Skip to main content

শিক্ষার সামাজিক সংস্থা বলতে কী বোঝো? সামাজিক গোষ্ঠীর প্রকারভেদ গুলি উদাহরণসহ আলোচনা কর।

 সামাজিক সংস্থা বলতে কি বোঝ?


           শিক্ষার সামাজিক সংস্থা হল এমন এক সমাজস্থ স্থান যেখান থেকে বিশেষ কোন বিষয়ে সমাজে বসবাসকারী মানুষকে সেবা দান করা হয়। আর সেবাদানের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো সামাজিক সংস্থা। আর--


        এই ধরনের সামাজিক সংস্থাগুলি ব্যক্তির বিশেষ বিশেষ সামাজিক ও কৃষ্টিমূলক আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করে থাকে। যার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং তার অন্তর্নিহিত সৃজনাত্মক ক্ষমতার বিকাশ ঘটে। এছাড়াও  এই সংস্থা গুলির মাধ্যমে সদস্যদের আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রিত হয়।


সামাজিক সংস্থার শ্রেণীবিভাগ:-


          সামাজিক সংস্থা ব্যক্তিকে সমাজের কার্যকরী ও বাঞ্ছিত সদস্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে থাকে। তবে বর্তমানে আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সংস্থা আছে। আর সেই সকল সংস্থাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংস্থাগুলি হল- পরিবার, বিদ্যালয়, ক্লাব, ধর্মীয় সংস্থা, ক্রিড়া সংস্থা প্রভৃতি।


সামাজিক গোষ্ঠীর শ্রেণীভাগ বা প্রকারভেদ গুলি উদাহরণসহ আলোচনা কর।


উত্তর - গোষ্ঠীর সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্কের মাত্রা ও প্রকৃতি, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, সংগঠনের রূপরেখা এবং গোষ্ঠীর স্থায়িত্বের উপর ভিত্তি করে সামাজিক গোষ্ঠী সমূহকে নিম্নে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করে দেখানো হলো--


১) প্রাথমিক গোষ্ঠী-

             প্রাথমিক গোষ্ঠীকে পারস্পরিক সম্পর্কের এক চরম অন্তরঙ্গতাভিত্তিক সংগঠন বলে বিবেচনা করা হয়। এই গোষ্ঠী মুখোমুখি গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত। যেখানে অন্তরঙ্গতা প্রত্যক্ষ ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত হয়। কেননা মানুষের সামাজিক প্রকৃতি ও আদর্শ গঠনে এর ভূমিকা আছে। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল পরিবার, বন্ধু, খেলার দল, প্রভৃতি। আর এই সকল গোষ্ঠী সদস্যদের ব্যক্তিসত্তা রক্ষা করে।


২) অন্তর্গোষ্ঠী ও বহির্গোষ্ঠী-

              অধ্যাপক সাম্নার সামাজিক গোষ্ঠীকে দুই ভাগে ভাগ করে বলেছেন- কোন প্রাথমিক বা গৌণ গোষ্ঠী, আমরা যার সদস্য এবং যে গোষ্ঠীর প্রতি আমাদের প্রবল আনুগত্য,সহানুভূতি ও সহযোগিতা রয়েছে, রয়েছে একাত্মাবোধ । আর সেটি হলো অন্তগোষ্ঠী।আর-


      যেসব গোষ্ঠীর সাথে একাত্মবোধ করা যায় না এবং অনেক ক্ষেত্রে বৈরীভাব প্রাধান্য পায়, সেইসব গোষ্ঠী হলো বহির্গোষ্ঠী।


৩) ঐচ্ছিক গোষ্ঠী-

         যেসব সদস্যরা নিজেদের ইচ্ছায় গোষ্ঠীর সদস্যপদ গ্রহণ করে থাকে তাকে ঐচ্ছিক গোষ্ঠী বলে ।যেমন রাজনৈতিক দল।


৪) অনৈচ্ছিক গোষ্ঠী-

             যে গোষ্ঠীর সদস্যরা ইচ্ছা করে নয়, বরং জন্মগতভাবে সদস্যপদ লাভ করে সেই গোষ্ঠীকে অনৈচ্ছিক গোষ্ঠী বলা হয়। যেমন পরিবার।


৫) স্থায়ী গোষ্ঠী ও ক্ষণস্থায়ী গোষ্ঠী- 

           সামাজিক গোষ্ঠীগুলোকে স্থায়িত্বের পরিপ্রেক্ষিতে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। আর  সেই ভাগগুলি হলো-স্থায়ী গোষ্ঠী ও ক্ষণস্থায়ী গোষ্ঠী। এখানে স্থায়ী গোষ্ঠী হল পরিবার, জাতি ইত্যাদি এবং ক্ষণস্থায়ী গোষ্ঠী হলো ভিড়(crowd)।


৬) বিধিবদ্ধ গোষ্ঠী ও অবিধিবদ্ধ গোষ্ঠী- 

         যে গোষ্ঠীতে সদস্যদের সুনির্দিষ্ট আচরণ দেখা যায় এবং বিধিগত নিয়ম কানুন মেনে যে গোষ্ঠীর পরিচালিত হয় সেটাই হলো বিধিবদ্ধ গোষ্ঠী। আর এই বিধিগত গোষ্ঠীর উদাহরণ হল শ্রেণীকক্ষ।

      কিন্তু কোন বাঁধাধরা নিয়ম কানুন ছাড়াই যে গোষ্ঠী পরিচালিত হয় তাকে অবিধিবদ্ধ গোষ্ঠী বলা হয়। যেমন কলেজ ক্যান্টিন।

৭) নির্দেশক গোষ্ঠী-

      মানুষের প্রকৃতি স্বাভাবিকভাবে অনুকরণ প্রিয়। অন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অবস্থানগত পরিবর্তন করার জন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাকে অনুসরণ করে থাকে। এখানে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাকে অনুসরণ করে, তাকে বলা হয় নির্দেশক গোষ্ঠী। আর সামাজিক অনুকরণের মধ্যে দিয়ে এই গোষ্ঠী গঠিত হয় । তবে নির্দেশক গোষ্ঠীর ধারণাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন সমাজ বিজ্ঞানী হার্বাট হাইমেন।


      



Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...