Skip to main content

কমিটি ব্যবস্থা সম্পর্কে(2nd.Sem) আলোচনা করো।

'কমিটি ব্যবস্থা' (Parliamentary Committee System) সম্পর্কে আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর)।

            •আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে,সংসদীয় কমিটি ব্যবস্থা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) তার কার্যাবলী আরও কার্যকর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করে। সংসদের মূল কাজ হলো আইন প্রণয়ন, সরকারের কার্যাবলী পর্যালোচনা এবং বাজেট অনুমোদন। কিন্তু সংসদীয় অধিবেশনের সীমিত সময়ে সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হয় না। তাই, নির্দিষ্ট কাজের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়, যা সংসদের পক্ষে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করে।

কমিটিগুলি সাধারণত দুই প্রকারের হয়:

১)স্থায়ী কমিটিঃ এই কমিটিগুলি স্থায়ী প্রকৃতির এবং প্রতি বছর বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর গঠিত হয়। এদের কাজ নিরন্তর চলতে থাকে।

২)এ্যাডহক কমিটিঃ এই কমিটিগুলি নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য পূরণের জন্য গঠিত হয় এবং সেই উদ্দেশ্য সাধিত হলেই তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। আসলে-

                সংসদীয় কমিটি ব্যবস্থা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) তার কার্যাবলী আরও কার্যকর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করে। সংসদের মূল কাজ হলো আইন প্রণয়ন, সরকারের কার্যাবলী পর্যালোচনা এবং বাজেট অনুমোদন। কিন্তু সংসদীয় অধিবেশনের সীমিত সময়ে সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হয় না। তাই, নির্দিষ্ট কাজের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়, যা সংসদের পক্ষে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করে।আর সেখানে-

             •কমিটি ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো সংসদকে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা। এর মাধ্যমে সংসদ সরকারের ওপর নজরদারি রাখতে পারে, বাজেট ও বিভিন্ন বিল নিয়ে গভীর আলোচনা করতে পারে এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে। তবে স্থায়ী কমিটিগুলিকে আরো কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়।সেই ভাগ গুলি হল-

ক) অর্থ সংক্রান্ত কমিটি:সরকারি হিসাব কমিটি (PAC): সংসদের সবচেয়ে পুরোনো আর্থিক কমিটি।আর এর কাজ হলো কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG)-এর রিপোর্ট পরীক্ষা করা। এছাড়াও এই কমিটি সরকারের ব্যয়ভারের বৈধতা এবং হিসাবের সঠিকতা যাচাই করে। এছাড়াও -

   সরকারী প্রাক্কলন কমিটির মাধ্যমে সরকারের ব্যয়ের প্রাক্কলন ও বাজেট পরীক্ষা করা। আর এটি সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা ও মিতব্যয়িতার ওপর নজর রাখে। পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগ সংক্রান্ত কমিটির মাধ্যমে  সরকারি সংস্থা বা রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগগুলির রিপোর্ট এবং অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে।

খ)বিভাগীয় স্থায়ী কমিটিঃবর্তমানে ২৪টি বিভাগীয় স্থায়ী কমিটি রয়েছে। আর সেখানে প্রতিটি কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩১ জন (২১ জন লোকসভা থেকে এবং ১০ জন রাজ্যসভা থেকে)। আর এই কমিটিগুলির প্রধান কাজ হলো- সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্ট পরীক্ষা করা।মন্ত্রকের বাজেটের দাবি পরীক্ষা করা। এছাড়াও বিভিন্ন বিলের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করে রিপোর্ট পেশ করা।

গ) তদন্ত কমিটিঃএরা সংসদের কার্যপ্রণালী ও সদস্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তদন্ত করে। যেমন - আবেদন কমিটি, বিশেষাধিকার কমিটি ইত্যাদি। যেখানে-

 সিলেক্ট কমিটিঃ নির্দিষ্ট বিল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও বিশ্লেষণের জন্য এই কমিটি গঠিত হয়। আবার তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বোফর্স কেলেঙ্কারি বা যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের মতো বড় ধরনের তদন্তের জন্য এই কমিটি গঠিত হয়।

কমিটি ব্যবস্থার গুরুত্বঃ কমিটি ব্যবস্থার কমিটিগুলি দীর্ঘ ও বিস্তারিত আলোচনা করে সংসদীয় অধিবেশনের সময়টা সাশ্রয় করে দেয়। এছাড়াও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সদস্যরা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে গভীর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারেন। এরই পাশাপাশি,কমিটিগুলো সরকারের কাজ এবং ব্যয়ভারের ওপর নজর রাখে, যা সংসদীয় গণতন্ত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করে। আর সেই কারণেই-

            সংসদীয় কমিটি ব্যবস্থা হলো আইন প্রণয়ন এবং সরকারের ওপর নজরদারির একটি অপরিহার্য অঙ্গ। এটি গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করে তোলে।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...