Skip to main content

জৈন দর্শন মতে(4th. Sem.Phil) পঞ্চমহাব্রত গুলি আলোচনা করো।

জৈন দর্শন মতে পঞ্চমহাব্রত কী? সংক্ষেপে পঞ্চমহাব্রত গুলি আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ সেমিস্টার দর্শন মাইনর)।

          •আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে,জৈন ধর্মাবলম্বীদের জন্য মোক্ষ বা মুক্তিলাভের পথ ছিল অত্যন্ত কঠোর। মুক্তিলাভের সেই পথ অনুসরণ করতে গিয়ে সন্ন্যাসী ও সাধুদের বেশ কিছু নীতি ও অনুশাসন পালন করতে হয়।আর  এই কঠোর অনুশাসন গুলোই পঞ্চ মহাব্রত নামে পরিচিত। তবে সাধারণ মানুষের জন্য এই ব্রতগুলো কিছুটা শিথিল করা হলেও সন্ন্যাসীদের জন্য এগুলো কঠোরভাবে পালনীয়। আর সেই মহাব্রত গুলি হলো-

•১)অহিংসাঃ আমরা জানি যে,জৈন ধর্মের মূল ভিত্তি হলো অহিংসা। এর অর্থ শুধু প্রাণীর প্রতি শারীরিক হিংসা থেকে বিরত থাকা নয়, বরং মন, বাক্য এবং কর্মেও কোনো জীবের প্রতি হিংসার চিন্তা না করা। জৈন বিশ্বাস অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রতিটি দ্রব্যে জীবের অস্তিত্ব রয়েছে। তাই, চলন্ত বা নিশ্চল কোনো জীবকেই কষ্ট দেওয়া বা হত্যা করা পাপ।

•২) সত্যঃ সত্য ব্রতের অর্থ হলো সর্বদা সত্য কথা বলা। তবে শুধু সত্য বলাই যথেষ্ট নয়, যা হিতকর ও উপকারী তাই বলা উচিত। মিথ্যাকে পরিহার করে মন, বাক্য এবং কর্মের মধ্যে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করাই হলো সত্যব্রত।

•৩) অস্তেয়ঃ 'স্তেয় শব্দের অর্থ হলো চুরি বা চৌর্যবৃত্তি। তাই, "অস্তেয়" মানে হলো চুরি না করা। এর অর্থ শুধু অন্যের জিনিস চুরি করা থেকে বিরত থাকা নয়, বরং জোর করে বা কৌশলে অন্যের কোনো কিছু গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকা।

•৪) ব্রহ্মচর্যঃ ব্রহ্মচর্য ব্রতের অর্থ হলো ইন্দ্রিয়গুলোকে জয় করা। যার অর্থ হলো শারীরিক, মানসিক ও বাচিক, সব ধরনের যৌন সম্পর্ক এবং কামনা থেকে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত রাখা। জৈন সন্ন্যাসীরা এই ব্রত কঠোরভাবে পালন করেন। অবশেষে -

•৫) অপরিগ্রহঃ 'পরিগ্রহ' মানে হলো কোনো কিছুর প্রতি আসক্তি বা লোভ। "অপরিগ্রহ" ব্রতের অর্থ হলো কোনো পার্থিব বস্তুর প্রতি আসক্তি বা লোভ পরিত্যাগ করা। এটি বোঝায় যে সন্ন্যাসীদের কোনো সম্পত্তি বা ধনসম্পদ জমা করা উচিত নয় এবং যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকুই গ্রহণ করা উচিত। তাই আমরা -

            •পরিশেষে বলতে পারি যে,এই পাঁচটি মহাব্রত একত্রে জৈন দর্শনের নৈতিক জীবনের সারকথা। প্রথম চারটি ব্রত মহাবীরের পূর্ববর্তী তীর্থংকর পার্শ্বনাথের উপদেশ ছিল, যা চতুর্যাম নামে পরিচিত। পরবর্তীতে মহাবীরের সঙ্গে ব্রহ্মচর্য ব্রতটি যুক্ত করে এটিকে পঞ্চ মহাব্রতে রূপান্তরিত করেন।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ব্যাখ্যা সাজেশন ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDARBAN Youtube channel 🙏 

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...