Skip to main content

নৈতিক ও অনৈতিক ক্রিয়ার পার্থক্য লেখো। (দর্শন বি.এ চতুর্থ সেমিস্টার ২০২৪

 নৈতিক ও অনৈতিক ক্রিয়ার পার্থক্য লেখো। (দর্শন বি.এ চতুর্থ সেমিস্টার ২০২৪)


ভূমিকাঃ-

          নীতিবিদ্যায় আমরা ক্রিয়া বা কাজের ভালো-মন্দ বিচার করে থাকি। আর সেখানে কাজ বা ক্রিয়া বলতে আমরা এমন এক শক্তিকে বুঝে থাকি যার ব্যবহার দ্বারা পরিবর্তন ঘটানো যায়। নীতি বিদ্যায় কাজ প্রক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়--

                      ১) নৈতিক ক্রিয়া।

                     ২)অনৈতিক ক্রিয়া।

     নীতিবিদ্যায় বলা হয়, যে ক্রিয়ার নৈতিক গুণ আছে অর্থাৎ যে ক্রিয়ার ভালো-মন্দ, ন্যায় অন্যায়, উচিত অনুচিত প্রভৃতি বিচার করা সম্ভব হয় সেই ক্রিয়াই হল নৈতিক ক্রিয়া।

                  আর যে ক্রিয়ার নৈতিক গুণ নেই অর্থাৎ নৈতিক বিচার করার যায় না সেই ক্রিয়া হলো অনৈতিক ক্রিয়া। এবার এখন আমরা দেখে নেবো এই দুই ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে প্রধান পার্থক্য গুলি কি কি?


প্রথমতঃ-নৈতিক কাজ বলতে আমরা বুঝি যেসব কাজের ভালো-মন্দ বিচার করা সম্ভব হয়। কিন্তু --

              অনৈতিক কাজ বলতে আমরা বুঝি, যার ভালো-মন্দ, ন্যায় অন্যায় বিচার করা সম্ভব নয় সেই কাজকে।

দ্বিতীয়তঃ- নৈতিক কাজ বলতে আমরা বুঝি সেই সব কাজ,যা সমাজে বসবাসকারী, পরিণত ও সুস্থ মানুষ নিজের ইচ্ছায় সচেতনভাবে সম্পাদন করে এবং এই নৈতিক কাজেরই নৈতিক বিচার করা হয়। কিন্তু-

               যেসব কাজ মানুষ অনৈচ্ছিকভাবে এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার চাপে বাধ্য হয়ে করে, তাকে অনৈতিক কাজ বলে। এই কাজের কখনো নৈতিক বিচার করা যায় না।

তৃতীয়তঃ- নৈতিক কাজের মধ্যে পড়ে ঐচ্ছিক ক্রিয়া। কেননা, একমাত্র মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়ারই ভালো বা মন্দ নৈতিক বিচার করা যায়। কিন্তু -

           অনৈতিক ক্রিয়া মানে হলো নীতি বহির্ভূত ক্রিয়া। কেননা, অনৈতিক ক্রিয়ার কোন নৈতিক ভালো বা মন্দ বিচার করা যায় না।

চতুর্থতঃ-নীতিসম্মত ক্রিয়া ভালো বা মন্দ হতে পারে। কেননা, নৈতিক আদর্শের মাপকাঠিতে মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়াকে বিচার করে তাকে ভালো বা মন্দ বলা হয়।কিন্তু --

                অনৈতিক ক্রিয়া নৈতিক বিচারবহির্ভূত। কেননা, নৈতিক আদর্শের মাপকাঠিতে একে বিচার করা যায় না, ভালো বা মন্দ বলা যায় না।

পঞ্চমতঃ-একমাত্র সুস্থ, পরিণত বয়স্ক, স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়া গুলি নীতিসম্মত ক্রিয়া। কিন্তু --

               পশু, জড়বস্তু, প্রাকৃতিক শক্তি, শিশু, পাগল, জড়বুদ্ধিরসম্পন্ন ব্যক্তি ও স্বাভাবিক মানুষের সকল প্রকার অনৈচ্ছিক ক্রিয়া হলো অনৈতিক ক্রিয়া।

            

এরকম আরো অনেক বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন পেতে আজই ভিজিট করুন আমাদের "SHESHER KOBITA SUNDORBON"YouTube channel 

আমাদের বিষয়ভিত্তিক নোটস যদি আপনার ভালো লাগে অবশ্যই কমেন্টস করে জানাবেন।

Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প