Skip to main content

বিবেকানন্দের জীবন দর্শন আলোচনা করো। প্রথম সেমিস্টার,(ইউনিট IV, Minor,Education)

 বিবেকানন্দের জীবন দর্শন আলোচনা করো।

প্রথম সেমিস্টার,(ইউনিট IV, Minor,Education)


ভূমিকা -বিবেকানন্দের জীবন দর্শন,শিক্ষা সংক্রান্ত মতবাদ ভারতীয় শিক্ষাকে সমৃদ্ধ করেছে। আসলে বিবেকানন্দের কাছে শিক্ষার তাৎপর্য 'মানুষ গড়া'। তাই তিনি ঘোষনা করেন-

           "Man making is my mission."

বিবেকানন্দের জীবন দর্শন শিক্ষার লক্ষ্য এবং শিক্ষা পদ্ধতি সমস্ত চিন্তায় বেদান্ত দর্শন থেকে উৎসারিত। যেখানে--

       বিবেকানন্দ খুব ভালো করেই উপলব্ধি করেন যে দুর্দশাগ্রস্থ ভারতবর্ষের মানুষকে জাগ্রত করতে হলে কুসংস্কার মুক্ত ও বিজ্ঞান সচেতন করে তুলতে হবে। পাশাপাশি মানুষদের মধ্যে আধ্যাত্মিক বিকাশ ঘটাতে হবে। আর এ কাজ করতে হলে চাই যথার্থ শিক্ষা-

              "Man making Education."

আসলে শিক্ষা মানুষকে আত্মশক্তিতে ভরপুর এবং দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী করে তুলবে। আর এটাই ছিল বিবেকানন্দের জীবনে স্বপ্ন। তাই বিবেকানন্দের জীবন ও কর্ম ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ। সেখানে তাঁর মৌলিক জীবন দর্শনের যে ধারণা গুলি আমরা পাই-


১) বিশ্বজনীনতা ও আধ্যাত্মিক ভ্রাতৃত্ববোধ ।

            বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন সকল মানুষ সমান। তিনি বেদের আধ্যাত্মিক বিষয়বস্তুকে সামাজিক বর্ণাশ্রম তত্ত্ব থেকে পৃথকভাবে বিবেচনা করেন। অন্যদিকে বিবেকানন্দ বেদের আধ্যাত্মিক বিষয়বস্তুকে সকল ধর্মমত, সমাজ এবং দেশের সর্বজনীন জীবন দর্শন রূপে উত্থাপন করেন।


২) অধ্যাত্মতত্ত্ব।

           বিবেকানন্দের মতে প্রতিটি আত্মাই ব্রহ্মের অংশ। তিনি আরো মনে করেন যে, কর্ম বা সাধনা, মনঃসংযোগ,মনঃনিয়ন্ত্রণ ও সাক্ষাৎ অনুভবের মাধ্যমে ব্রহ্ম উপলব্ধি সম্ভব। আর এই ব্রহ্ম উপলব্ধি ধর্মের সারসত্য। আর সেখানে অন্ধবিশ্বাস, আচার-বিচার, মন্দির ও মতবাদ সবই গৌণ বিষয়।


৩) পরব্রহ্ম।

            বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন যে, পরব্রহ্ম হল ব্যক্তিগত নৈর্ব্যক্তিক সত্তা। নৈর্ব্যক্তিক সত্তা ব্যক্তিসত্তার নেতিমুলক নীতি মূলক দিক বা মিথ্যাত্ব নয়। এই ধারণার আসল তাৎপর্য হলো-ব্রহ্মের পূর্ণতাপ্রাপ্তি।


৪) মানবসত্তা-

         স্বামীজীর মতে, প্রতিটি মানুষ সম্ভাবনাময় ব্রহ্ম তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষ অনন্ত শক্তির আধার। কারণ জন্মসূত্রেই মানুষ অনন্ত সম্ভাবনা অধিকারী। তিনি আরো মনে করেন এই সম্ভাবনা মানুষকে অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে জ্ঞানের আলোয় নিয়ে যায়। আর তখনই মানুষের সুপ্ত চেতনাকে সজীব ও সক্রিয় করে তোলে। আসলে মানুষ আত্মোপলব্ধির মধ্যে দিয়ে ব্রহ্মত্ব লাভ করে।

        মোট কত হলো, মানুষের অনন্ত সম্ভাবনাময় মানবত্মা যেন এক অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। আর সেখানে একটি ছোট স্ফুলিঙ্গের মধ্যে যেমন দাবানল সৃষ্টি করার ক্ষমতা থাকে ঠিক তেমনি আত্মার মধ্যে থাকে আত্মজ্ঞান অর্থাৎ ব্রহ্ম জ্ঞান লাভের সকল সম্ভাবনা। যেখানে সকল প্রকার সাধনা, কর্ম, ভক্তি, যোগ, জ্ঞান ইত্যাদি নানা পথ ধরে সেই সম্ভাবনা প্রকাশিত হয়।

                

এই নোটস্ টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টস করবেন 🙏🙏🙏


Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...