Skip to main content

ভারতের নির্বাচন কমিশনের গঠন (2nd. Sem) ও কার্যাবলী আলোচনা করো।

ভারতের নির্বাচন কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী আলোচনা করো (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর)।

        আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে,ভারতের নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত সাংবিধানিক সংস্থা।আর এই সংস্থাটি ভারতের সংসদ, রাজ্য বিধানসভা, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির নির্বাচন পরিচালনা করে। তবে সংবিধানের ৩২৪ ধারা অনুসারে, এই কমিশনের হাতে নির্বাচন সংক্রান্ত তত্ত্বাবধান, পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়েছে।আর সেখানে ভারতের নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়ায় আমারা দেখি-

      •১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠার সময় নির্বাচন কমিশন একজন মাত্র মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়ে গঠিত ছিল। অতঃপর ১৯৮৯ সালের নির্বাচন কমিশনার সংশোধনী আইন অনুসারে, এটিকে একটি বহু-সদস্যীয় সংস্থা করা হয়। তবে বর্তমানে, নির্বাচন কমিশন একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং দুজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে গঠিত। যেখানে সকল কমিশনারকে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করেন।তাঁদের কার্যকালের মেয়াদ ৬ বছর অথবা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত, যেটি আগে হবে। যেখানে 

                 •মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির অপসারণ পদ্ধতির অনুরূপ পদ্ধতি অনুসরণ করে পদ থেকে অপসারণ করা যায়। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সুপারিশ প্রয়োজন হয়।কমিশনারদের ক্ষমতা এবং বেতন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সমতুল্য। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

           •নির্বাচন কমিশনের কার্যাবলী•

         •নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণঃ কমিশন ১৯৫২ সালের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন অনুযায়ী প্রতি দশ বছর অন্তর জনগণনা অনুসারে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলির সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে।

        •ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও হালনাগাদঃকমিশন নিয়মিতভাবে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে এবং তা হালনাগাদ করে। নির্বাচনী জালিয়াতি রোধ করার জন্য ১৯৯৩ সালে ভোটারদের ফটো পরিচয়পত্র (EPIC) চালু করা হয়।

       •নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাঃ কমিশন লোকসভা, রাজ্য বিধানসভা, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে মনোনয়ন জমা দেওয়ার তারিখ, ভোটগ্রহণ, গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার তারিখ অন্তর্ভুক্ত থাকে।

       •রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি ও প্রতীক বরাদ্দঃ কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে জাতীয় ও রাজ্যস্তরের দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং তাদের নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ করে।

        •আদর্শ আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রয়োগঃ কমিশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দল এবং প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধি তৈরি করে। এই বিধিনিষেধগুলি নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করে।

       •নির্বাচন বাতিল বা স্থগিতঃ নির্বাচন চলাকালীন কোনো ধরনের অনিয়ম, জালিয়াতি বা সহিংসতা দেখা দিলে কমিশন সেই নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও কমিশন নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তি করে থাকে।

       •আইনসভার সদস্যদের পরামর্শঃকোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অযোগ্য বিবেচিত হলে, কমিশন রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালকে এই বিষয়ে পরামর্শ দেয়। পাশাপাশি  নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কমিশন বিভিন্ন স্থানে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে।

ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL 🙏 

Comments

Popular posts from this blog

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...