Skip to main content

জনস্বার্থ মামলা কী? জনস্বার্থ মামলার বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

জনস্বার্থ মামলা কী? জনস্বার্থ মামলার বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। 

•অথবা

ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় জনস্বার্থ মামলার বিষয়টি আলোচনা করো।


জনস্বার্থ মামলাঃ জনস্বার্থ মামলা ভারতীয় বিচার 

                          বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। 

সেখানে জনস্বার্থ মামলা একটি আইনি কার্যপ্রক্রিয়া। আর সেই প্রক্রিয়ার দ্বারা জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষার্থে আদালতে মামলা দায়ের করে আইনের লড়াইয়ের মাধ্যমে জনসাধারণের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার বলবৎ করা হয়। অর্থাৎ -

     জনস্বার্থ মামলা হলো জনসাধারণ বা তার কোন অংশের অধিকার ও স্বার্থ বলবৎ করার জন্য আদালতে পরিচালিত একটি আইনগত পদক্ষেপ। আর সেই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি যদি তার কোন অধিকার খর্ব হয় তবে তিনি আদালতের কাছে এই আবেদন করতে পারেন। তবে তার পক্ষে তৃতীয় কোন ব্যক্তি যদি এই আবেদন করেন, সেক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টে সেই আবেদন কোনভাবেই গ্রাহ্য হবে না। কিন্তু -

       ভারতবর্ষের অগণিত সাধারণ মানুষ যারা নিরক্ষর, অবহেলিত, দরিদ্র হওয়ার কারণে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়। আর সেই কারণে বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে তৃতীয় ব্যক্তির আপিল করার বিষয়টি অনেকটা শিথিল করা হয়েছে।ফলে সাম্প্রতিককালে জনস্বার্থ সম্পর্কে সচেতন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অবহেলিত মানুষের অধিকার রক্ষার্থে সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে -

      বিচার বিভাগীয় সক্রিয়তার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র হল জনস্বার্থ মামলা। আর সেই মামলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্ট। এছাড়াও জনস্বার্থমূলক মামলার ক্ষেত্রে উদ্ভূত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি হলো-পণপ্রথাজনিত কারণে মৃত্যু, চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক, শিশু শ্রমিক, পুলিশি নির্যাতন প্রভৃতি। এক্ষেত্রে সমাজের দরিদ্র, নিরক্ষর, দুস্থ, সচেতন জনগোষ্ঠী এবং অন্যান্য সুবিধা বঞ্চিত শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনস্বার্থমূলক মামলা সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। সেই কার্যকরী ভূমিকায় আমরা দেখি-


ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করতে পারেন আমাদের  "SHESHER KOBITA SUNDORBON" YOUTUBE CHANNEL । ধন্যবাদ।


•প্রথমতঃকলকাতা রাজ্য হাইকোর্ট জনস্বার্থে 

              ভিক্টোরিয়া সহ ময়দানের মধ্যে পলিব্যাগ ব্যবহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বইমেলাসহ সমস্ত প্রকার বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ও মেলা নিষিদ্ধ করে।


•দ্বিতীয়তঃউড়িষ্যার কালাহান্ডিতে ১৯৮৬ সালে যে 

               ভয়াবহ ও ব্যাপক দুর্ভিক্ষ হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্ট সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি রূপায়ণের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

        

•তৃতীয়তঃ কেরল রাজ্যের হাইকোর্ট ২০০৩ সালে 

              সেখানকার কলেজগুলিতে ছাত্র ধর্মঘট, মিছিল, ধর্না সমাবেশ, নিষিদ্ধ করার নির্দেশ জারি করে।


•চতুর্থতঃপশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হাইকোর্টের বিচারপতি 

              অমিতাভ লালা এক জনস্বার্থ মামলায় রায়দেন যে,কলকাতায় কাজের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মিটিং মিছিল সমাবেশ করা যাবে না। শুধু তাই নয়, মিটিং মিছিলের জন্য ক্ষতিগ্রস্তকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।


•পঞ্চমতঃসমষ্টিগতভাবেও জনস্বার্থমূলক মামলার 

             মাধ্যমে অসহায় বা সুবিধা বঞ্চিত কোন জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রয়োগ আদায় করা যায়। 

           তবে পরিবেশগত অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আদালতের হস্তক্ষেপ প্রার্থনার ক্ষেত্রে জনস্বার্থমূলক মামলার সবচেয়ে উপযোগী পন্থা।


•ষষ্ঠতঃজনস্বার্থমূলক মামলা ভোক্তা অধিকার 

          সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আবার অন্যদিকে বিচারক এমন কোন ঘটনা জানতে পারেন যে, সেই ঘটনার ফলে জনস্বার্থ লঙ্ঘিত হচ্ছে বা হয়েছে, তবে সেক্ষেত্রে তিনি নিজেই লংঘনকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত মামলা করতে পারেন।

     •পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, জনস্বার্থ মামলা সমষ্টিগত জনগণের সমস্যার সমাধানের একটি কার্যকারী পদক্ষেপ। আর সেই পদক্ষেপের সীমাবদ্ধতা হলো এই মামলার বাস্তবায়নে আদালত কোন আদেশ পালনের জন্য কোন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারে। তবে সেই নির্দেশ পালনে বাধ্য করতে পারেনা। আবার নির্দেশ পালন না করলে আদালত সর্বোচ্চ আদালত অবমাননার শাস্তি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।



ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করতে পারেন আমাদের  "SHESHER KOBITA SUNDORBON" YOUTUBE CHANNEL । ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...