Skip to main content

অনৈতিক বা নীতিবহির্ভূত ক্রিয়া কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার অনৈতিক বা নীতি বর্হিভূত ক্রিয়ার উদাহরণ সহ আলোচনা করো।

অনৈতিক বা নীতিবহির্ভূত ক্রিয়া কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার অনৈতিক বা নীতি বর্হিভূত ক্রিয়ার উদাহরণ সহ আলোচনা করো।


অনৈতিক বা নীতিবর্হিভূত ক্রিয়াঃ আমরা মানুষের কাজের নৈতিক বিচার করি। তবে মানুষের কিছু কাজের নৈতিক বিচার করা যায়, আবার কিছু কাজের নৈতিক বিচার করা যায় না। তাই-

          যে কাজগুলির নৈতিক বিচার করা যায়, তাকে বলা হয় নৈতিক ক্রিয়া। আর যে কাজগুলির নৈতিক বিচার করা যায় না,সেই কাজগুলি হল অনৈতিক ক্রিয়া। অর্থাৎ-

      অনৈতিক বা নীতিবহির্ভূত ক্রিয়া বলতে বোঝায়, যে ক্রিয়ার নৈতিক বিচার করা যায় না, যে ক্রিয়াকে নৈতিক ভালো বা নৈতিক মন্দ বলা যায় না, সেই ক্রিয়াকে বলা হয় অনৈতিক ক্রিয়া।


      •অনৈতিক বা নীতিবহির্ভূত ক্রিয়ার প্রকার•


১)স্বয়ংক্রিয় ক্রিয়া     ২) স্বতঃসঞ্জাত ক্রিয়া

৩) প্রতিবর্ত ক্রিয়া      ৪)প্রবৃত্তিজাত ক্রিয়া 

৫) ভাবজ ক্রিয়া।       ৬) অনুকরণমূলক ক্রিয়া ৭)আকস্মিক ক্রিয়া   ৮)অস্বাভাবিক ব্যক্তির ক্রিয়া।


            •  উদাহরণসহ আলোচনা •


১) স্বয়ংক্রিয় ক্রিয়াঃমানুষের অভ্যন্তরীণ দেহযন্ত্রের     ক্রিয়া হলো স্বয়ংক্রিয় ক্রিয়া। আর এই ক্রিয়া গুলি হল অনৈচ্ছিক ক্রিয়া, তাই এই ক্রিয়াকে বলা হয় অনৈতিক ক্রিয়া। যেমন -

      রক্ত চলাচল, শ্বাস প্রশ্বাস, পরিপাক ক্রিয়া, হৃদপিন্ডের ক্রিয়া ইত্যাদি।


২) স্বতঃসঞ্জাত ক্রিয়াঃ দেহের অভ্যন্তরীণ পেশি শক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে, ইচ্ছা নিরপেক্ষভাবে বহিঃপ্রকাশ ঘটে, সেই ক্রিয়াকে বলা হয় স্বতঃসঞ্জাত ক্রিয়া। যেমন -

         শিশুর হাত-পা ছোড়া, হাসি কান্না অনৈতিক ক্রিয়া। কেননা এগুলি অনৈচ্ছিক ক্রিয়া।


৩) প্রতিবর্ত ক্রিয়াঃ উদ্দীপক ইন্দ্রিয়কে উদ্দিপিত করা মাত্র চেতনার নিয়ন্ত্রণ ছাড়া, পূর্বশিক্ষা ছাড়া তৎক্ষণাৎ বারবার একইভাবে যে প্রতিক্রিয়া হয়, তাকে বলা হয় প্রতিবর্ত ক্রিয়া। যেমন -

           গরম পাত্রে হাত লাগা মাত্র হাত সরিয়ে নেওয়া। এই ক্রিয়া অনৈচ্ছিক, তাই এই ক্রিয়া হলো অনৈতিক ক্রিয়া।


৪) প্রবৃত্তিজাত ক্রিয়াঃ যে জন্মগত শক্তির জন্য এক শ্রেণীর সকল প্রাণী শিক্ষা-নিরপেক্ষভাবে ফলাফল সম্বন্ধে সচেতন না হয়ে অজ্ঞাতসারে জৈব উদ্দেশ্য সাধন করে, তাকে বলা হয় সহজাত প্রবৃত্তি। আর এই সহজাত প্রবৃত্তি প্রকাশকে বলা হয় প্রবৃত্তিজাত ক্রিয়া। যেমন -

          খাদ্য সংগ্রহমূলক ক্রিয়া, আত্মরক্ষামূলক ক্রিয়া, বংশরক্ষামূলক ক্রিয়া প্রভৃতি।


৫) ভাবজ ক্রিয়াঃ যখন কোন মনের ভাব বা ধারণা এতই তীব্র হয় যে, তা ইচ্ছা নিরপেক্ষভাবে স্বতই কর্মে প্রবৃত্ত হয়, তখন সেই ক্রিয়াকে বলা হয় ভাবজ ক্রিয়া। যেমন -

         সিনেমাতে মারপিটের দৃশ্য দেখে সামনের ব্যক্তির মাথায় ঘুষি মারা ইত্যাদি। আর এই ক্রিয়াগুলি অনৈচ্ছিক, তাই অনৈতিক।


৬) অনুকরণমূলক ক্রিয়াঃ অনিচ্ছাকৃতভাবে অপরের অনুকরণ করে যে ক্রিয়া করা হয়, তাকে বলা হয় অনুকরণমূলক ক্রিয়া। যেমন-

      কতগুলি লোক একটি চোরকে মারতে দেখে রাম তাকে মারতে শুরু করল। এক্ষেত্রে রামের ক্রিয়াটি অনৈচ্ছিক অনুকরণশীল ক্রিয়া, তাই এটি অনৈতিক ক্রিয়া।


৭) আকস্মিক ক্রিয়াঃ আকস্মিক ক্রিয়া অনৈচ্ছিক ক্রিয়া, তাই এটি অনৈতিক ক্রিয়া। যেমন -

         ফুলদানিটি হাত থেকে পড়ে ভেঙে গেল। এক্ষেত্রে ক্রিয়াটি অনৈচ্ছিক,তাই আকস্মিক ক্রিয়াটি অনৈতিক।


৮) অস্বাভাবিক ব্যক্তির ক্রিয়াঃ পাগল, জড়বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ, শিশুদের কাজ অনৈতিক। তাই তাদের কাজকে অনৈতিক কাজ বলা হয়। 

      সুতরাং আমরা বলতে পারি যে,সুস্থ, স্বাভাবিক, পরিণত বয়স্ক, বিচারবুদ্ধিরসম্পন্ন মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়াই নৈতিকক্রিয়া। আর অবশিষ্ট সব কাজ অনৈতিক ক্রিয়া।


ঠিক এরূপ অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL YouTube Channel ।

       

Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প