গিরি এবার আমার উমা এলে আর উমা পাঠাবো না। বলে বলবে লোকে মন্দ কারোর কথা শুনব না।• ছন্দলিপি হলো মাত্রাবৃত্ত ছন্দ।
ছন্দলিপি নির্ণয়
এই পংক্তিগুলোর মাত্রা বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই, এটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দের নিয়ম অনুসরণ করে। মাত্রাবৃত্ত ছন্দে মুক্তাক্ষর (যে অক্ষর স্বরধ্বনি দিয়ে শেষ হয়) ১ মাত্রা এবং রুদ্ধাক্ষর (যে অক্ষর ব্যঞ্জনধ্বনি দিয়ে শেষ হয়) ২ মাত্রা পায়।
প্রথম পংক্তি: "গিরি এবার আমার উমা এলে আর উমা পাঠাবো না।"
এই পংক্তিটির পর্ব বিভাজন এবং মাত্রা গণনা করলে আমরা পাই:
* গি-রি-এ-বার (গি-রি-এ = ১+১+১= ৩ মাত্রা; বার = ২ মাত্রা) = ৫ মাত্রা
* আ-মা-র (আ-মা = ১+১ = ২ মাত্রা; র = ২ মাত্রা) = ৪ মাত্রা
* উ-মা-এ-লে (উ-মা-এ-লে = ১+১+১+১) = ৪ মাত্রা
* আ-র (আ = ১ মাত্রা; র = ২ মাত্রা) = ৩ মাত্রা
* উ-মা-পা-ঠা-বো-না (উ-মা-পা-ঠা-বো-না = ১+১+১+১+১+১) = ৬ মাত্রা
এখানে পর্বগুলো নির্দিষ্ট মাত্রায় বিন্যস্ত না হলেও, রুদ্ধাক্ষরগুলো দুই মাত্রা পাওয়ায় এটি স্পষ্টতই মাত্রাবৃত্ত ছন্দের উদাহরণ।
দ্বিতীয় পংক্তি: "বলে বলবে লোকে মন্দ কারো কথা শুনবো না।।"
* ব-লে-বল-বে (ব-লে = ১+১=২ মাত্রা; বল = ২ মাত্রা; বে = ১ মাত্রা) = ৫ মাত্রা
* লো-কে-মন-দ (লো-কে = ১+১ = ২ মাত্রা; মন = ২ মাত্রা; দ = ১ মাত্রা) = ৫ মাত্রা
* কা-রো-ক-থা (কা-রো = ১+১=২ মাত্রা; ক-থা = ১+১ = ২ মাত্রা) = ৪ মাত্রা
* শুন-বো-না (শুন = ২ মাত্রা; বো = ১ মাত্রা; না = ১ মাত্রা) = ৪ মাত্রা
এই পংক্তিগুলোতেও রুদ্ধাক্ষরগুলো (যেমন: 'বার', 'র', 'বল', 'মন', 'শুন') স্পষ্টতই দুই মাত্রা হিসেবে গণ্য হচ্ছে, যা মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
Comments
Post a Comment