Skip to main content

স্মরণ রাখার সহজ উপায় গুলি আলোচনা করো (West Bengal State University, 2nd Semester, Education, Minor)

স্মরণ রাখার সহজ উপায় গুলি আলোচনা করো (West Bengal State University, 2nd Semester, Education, Minor)


ভূমিকাঃ

       স্মৃতি কিভাবে বাড়ানো যায় এই বিষয়টি নিয়ে অতি প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত মনোবিদদের মধ্যে বেশ মতপার্থক্য দেখা যায়। আর এই মতপার্থক্যের মধ্যে প্রাচীনকালে স্মৃতিকে ফ্যাকাল্টি অফ মাইন্ড বলে বর্ণনা করা হত। তাঁদের মতে স্মৃতিকে বাড়ানো যায়। কিন্তু আধুনিক মনোবিদরা মনে করেন, স্মৃতির ধারণ শক্তি মানুষের সহজাত। যা অনুশীলন বা চর্চার দ্বারা তাকে কোনভাবেই বাড়ানো যায় না। প্রাচীন এবং আধুনিক কালের মনোবিদদের মতামতকে সামনে রেখে বলা যায় যে-

১) আগ্রহঃ 

         কোন বিষয়বস্তু শেখার আগে ওই বিষয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা দরকার। আর আগ্রহ না থাকলে বিষয়বস্তু আয়ত্ত করা কঠিন হবে এবং সেটির সংরক্ষণ ক্ষণস্থায়ী হবে।

২) মনোযোগঃ 

        মনোযোগ হল মনকে নিযুক্ত করার প্রক্রিয়া। কোন বিষয়ে আয়ত্ত করার সময় মনকে সেই বিষয়ে নিযুক্ত করতে পারলে সংরক্ষণের কাজ সঠিকভাবে হয়। কারণ মনোযোগের সাহায্যেই বিষয়বস্তুগুলি জ্ঞানেন্দ্রিয় থেকে স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিতে যায়।

৩) অনুষঙ্গ স্থাপনঃ

         দুটি বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করার পদ্ধতিই হলো অনুষঙ্গ। কোন বিষয়ে শেখার সময় অতীতের শেখা বিষয়ের সঙ্গে অনুষঙ্গ স্থাপন করতে পারলে বিষয়বস্তু অনেক সহজে আয়ত্ত করা যায় এবং তা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।

৪) অধিশিখনঃ

         নির্ভুল পুনরাবৃত্তির জন্য যতবার শিক্ষা করা দরকার তার অধিক যেকোন শিখনই হল অধিশিখন। যেমন কোন ব্যক্তি কুড়িবার পড়ার পর কোন কবিতার মুখস্ত করতে ও নির্ভুলভাবে আয়ত্ত করতে পারে। তখন ওই ব্যক্তিটি যদি আরোও দশবার কবিতাটি পাঠ করে তবে ওদের শিখন হবে(এবিংহস)।

৫) অনুশীলনঃ 

        কোন বিষয় শেখার পর বারবার অনুসরণ করলে তা মনে রাখা সহজ হয়। শিখনের পর অনুশীলন চালিয়ে যেতে থাকলে শিখনের ফল স্থায়ী অবশ্যই হবে। 

৬) আবৃত্তি পদ্ধতিঃ 

          স্থায়ীভাবে কোন বিষয়কে মনে রাখতে হলে আবৃত্তি খুবই কার্যকর। আবৃত্তির মাধ্যমে সহজে কোন বিষয় আয়ত্ত করা যায়। ছন্দ ও সুরের মাধ্যমে বিষয়বস্তু এই পদ্ধতিতে আয়ত্ত করা হয় বলে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

৭) শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাঃ 

         কোন বিষয়ে শেখার সময় শিক্ষার্থীর সার্বিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা একান্ত ভাবে দরকার। শারীরিক ও মানসিক অসুস্থ মস্তিষ্কের কাজ কি বিঘ্নিত করে।যার ফলে শিখতে দেরি হয়।

৮) যৌক্তিক পদ্ধতিঃ 

          পাঠ্য বিষয়ের অর্থোপলব্ধি না করে তা আয়ত্ত করলে বিষয়টি দীর্ঘদিন সংরক্ষিত হয় না। বিষয়টি বিভিন্ন অংশের মধ্যে যে যৌক্তিক সম্পর্ক আছে তা উপলব্ধি করে আয়ত্ত করলে শিখন সহজ হয় এবং মনে স্থায়ী ছাপ রাখে।

       পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, স্মরণ করার উপরিউক্ত যেসব উপায় বা পদ্ধতি গুলি আলোচনা করা হলো সেগুলি মেনে চললে কিছুটা হলেও স্মরণক্রিয়া উন্নতি ঘটনার সম্ভব। তাই শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে হবে এবং নিয়মিত চর্চা ও অনুশীলনের মাধ্যমে সেগুলোকে পুনরুদ্রেক করতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...