Skip to main content

আরণ্যক উপন্যাসের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আরণ্যক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়/ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় সংসদ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা)।

"পৃথিবীর মধ্যে এমন আর নেই।"-কথাটি কে কাকে বলেছে? এমন আর নেই বলতে কি বোঝানো হয়েছে? আলোচনা করো।

উত্তরঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'আরণ্যক' রচনাংশে এই কথাটি কথক সত্যচরণকে অনার্য রাজকন্যা ভানুমতী বলেছে।

     এমন আর নেই বলতে রিজার্ভ ফরেস্ট এর মধ্যে প্রবাহিত ঝাটি নামক ঝরনার প্রতি  নির্দেশ করা হয়েছে। যেখানে রাজকন্যা ভানুমতীর জবানীতে ঝাটি ঝরনার বিবরণে জানা যায় যে, ঝাটি ঝরনার আরো আরো ভয়ংকর জঙ্গলের অবস্থান। তবে অনুমান করা যেতে পারে যে, জনমানবহীন আদি অন্তহীন ওই বনভূমিতে অত্যাধিক বুনো হাতির আবাসস্থল রয়েছে। আবার চারিদিকে জীবজন্তু ও বৃক্ষলতার জগতের মধ্যেও অগণিত বনময়ূরের অবাধ বিচরণ আছে।আর এমন স্থানকে ভানুমতী 'পৃথিবীর মধ্যে এমন আর নেই' বলে যে আবেগ বিহ্বলতার পরিচয় দিয়েছে, তার মধ্যে কোনো অতিশয়োক্তির প্রকাশ ঘটেনি।

২) "ভানুমতীর পৃথিবী কতটুকু জানিতে বড় ইচ্ছা হইল।"-ভানুমতী কে? তার পৃথিবীর পরিচয় কতটুকু তা কিভাবে প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তরঃ 'আরণ্যক' রচনাংশের শীর্ষক অংশে ভানুমতী হল অনার্য সাঁওতাল গোষ্ঠীর অবহেলিতা অরণ্যরাজ দোবরু পান্নার প্রপৌত্রী।

            কথক সত্যচরণ তার কর্মোপলক্ষে ওই জঙ্গলে যাতায়াত করার কারণে অনার্য গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের সাথে পরিচয় হয়। আর সেই পরিচয় পরবর্তী সময়ে অন্তরঙ্গ হওয়ার কারণে একদিন ভানুমতীর সাথে কথোপকথনে তার এই জঙ্গলের সীমিত গণ্ডির বাইরে জগৎ সম্পর্কে কি ধারণা আছে,তার জানতে উৎসুক হয়ে প্রথমে তার কাছে যখন জানতে চাওয়া হল, সে কোন শহর দেখেছে কিনা। আর ভানুমতী সেই প্রশ্নের উত্তরে জানায় -"না বাবুজি।"

       অতঃপর কথক ভানুমতীর সাথে কথোপকথনে জানতে পারে যে, সে গয়া,মুঙ্গের ও পাটনা শহরের নাম জানে। কিন্তু কলকাতা শহরের নাম এবং তার অবস্থান তার অজানা। এরপর তাকে আমাদের দেশের নাম জানতে চাইলে সে বলেছিল-

            " আমরা গয়া জেলায় বাস করি।"

আসলে সে ভারতবর্ষের নাম পর্যন্ত জানে না বলেই সে পাটনা গয়া বা মুঙ্গের মতো স্থান ভেবে কতককে জানতে ছেয়েছে-

               "ভারতবর্ষ কোনদিকে?"

আসলে ভানুমতীর তার বাসস্থানের নির্দিষ্ট গণ্ডি চমকটি টোলার গন্ডির বাইরে কখনও না যাওয়ার কারণে সে নির্দিষ্ট গয়া,মুণ্ডের ও পাটনার বাইরে অন্য কোনো স্থান সম্পর্কে অবহিত নয়।

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...