Skip to main content

বার্কলে কোন যুক্তির ভিত্তিতে লকের মুখ্যগুণ ও গৌণগুণের পার্থক্য অস্বীকার বা খন্ডন করেছেন?

বার্কলে কোন যুক্তির ভিত্তিতে লকের মুখ্যগুণ ও গৌণগুণের পার্থক্য অস্বীকার বা খন্ডন করেছেন?


           অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিক জন লক বস্তুর মুখ্য গুণ ও গৌণ গুণের মধ্যে যে পার্থক্য করেছেন পরবর্তীকালে ব্রিটিশ ভাববাদী দার্শনিক জর্জ বার্কলে মুখ্য গুণ ও গৌণ গুণের পার্থক্যকে অস্বীকার করেছেন। আর এই অস্বীকার করে তিনি যে যুক্তি প্রদর্শন করেন তা হল--


প্রথমতঃ 

        বার্কলে দাবি করেন যে, আমরা গৌণ গুণগুলোকে যেমন আমাদের ইন্দ্রিয় সংবেদনের সাহায্যে লাভ করতে পারি, তেমনি মুখ্য গুণগুলোকেও ইন্দ্রিয় সংবেদনের মাধ্যমে লাভ করা যায়। কাজেই উভয় গুণের উৎস ইন্দ্রিয় সংবেদন। সুতরাং মুখ্যগুণ ও গৌণগুণের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

দ্বিতীয়তঃ 

      লকের মতে, মুখ্য গুনগুলি বস্তুর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত। কিন্তু গৌণ গুণগুলি বস্তুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত নয়। তবে বার্কলে মনে করেন যে, বস্তুর মুখ্য গুনগুলি অবস্থা ভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। কারণ বরফ গলে জলে পরিণত হলে তার আকারের পরিবর্তন হয়। আবার এই বিস্তৃতিরও পরিবর্তন ঘটে। সুতরাং গৌণ গুণের মতো মুখ্য গুণগুলিও পরিবর্তনশীল ও মনোগত।

তৃতীয়তঃ 

       লকের মতে, বস্তুর মুখ্য গুনগুলি বস্তু থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। কিন্তু গৌণ গুণগুলিকে বস্তু থেকে সহজে পৃথক করা যায়। তবে এক্ষেত্রে বার্কলে দাবি করেন যে, মুখ্য গুন গুলির মত গৌণ গুণগুলিও বস্তু থেকে পৃথক করা যায় না। কারণ রংহীন, আকারহীন বস্তুর চিন্তা করা একেবারেই সম্ভব নয়। সুতরাং মুখ্য গুণ ও গৌণ গুণের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

চতুর্থতঃ 

      লক দাবি করেন যে, মুখ্যগুণ ও গৌণগুণ উভয় মিলে বস্তুর ধারণা গঠিত হয়। অন্যদিকে বার্কলে বলেন যে, মুখ্য গুণ ও গৌণ গুণ উভয় মিলে যদি ধারণা গঠন করে তাহলে তাদের মধ্যে পার্থক্য করা অবাস্তব।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...