Skip to main content

নৈতিক(2nd Sem.Phil M)ও অনৈতিক ক্রিয়ার পার্থক্য লেখো।

নৈতিক ও অনৈতিক ক্রিয়ার পার্থক্য লেখো(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় সেমিস্টার, দর্শন মাইনর)।

আলোচনার শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে,নীতিবিদ্যায় আমরা ক্রিয়া বা কাজের ভালো-মন্দ বিচার করে থাকি। আর সেখানে কাজ বা ক্রিয়া বলতে আমরা এমন এক শক্তিকে বুঝে থাকি, যার ব্যবহার দ্বারা পরিবর্তন ঘটানো যায়। আর সেই হিসেবে নীতিবিদ্যায় কাজ বা ক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়--

                      ১) নৈতিক ক্রিয়া।

                     ২)অনৈতিক ক্রিয়া।

          •নীতিবিদ্যায় বলা হয়, যে ক্রিয়ার নৈতিক গুণ আছে অর্থাৎ যে ক্রিয়ার ভালো-মন্দ, ন্যায় অন্যায়, উচিত অনুচিত প্রভৃতি বিচার করা সম্ভব হয় সেই ক্রিয়াই হল নৈতিক ক্রিয়া।

                  •আর যে ক্রিয়ার নৈতিক গুণ নেই অর্থাৎ নৈতিক বিচার করার যায় না সেই ক্রিয়া হলো অনৈতিক ক্রিয়া। এবার এখন আমরা দেখে নেবো এই দুই ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে প্রধান পার্থক্য গুলি কি কি?


প্রথমতঃনৈতিক কাজ বলতে আমরা বুঝি যেসব কাজের ভালো-মন্দ বিচার করা সম্ভব হয়। কিন্তু --

              অনৈতিক কাজ বলতে আমরা বুঝি, যার ভালো-মন্দ, ন্যায় অন্যায় বিচার করা সম্ভব নয় সেই কাজকে।

দ্বিতীয়তঃ- নৈতিক কাজ বলতে আমরা বুঝি সেই সব কাজ,যা সমাজে বসবাসকারী, পরিণত ও সুস্থ মানুষ নিজের ইচ্ছায় সচেতনভাবে সম্পাদন করে এবং এই নৈতিক কাজেরই নৈতিক বিচার করা হয়। কিন্তু-

               যেসব কাজ মানুষ অনৈচ্ছিকভাবে এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার চাপে বাধ্য হয়ে করে, তাকে অনৈতিক কাজ বলে। এই কাজের কখনো নৈতিক বিচার করা যায় না।

তৃতীয়তঃ নৈতিক কাজের মধ্যে পড়ে ঐচ্ছিক ক্রিয়া। কেননা, একমাত্র মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়ারই ভালো বা মন্দ নৈতিক বিচার করা যায়। কিন্তু -

           অনৈতিক ক্রিয়া মানে হলো নীতি বহির্ভূত ক্রিয়া। কেননা, অনৈতিক ক্রিয়ার কোন নৈতিক ভালো বা মন্দ বিচার করা যায় না।

চতুর্থতঃ নীতি সম্মত ক্রিয়া ভালো বা মন্দ হতে পারে। কেননা, নৈতিক আদর্শের মাপকাঠিতে মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়াকে বিচার করে তাকে ভালো বা মন্দ বলা হয়।কিন্তু --

                অনৈতিক ক্রিয়া নৈতিক বিচারবহির্ভূত। কেননা, নৈতিক আদর্শের মাপকাঠিতে একে বিচার করা যায় না, ভালো বা মন্দ বলা যায় না।

পঞ্চমতঃ একমাত্র সুস্থ, পরিণত বয়স্ক, স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়া গুলি নীতিসম্মত ক্রিয়া। কিন্তু --

               পশু, জড়বস্তু, প্রাকৃতিক শক্তি, শিশু, পাগল, জড়বুদ্ধিরসম্পন্ন ব্যক্তি ও স্বাভাবিক মানুষের সকল প্রকার অনৈচ্ছিক ক্রিয়া হলো অনৈতিক ক্রিয়া।

            

এরকম আরো অনেক বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন পেতে আজই ভিজিট করুন আমাদের "SHESHER KOBITA SUNDORBON"YouTube chann।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...