চেতনার উন্মোচনকে জন্মান্তরবাদের এক নতুন ছাত্র। এই দুই সমালোচনা কবিতাটি এক গভীর দার্সিক স্তরে উত্তীর্ণ করা হয়েছে, যা পাঠক সক্রিয়তা এবং প্রতিবাদকে রাজনৈতিক ভাবনায় উদ্বুদ্ধ করেছে।
Comments
Post a Comment